ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস ইন ইরান (এইচআরএএনএ)। সংস্থাটি জানায়, বোমা হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইরানে ৪৫২ জন মানুষ নিহত এবং ৬৪৬ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার এইচআরএএনএ-এর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। এইচআরএএনএ বলছে, নিহতদের মধ্যে ২২৪ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১০৯ জন সামরিক সদস্য। এছাড়া ইসরায়েলের হামলায় ১৮৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২৩ জন সামরিক সদস্য আহত হয়েছেন। তবে ১১৯ জন নিহত এবং ৩৩৫ জন আহত ব্যক্তি সামরিক নাকি বেসামরিক তা শনাক্ত করতে পারেনি সংস্থাটি। ইরানের সরকারের পক্ষ থেকে এত হতাহতের তথ্য সম্পর্কেও কিছু জানানো হয়নি। এর আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই শতাধিক নাগরিক নিহতের তথ্য জানিয়েছিল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইরানে ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আরব ও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো। মঙ্গলবার ২০টি আরব ও মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান। একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান তারা। যৌথ এ বিবৃতিতে অংশ নিয়েছেন মিসর, জর্ডান, পাকিস্তান, বাহরাইন, ব্রুনাই, তুরস্ক, চাদ, আলজেরিয়া, কোমোরোস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জিবুতি, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, ইরাক, ওমান, কাতার, কুয়েত, লিবিয়া এবং মৌরিতানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বিবৃতিতে তারা বলেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে বিপজ্জনক সংঘর্ষ ও উত্তেজনা চলছে তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা বলেন, প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সুসম্পর্ক রক্ষার নীতিকে সম্মান জানানো উচিত। সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির পথে এগিয়ে যেতে হবে। বিবৃতিতে তারা মধ্যপ্রাচ্যকে পারমাণবিক ও অন্যান্য গণবিধ্বংসী অস্ত্র থেকে মুক্ত করার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন। পাশাপাশি দেশগুলোকে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটিতে) যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য, ইসরায়েল এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয়। এ আন্তর্জাতিক চুক্তির উদ্দেশ্য হলো পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার ঠেকানো। পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জোর দিয়ে বলেন, এ সংকট কেবল কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। যুদ্ধ দিয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান আসবে না।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা অধিদপ্তর (আমান) এবং মোসাদের সদরদপ্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার ভোরে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের পর জ্বলতে থাকা মোসাদের হেডকোয়ার্টারের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এই হামলার কথা নিশ্চিত করেছ। এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, তাদের অ্যারোস্পেস ফোর্স ইউনিটগুলো মোসাদের বিরুদ্ধে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করেছে। আইআরজিসি জানিয়েছে, অত্যন্ত উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা সুরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও তারা ইসরায়েলের হার্জেলিয়ার গোয়েন্দা ভবন, মোসাদ এবং আমান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদরদপ্তর লক্ষ্য করে সফল হামলা চালিয়েছে। মোসাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত কেন্দ্রে এখন আগুন জ্বলছে। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড আরও বলছে, নির্ভুল হামলাগুলো তাদের চলমান অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩ এর অংশ। এই পাল্টা হামলার লক্ষ্য ইরানের শহর এবং অবকাঠামোতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দখলদারিত্বকে ‘সুনির্দিষ্ট এবং বেদনাদায়ক আঘাত’ প্রদান করা। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তেলআবিব মহানগর এলাকায় কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে, যার মধ্যে একটি হার্জলিয়ায় পড়েছে বলে জানা গেছে। এটি উপকূলীয় শহর যেখানে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সদরদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত। গত শুক্রবার ইসরায়েল প্রথমে ইরানে হামলা চালায়। পরে ইরান ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায়। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছেই।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি উচ্চারণ করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ। তিনি সতর্ক করে বলেন, খামেনি যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বর্তমান নীতিতে অটল থাকেন, তাহলে তার পরিণতিও হতে পারে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের মতো। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে কাতজ বলেন, `আমি ইরানি শাসককে সতর্ক করে দিচ্ছি- যুদ্ধাপরাধ এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রাখলে তাকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।’ এই হুঁশিয়ারির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যে। তেহরান এবং তেলআবিবের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হুমকি‑ধমকি এবং হামলার প্রেক্ষাপটে এমন বক্তব্যকে বিশেষজ্ঞরা একটি সরাসরি যুদ্ধ বার্তার শামিল হিসেবে দেখছেন। এদিকে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি৭ সম্মেলন থেকে ফিরে যাওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি ইরানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি চান না। বরং তিনি চান একটি স্থায়ী এবং বাস্তব চুক্তি, যার মাধ্যমে ইরান পরমাণু অস্ত্রের পথ চিরতরে ত্যাগ করবে। ট্রাম্প বলেন, আমি কখনোই যুদ্ধবিরতির কথা বলিনি। আমি চাই, এই সমস্যার একটি পূর্ণাঙ্গ সমাপ্তি হোক। অর্থাৎ ইরানকে অবশ্যই পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। তিনি এ মন্তব্য করেন এয়ার ফোর্স ওয়ানে থাকা অবস্থায়, ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে যাত্রার পথে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর সরকারের কড়া অবস্থান এবং ট্রাম্পের স্থায়ী চুক্তির আকাঙ্ক্ষা- দুটি ভিন্ন কৌশল হলেও উভয়ের লক্ষ্য ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখা। তবে হুমকি আর কূটনীতির এই মিশ্র বার্তা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও জটিল করে তুলছে।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় চীনের দূতাবাস তার নাগরিকদের ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ ইসরায়েল ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার চীনা দূতাবাস নাগরিকদের উদ্দেশে উটচ্যাটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েলে অবস্থিত চীনা মিশন নাগরিকদের তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার পূর্বশর্তের ভিত্তিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থল সীমান্ত অতিক্রম করে দেশত্যাগ করার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।’ নাগরিকদের জর্ডানের দিকে যাত্রা করার পরামর্শ দিয়ে দূতাবাস আরো বলেছে, সংঘাত ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অনেক বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠছে। এদিকে, হোয়াইট হাউজের ‘সিচুয়েশন রুমে’ আকস্মিক নিজের জাতীয় নিরাপত্তা দলের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কানাডায় জি-৭ সম্মেলনে ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এরমধ্যেই নিরাপত্তা দলের বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের দুঃসংবাদ দিয়েছে সেখানকার মার্কিন দূতাবাস। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এক বার্তায় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যেসব নাগরিক ইসরায়েলে বসবাস করছেন, তাদেরকে আপাতত নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে। “ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এখন এমন অবস্থায় নেই যে এখানে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কিংবা ইসরায়েল ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে বিপদ কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা যেন বম্ব শেল্টার কেন্দ্রগুলো থেকে বাইরে না বের হন”, বলা হয়েছে মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তেÍ অভিযোগ তুলে গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও সামরিক বাহিনীর স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামালা চালানো হয়েছিল। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় ইরানের অন্তত ১০০টি স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিহত হয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরিসহ প্রথম সারির বেশ কয়েক জন সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এ সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’। এদিকে ইসরায়েলের অতর্কিত এ হামলার পর শুক্রবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ সেনা অভিযান শুরু করে ইরান। দুই দেশের সংঘাত এখনও অব্যাহত আছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের হামলায় গত চার দিনে ইরানে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৪৪ জন। অন্যদিকে ইরানের হামলায় গত শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ২৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৯২ জন। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ১৩ জুন সংঘাত শুরুর পর থেকে নিজেদের প্রধান বিমানবন্দর বেন গুরিয়ন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টসহ সব বিমানবন্দর বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। কোনো বাণিজ্যিক, এমনকি চার্টার্ড ফ্লাইটও উড্ডয়ন-অবতরণ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইরানের চালানো নতুন হামলার জেরে দখলদার ইসরায়েলজুড়ে বাজছে সতর্কতামূলক সাইরেন। এ সময় ইসরায়েলিরা আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটে যেতে থাকেন। ইরানের বিপ্লবী গার্ড এরআগে ইসরায়েলে বড় হামলার হুমকি দিয়েছিল। তবে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৭টার দিকে যে হামলা চালায় সেটি কত বড় সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, তেলআবিব, মধ্য ইসরায়েল, সঙ্গে আশোদ এবং আশকেলনেও সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে উঠে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই এলাকার সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্র অথবা বোমা শেল্টার কেন্দ্রে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড। তারা বলেছে, ইরানের ছোড়া মিসাইলগুলো তারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলমান ব্যাপক সংঘাতের মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরে নির্ধারিত গন্তব্য বাতিল করে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে যুদ্ধজাহাজ বহনকারী রণতরী ইউএসএস নিমৎজ। আন্তর্জাতিক জাহাজ ট্র্যাকিং সংস্থা মেরিন