ঢাকা: আগামী ৭ জানুয়ারি একতরফা জাতীয় নির্বাচন করে সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশের পোশাক শিল্পের জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার দল ত্যাগ করার জন্য পুলিশ রিমান্ডে থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনেরও অভিযোগও তোলেন কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক ব্যবসায় অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা চান।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তাদের দল বার বার সরকারকে সতর্ক করেছে যে, একতরফা নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরো গভীর করবে ও দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এরমধ্যে বাংলাদেশের (তৈরি পোশাক) বাজারকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আসন্ন একতরফা নির্বাচন শুধু শেখ হাসিনার ক্ষমতার নবায়ন নয়, এটি বাংলাদেশকে ধ্বংস করার লাইসেন্সও।’
দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘শুধু নির্বাচন বর্জন নয়, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকারপন্থী সুবিধাবাদী মহলের শোষণমূলক নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে ও শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে অযৌক্তিকভাবে হত্যা ও নিপীড়নের আশ্রয় নিয়ে সরকার প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে দেশের বৃহত্তম রপ্তানিমুখী শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকার রক্ষায় নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করার পর বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় নিশ্চিত বলে পোশাক কারখানার মালিকরা আশঙ্কা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাত এরমধ্যে ৪০-৪৫ শতাংশ ব্যবসায় হারিয়েছে। পোশাক শিল্পের অনিশ্চয়তার মধ্যে অদ্ভুত পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন তার বোকামি দেখিয়ে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা থাকলে কিছুই হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বাংলাদেশও একই কাজ করবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘তার সরকার কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের রুটি-রুজির একমাত্র উৎস পোশাক শিল্পের জন্য বিপদ ডেকে আনছে।’
দেশের মোট পোশাক রপ্তানির ৮২ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব দেশে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে তৈরি পোশাক খাত ধ্বংস হয়ে যাবে।’
বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, ‘গ্রেফতার বিএনপির নেতা-কর্মীদের পুলিশ রিমান্ডের নামে মারাত্মক নির্যাতন করা হচ্ছে। আমাদের গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন জার্মান কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নির্যাতনের গল্পকে ছাড়িয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা জানতে পেরেছেন যে, বিএনপি নেতা-কর্মীদের দল পরিবর্তনের সম্মতি নেয়ার জন্য পুলিশ রিমান্ডে অপমানজনকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
রিজভী দাবি করেন, বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘণ্টায় পুরো দেশে বিএনপির ৪১৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।