বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

শিরোনাম

পশ্চিমাবিশ্বের বিরুদ্ধে ঐক্যফ্রন্ট গঠনের ‘নতুন যুগকে’ স্বাগত জিনপিং ও পুতিনের

বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
শি জিনপিং এবং ভ্লাদিমির পুতিন

মস্কো, রাশিয়া: চীন ও রাশিয়ার নেতারা মঙ্গলবার (২১ মার্চ) তাদের সম্পর্কের ‘নতুন যুগকে’ স্বাগত জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে সম্পর্কের এ নতুন যুগকে স্বাগত জানালেন। এ দিকে, ইউক্রেন সংঘাত অবসানে চীনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমাবিশ্বকে দায়ী করেন। খবর এএফপির।

পশ্চিমা শক্তির লাগাম টেনে ধরতে আগ্রহী দেশগুলো এশিয়ায় ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ও তারা অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। ইউক্রেনে পুতিনের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এটি আরো জোরালো হয়েছে।

পুতিন ইউক্রেনের বিষয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত ছিলেন ও সংঘাতের বিষয়ে চীনের ১২ দফা প্রস্তাব পত্রের প্রশংসা করেছেন; যার মধ্যে সংলাপ ও সব দেশের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানানোর কথা বলা হয়েছে।

চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে আলোচনার পর পুতিন বলেন, ‘চীনের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার অনেক বিধান একটি শান্তিপূর্ণ মীমাংসার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে; যখন কিয়েভ ও পশ্চিমারা এর জন্য প্রস্তুত হবে।’

‘তবে এখন পর্যন্ত আমরা তাদের পক্ষ থেকে এমন কোন প্রস্তুতি দেখিনি।’

আলোচনার পর রাষ্ট্রীয় এক নৈশভোজে পুতিন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, রাশিয়া-চীন সহযোগিতার সত্যিই সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে।’

সেখানে তিনি রাশিয়া ও চীনের জনগণের ‘সমৃদ্ধির’ কথা তুলে ধরেন।

এর আগে তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বক্তব্যে এ দুই দেশের সম্পর্কের ‘বিশেষ প্রকৃতি’ নিয়ে কথা বলেন।

মস্কো সফরের দ্বিতীয় দিনে শি বলেন, ‘রাশিয়ার সাথে চীনের সম্পর্ক ‘নতুন যুগে প্রবেশ করছে।’

পুতিন আলোচনাকে ‘অর্থপূর্ণ ও খোলামেলা’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে ইউরোপীয় বাজার থেকে অনেকাংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া রাশিয়া জ্বালানি পাওয়ার ক্ষেত্রে চীনের ‘ক্রমবর্ধমান চাহিদা’ মেটাতে সক্ষম হবে।’

এ দিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির পুতিন বলেছেন, ‘কিয়েভ চীনকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ও তারা বেইজিংয়ের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছে।

জেলেনস্কি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা চীনকে শান্তির ফর্মুলা বাস্তবায়নে অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা সব চ্যানেলে আমাদের ফর্মুলাটি বলে দিয়েছি। আমরা আপনাকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আপনার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি।’

এ দিকে, যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘চীন একটি নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হতে সক্ষম হবে বলে ওয়াশিংটন মনে করে না।’ এ সংঘাত অবসানের প্রচেষ্টায় মধ্যস্থতাকারী হওয়ার চীনের এমন লক্ষ্যের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিগত বছর গুলোতে রাশিয়া ও চীন তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে ও উভয় দেশ যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকে প্রতিহত করার ইচ্ছা পোষণ করে।

এ দিকে, চীনের নেতার মস্কো সফরকে পুতিনের জন্য একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের শিশুদের বেআইনিভাবে নির্বাসনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানা রয়েছে।

এ দিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বলেছেন, তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার কিয়েভ সফরকালে তার সাথে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ পরিদর্শন করেন। তিনি ইউক্রেনের বুচা শহর সফর করেন। সেখানে রাশিয়ার বাহিনীর এক বছরের দখলদারিত্ব চলাকালে নৃশংসতা চালানোয় তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়।

জেলেনস্কি তার সান্ধ্যকালীন ভাষণে বলেন, ‘কিশিদার সাথে আমাদের আলোচনা বেশ ফলপ্রসূ ছিল।’

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসন ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশ্বকে আরো সক্রিয়ভাবে সংগঠিত করতে আমাদের সাথে একত্রে কাজ করার জন্য আমি জাপানের অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট ইচ্ছার কথাও শুনেছি।’

জেলেনস্কি মঙ্গলবার (২১ মার্চ) নিশ্চিত করেন, তিনি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন।