রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন

শুক্রবার, জানুয়ারী ১৯, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

মাদ্রিদ, স্পেন: ইসরায়েল গাজায় ‘অবিরাম’ বোমাবর্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে। এই হামলায় প্রতিবেশী গাজা ভূখন্ড একবারে সমতলে পরিণত হয়েছে ও হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এসব কথা বলেছেন।

ফিলিস্তিনের ভূখন্ডে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক একজন ইতালীয় আইনজীবী ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ এই মন্তব্য করেছেন।

তিনি এমন সময় এমন মন্তব্য করলেন, যখন দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল একটি মামলার মুখোমুখি হয়েছে।

স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে সংবাদ সম্মেলনে আলবানিজ বলেছেন, ‘ইসরায়েল এমন অনেক কাজ করেছে, যা অত্যন্ত বেআইনি, অত্যন্ত আইন লঙ্ঘনকারী।’

‘যদিও ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যে সব লোক সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে জড়িত নয়, বেসামরিক, যুদ্ধবন্দী এবং অসুস্থ ও আহতদের রক্ষার্থে তাদের আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে।’

আলবেনিজ বলেছেন, ‘এর অর্থ হল যোদ্ধা ও বেসামরিকদের মধ্যে পার্থক্য এবং বেসামরিকদের অত্যধিক ক্ষতি এড়াতে সামরিক আক্রমণগুলো সমানুপাতিকহারে নিশ্চিত করা।’

তিনি বলেন, ‘এর বদলে যা ঘটেছে, তা হল অত্যন্ত জনাকীর্ণ এলাকায় ১০০ দিনের নিরলস বোমা হামলা, প্রথম দুই সপ্তাহে প্রতি সপ্তাহে ছয় হাজার বোমা, দুই হাজার পাউন্ডের বোমা বর্ষণ।’

আলবেনিজ বলেছেন ‘বেশিরভাগ হাসপাতাল অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বোমা হামলা বা সেনাবাহিনী দখল করে নিয়েছে। মানুষ এখন শুধু বোমার কারণেই নয় বরং নিরাময়েরর জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য অবকাঠামো না থাকায় মারা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যেসব শিশুর এক বা দুটি অঙ্গ কেটে ফেলা হয়, তাদের সংখ্যা খুবই উদ্বেগজনক। এই যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে এক হাজার শিশুকে অ্যানাস্থেসিয়া ছাড়াই অঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। এটা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে কমপক্ষে ২৪ হাজার ৬২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ মহিলা, শিশু ও কিশোর-কিশোরী।

বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার জাতিসংঘের কর্মী নন কিন্তু জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, যারা মানবাধিকার ক্ষেত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।

আলবেনিজ বলেছেন, ‘তিনি হামাসের দ্বারা পরিচালিত সহিংসতার ‘দৃঢ় নিন্দা’ করেছেন, যা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধও হতে পারে। তবে, ইসরায়েল যা করেছে তা কিছুতেই সমর্থন করা যায় না।’

দক্ষিণ আফ্রিকা গেল সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তাদের মামলা উত্থাপন করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্রদের সমর্থনে ইসরায়েল এটি প্রবলভাবে প্রতিহত করেছে।