শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

শিরোনাম

বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি বসে যাওয়া গাড়ি স্টার্ট দেয়ার মত

শুক্রবার, মে ১৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি হচ্ছে গাড়ি বসে গেলে ওটাকে মাঝে মধ্যে স্টার্ট দিতে হয়, বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচিও হচ্ছে সে রকম বসে যাওয়া গাড়ি স্টার্ট দেয়ার মত। কারণ, বিএনপি দলটাইতো বসে গেছে। মাঝে মধ্যে স্টার্ট দেয়ার জন্য, যাতে জং ধরে না যায় সে জন্য আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়। এছাড়া, অন্য কোন কিছু নয়। আমার মনে হয়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রিজভী সাহেবসহ বিএনপির নেতারা বিশ্বময় যে শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা, তার প্রতি বিশ্বনেতৃবৃন্দের বা বিশ্বঅঙ্গনের যে আস্থা, সেটি বুঝতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’

শুক্রবার (১৯ মে) দুপুরে চট্টগ্রামে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) সেশন ওপেনিং সেরেমনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তথ্য মন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে অস্তিত্বের প্রশ্নে সরকার আবুল তাবুল বকছে ও বেসামাল হয়ে গেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক জাপান , যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ড সফর করেছেন। তিনি অত্যন্ত সফল একটা সফর করে এসেছেন। যে বিশ্ব ব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই বিশ্ব ব্যাংক নিজেরাই প্রস্তাব করেছে দুই দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে সহায়তা করার এবং জাপান ৩০ বিলিয়ন ইয়েন আমাদেরকে সাহায্য করবে বিভিন্ন প্রকল্পে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, বিশ্বনেতায় রূপান্তরিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে বলেছেন, আপনি আমাদের আইডল, আমার মেয়েদেরও আইডল। যাদের বুদ্ধি, চোখ-কান, শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তির সাথে বোধশক্তি আছে, তারা এগুলো বুঝতে পারে। এখন বিএনপি নেতারা কেন দৃষ্টিহীন ও শ্রবণশক্তিহীন তার সাথে বোধশক্তিহীনও হয়ে গেল সেটি আমার বোধগম্য নয়।’

সরকার দেশে-বিদেশে আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়ে এখন ভোটারবিহীন নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ মে) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়কে জাতিসংঘ ‘দ্যা শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে প্রস্তাব এনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। সেই প্রস্তাব ও বাংলাদেশের সাথে কো-স্পন্সর হয়েছে ৭১টি দেশ। এরপরও কি কেউ বলা উচিৎ, শেখ হাসিনা কিংবা সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বময় কি আছে? এটি বলার কোন প্রয়োজন নেই।’

এর আগে ‘ইডিইউ’র সেশন ওপেনিং সেরেমনি অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পাঠদান আর সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নয়। একজন শিক্ষার্থী বিশ্বাঙ্গনে যাতে নিজেকে ঠিকিয়ে রাখতে পারে, বিশ্বঅঙ্গনে বিশ্বময় সে যাতে দাপিয়ে বেড়াতে পারে, বিশ্বঅঙ্গনে সে যাতে তার যোগ্যতাকে তুলে ধরতে পারে, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষা নিকেতন।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শেখাতে হবে, কিভাবে জীবন গড়তে হবে, কিভাবে জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হবে, কিভাবে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। কিভাবে উজান ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের বহুমাত্রিক মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে, তাহলেই সেটি বিশ্ববিদ্যালয়। না হয় সেটির নাম বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া শ্রেয় নয়। আমি জানি, ইডিইউ-তে সেটি করা হয়। সেটিকে যদি আরো বিস্তৃত করা হয়, তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হবে, তাদেরকে সত্যিকার অর্থে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বড় কিংবা ছোট নয়, সেখানে কোয়ালিটি এডুকেশন দেয়া হয় কিনা সেটিই হচ্ছে মূখ্য বিষয়। আজকে জীবন সম্পর্কে মানুষের ধারণা পাল্টে গেছে। জীবন শুধু নিজের জন্য নয়, জীবন দেশ সমাজ ও পরিবারের জন্য এবং স্বপ্ন শুধুু নিজের জন্য দেখা নয়, সমাজ ও দেশের জন্যও স্বপ্ন দেখতে হয়। একজন ব্যক্তি তখন সত্যিকার অর্থে ভাল মানুষ হয়, যখন তিনি মেধা, মূল্যবোধ দেশাত্ববোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটাতে পারে তার চরিত্রের মধ্যে। তাহলেই, তিনি সত্যিকার অর্থে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে দাঁড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘সেটি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষাটা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি শেখায় তোমাকে ভাল পাশ করতে হবে, পাশ করে একটা বড় চাকুরি পেতে হবে, কিংবা ব্যবসায় প্রশাসনে পড়াশোনা করে একটা বড় এক্সিকিউটিভ হতে হবে, তারপর অনেক অর্থ উপার্জন করতে হবে, তাহলে নিজের জন্য শিখবে নিজের জন্য পড়বে, দেশ সমাজ জাতি তার কাছ থেকে খুব বেশি কিছু পাবে না।’

ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্ন দেখার অনুরোধ জানিয়ে তথ্য মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘কোন কিছুই প্রতিবন্ধকতা নয়, প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ভয় ও প্রচেষ্ঠার অভাব এবং স্বপ্ন দেখতে না পারা। স্বপ্নের সাথে প্রচেষ্ঠাকে যুক্ত করতে হবে। অভিভাবকদের স্বপ্ন দেখাতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্য তারা যাতে প্রচেষ্ঠাকে যুক্ত করে সেটিই তাদের শিক্ষা দিতে হবে। তাহলে, সব স্বপ্ন নাহলেও অনেক স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত হবে।’

ইডিইউ’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্টার সজল কান্তি বড়ুয়া।