চট্টগ্রাম: পোশাক শিল্পে লিঙ্গ সমতা, নারী নেতৃত্ব ও দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সিটিতে হয়ে গেল ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড রিটার্নস: অ্যাডভান্সিং উইমেন লিডারশিপ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাক্টিভিটি ইন দ্য সাপ্লাই চেইন’ নামের বিশেষ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএও) এবং আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) পরিচালিত ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড রিটার্নস‘ বা গিয়ার’ এর উদ্যোগের নানা দিক তুলে ধরা হয়। বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামের আওতায় পরিচালিত গিয়ার উদ্যোগটি ২০১৬ সাল থেকে ৮০০ জন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যার মধ্যে ৫২৮ জন সুপারভাইজরের ভূমিকায় উন্নীত হয়েছেন। গিয়ার পোশাক খাতের নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে তাদের কর্মজীবনে নেতৃত্বমূলক পদে যেতে সহায়তা করে ।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে, গিয়ারের ফলে শ্রমিকদের লাইন দক্ষতা পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বেরথেকে নারীরা ৩৯ শতাংশ বেশি মজুরি পান গিয়ারের সাথে যুক্ত হয়ে।
বাংলাদেশের জন্য পোশাক খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেখানে চার দশমিক দুই মিলিয়ন মানুষ কাজ করেন। এই খাতে কর্মরত ৫৫ শতাংশই নারী। যাদের মাত্র পাঁচ শতাংশ সুপারভাইজর বা নেতৃত্বদানকরী ভূমিকায় আছেন। যে পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করছে গিয়ার।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘কারখানার মালিক, ক্রেতা, উন্নয়ন অংশীদার, জাতিসংঘ সংস্থা ও সুশীল সমাজসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজেন একটি অন্তভুক্তিমূলক পোশাক খাত তৈরিতে।’
বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পাউটিয়াইনেন লিঙ্গ সমতার তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খতে আমার ভাল অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি। এই খাতকে আরো টেকসই উন্নয়নে লিঙ্গ সমতা, নারীর দক্ষতা ও ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।’
বাংলাদেশে কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘গিয়ারেরমত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলির সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত। এখানে লিঙ্গ সমতার অগ্রগতি অনেককে অনুপ্রাণিত করছে।’
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের লেবার অ্যাটাচে লীনা খান বলেন, ‘গিয়ার প্রোগ্রামে যারা অংশ নিয়েছেন, তারা নিজের উন্নতির পাশাপাশি, ব্যবসায়েরও উন্নতি করছেন। পোশাক শিল্পে কর্মীদের অধিকার উন্নত করতে ও খাতটিকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করতে সরকার, মালিক, শ্রমিক ও ব্র্যান্ডগুলির সাথে প্রোগ্রামটি খুব ভালভাবে কাজ করছে।’
অনুষ্ঠানটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পের জন্য কৌশলগত আলোচনা, সম্ভাব্য সহযোগিতা ও নীতি বিষয়ক আলোচনার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করেছে। গিয়ার প্রগ্রামের অংশগ্রহণকরীদের নিয়ে পরিচালিত ফ্যাশন শো দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।