ট্রাফিকের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। মেরিন ট্রাফিকের তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ চীন সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমা দিয়ে ভিয়েতনাম উপকূলের দিকে যাচ্ছিল ইউএসএস নিমিৎজ। আগামী সপ্তাহে ভিয়েতনামের উপকূলীয় শহর দানাং সিটি’তে পৌঁছার কথা ছিল এই এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার রণতরীর। আগামী ২০ জুন নিমিৎজের ক্রুদের আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান হওয়ারও শিডিউল ছিল। কিন্তু আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে ইএসএস নিমিৎজ দিক পরিবর্তন করে পশ্চিম দিকে রওনা দিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের পশ্চিম দিকে পারস্য উপসাগর ও লোহিত সাগর অবস্থিত। মেরিন ট্রাফিক ছাড়াও দু’টি সূত্র রয়টার্সকে ইউএস নিমিৎজের গতিপথ বদলানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ দুই সূত্রের মধ্যে একজন ভিয়েতনামের এক কূটনৈতিক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ২০ জুন দানাং সিটিতে নির্ধারিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। এ ইস্যুতে আরও বিস্তারিত জানতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়-এ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ‘ইন্দো-প্রশাসন্ত অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর রুটিন উপস্থিতি’র অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে ইউএসএস নিমিৎজকে এ অঞ্চলে নিযুক্ত করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকে নিজেদের বিমানবন্দরগুলোতে উড়োজাহাজের উড্ডয়ন-অবতরণ বন্ধ রেখেছে ইরান ও ইসরায়েল উভয়েই। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়ার সহায়তায় ইরান থেকে নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। এছাড়া ইসরায়েলে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতেও ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ ব্যাপারে এখনও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়েনি বলে জানা গেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইরানে মোট ১০ হাজার এবং ইসরায়েলে ২৬ হাজার ভারতীয় বসবাস করেন। ইরানে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আর্মেনিয়ার সহায়তায় গত কয়েক দিনে ইরান থেকে ১১০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, বাকিদেরও যত শিগগির সম্ভব সরানো হবে। ইরানের ভারতীয় দূতাবাস থেকে কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ইরানে বসবাসরত যে কোনো ভারতীয় নাগরিক প্রয়োজনে এ নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চাইতে পারবেন। নম্বরগুলো হলো +৯৮ ৯১২৮১০৯১১৫ এবং +৯৮ ৯১২৮১০৯১০৯। তিনটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। সেগুলো হলো +৯৮ ৯০১০৪৪৫৫৭, +৯৮ ৯০১৫৯৯৩৩২০ এবং +৯১ ৮০৮৬৮৭১৭০৯। এদিকে গতকাল সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, ইরানে বসবাসরত ভারতীয়দের নিজ দেশে ফেরত আসার জন্য আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরারাত মিরজোয়ানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহযোগিতা করতে সম্ম হয়েছেন। তেহরানের ভারতীয় দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, রাজধানী তেহরান থেকে অনেক ভারতীয়কে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে পাঠেয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের ‘সত্যিকারের অবসান’ চান বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তিনি সংঘাতের ‘সত্যিকারের অবসান’ চান, যা অস্ত্রবিরতির চেয়েও কার্যকর। তবে তিনি এটিও স্বীকার করেছেন যে আলোচনার প্রচেষ্টা পুরোপুরি পরিত্যাগ করাও একটি বিকল্প হতে পারে। এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘একটা শেষ। সত্যিকারের শেষ। কোনো যুদ্ধবিরতি নয়। একদম শেষ করে দেওয়া। কিংবা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া, তাও ঠিক।’ তিনি জানান, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোঝা যাবে ইসরায়েল হামলার গতি কমাবে নাকি বাড়াবে। আপনারা দেখতে পাবেন। এখন পর্যন্ত কেউ থামেনি।’ মঙ্গলবার ট্রাম্প ‘সিচুয়েশন রুমে’ জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিকভাবে সংঘাতে জড়ায়, তাহলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস নিশ্চিত হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আশা করি তার আগেই তাদের কর্মসূচি ধ্বংস হয়ে যাবে। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অধিকারী হতে দেওয়া হবে না।’ তেহরান থেকে লোকজন সরানোর আহ্বান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, এটি কোনো নির্দিষ্ট হুমকির কারণে নয়, বরং পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের নিরাপত্তার জন্যই। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু চাই মানুষ নিরাপদে থাকুক যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। তাই নিরাপদ থাকাই ভালো।’ মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন সেনা বা সম্পদ নিয়ে উদ্বেগ আছে কি না-এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, যদি ইরান তাদের স্পর্শ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এত জোরে পাল্টা জবাব দেবে যেৃ আমি মনে করি ওরা জানে, আমাদের সেনাদের স্পর্শ করা যাবে না।” এ সপ্তাহে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও স্টিভ উইটকফকে ইরানের সঙ্গে বৈঠকে পাঠানোর খবর সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘হতে পারে। হতে পারে। আমি দেশে ফিরে কী অবস্থা পাই, তার ওপর নির্ভর করছে।’
মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