শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান না নেয়ায় নিউইয়র্ক সিটির মেয়রের বাসায় ইফতার মাহফিল বর্জনের ডাক

শনিবার, মার্চ ২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
শাহানা হানিফ

নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান না নেয়া পর্যন্ত নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়রের ইফতার মাহফিল বর্জনের জন্যে নিউ ইয়র্কবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিটি কাউন্সিলে প্রথম ও একমাত্র মুসলমান কাউন্সিলম্যান শাহানা হানিফ।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিটি হলের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ শাহানা এ সিটির সব মসজিদে কোন কাউন্সিলম্যানকেই ঢুকতে না দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। কারণ, তার সহকর্মী কাউন্সিলম্যানরাও এখন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান নেননি।

প্রসঙ্গত, রমজান এলেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সিটির মসজিদগুলোতে আনা-গোনা বাড়িয়ে দেন মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরাদারের অভিপ্রায়ে। ইফতারে অংশগ্রহণও করে থাকেন।

শাহানা হানিফ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘রমজান আসন্ন। তাই, সিটির মেয়রের বাসায় ইফতার মাহফিল বর্জন করতে হবে। কারণ, মেয়র এরিক এডামস গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে কোন কথা বলেননি। এমনকি যুদ্ধবিরতির দাবিতে চলমান আন্দোলনের সাথেও সংহতি প্রকাশ করেননি।’

শাহানা আরো বলেন, ‘সহকর্মী সিটি কাউন্সিলম্যানরা যতক্ষণ পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের পক্ষে সুস্পষ্টভাবে অবস্থান না নেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকেও ইফতার মাহফিলে স্বাগত জানানো চলবে না।’

শাহানা এ মানববন্ধন থেকে দ্রুত গাজায় যুদ্ধ বিরতির জন্যে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শাহানা হানিফের এ আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এরিক এডামসের মুখপাত্র ক্যাইলা ম্যামেলাক বলেন, ‘রমজানের পবিত্রতা সুরক্ষায় মুসলিম সমাজকে উৎসাহিত করার পরিবর্তে শাহানা হানিফ দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের উস্কে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় একটি ইভেন্টকেও তিনি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন।’

প্রসঙ্গত, রমজান শুরু হচ্ছে আগামী ১০ মার্চ। ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা। নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র তার বাস ভবন গ্র্যাসী ম্যানশনে পূর্বে মতই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবেন। সেটির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

সিটি কাউন্সিলে প্রগতিশীল ককাসের কো-চেয়ার শাহানা হানিফ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, মেয়রের বাসায় ইফতার মাহফিল বর্জন ও মসজিদগুলোতে কাউন্সিলম্যানদের ঢুকতে না দেয়ার সিদ্ধান্তটি প্রগ্রেসিভ ককাসের নয়, নিতান্তই ব্যক্তিগত। শাহানা বিশ্বাস করেন, গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির পক্ষে মেয়র ও সিটি কাউন্সিলের মেম্বারদেকে সরব করতে এমন কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রতিদিনই সিটিতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল গণহত্যা বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত সভা-সমাবেশের প্রতি ইঙ্গিত করে শাহানা বলেন, ‘এটা হচ্ছে এ সিটির সবচেয়ে বড় একটি ইস্যু ও একে আমরা অবজ্ঞা করতে পারি না।’

এ দিকে, শাহানা হানিফের এ বর্জন কর্মসূচি ঘোষণার দিন নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার আদ্রিয়েন এডামস সাংবাদিকদের জানান, আমরা সিটি কাউন্সিলে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির পক্ষে একটি রেজ্যুলেশন গ্রহণে একমত হয়েছি। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংশ্লিষ্ট সবাই এ নিয়ে কথা বলেছি।’

বলে রাখা ভাল, এরমধ্যেই শিকাগো সিটি কাউন্সিলসহ বেশ কয়েটি সিটিতেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বানে রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত সেই রেজুলেশনের কোন খসড়া তৈরি হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন শাহানা হানিফ, এমনকি কবে নাগাদ তা হবে সেটিও জানেন না।