সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রামে কলেজেছাত্র খুনের মামলায় আসামী শেখ হাসিনা, নওফেল ও আজম নাছিরসহ ১০৮

সোমবার, আগস্ট ১৯, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
ওয়াসিম আকরাম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরামকে খুনের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) সিটির পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহত কলেজছাত্রের মা জোসনা বেগম রোববার (১৮ আগস্ট) দিনগত রাতে থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী ছাড়াও আসামি করা হয়েছে প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ মহিউদ্দিন বাচ্চু, আওয়ামী লীগের নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, চসিকের ওয়ার্ড কাউন্সির শৈবাল দাশ সুমন, আবদুস ছবুর লিটন, এসরারুল হক, মোবারক আলী, হারুন অর রশীদ, মোরশেদুল আলম, নুর মোস্তফা টিনু, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, আশরাফুল আলম, গিয়াস উদ্দিন, জহরলাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, জিয়াউল হক সুমন, পুলক খাস্তগীর, নুরুল আলম মিয়া, মোহাম্মদ ওয়াসিম, আবদুস সালাম মাসুম, জাকারিয়া দস্তগীর, মো. ফিরোজ।

এছাড়া, মামলায় আসামি করা হয়েছে নুরুল আজিম রনি, মো. ইসমাইল, মো. দেলোয়ার, এনএইচমিন্টু, মোহন ঘোষ, মো. আলী, ভূবন ঘোষ, আরহাম খান, ইসমাইল উদ্দিন লিটন, দৌলত খান, এনামুল হক মানিক, নুর মোহাম্মদ, মো. সোহেল, নেজাম উদ্দিন, মো. আমজাদ হোসেন, ইরফানুল আলম তুষার, ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, নুর নবী সাহেদ, শহীদুল ইসলাম, সাগর দাস, জাহেদ হোসেন, জিএম তৌশিফ, সাদ্দাম হোসেন ইভান, দেবাশীষ পাল দেবু, মো. জাবেদ, মহিউদ্দিন, মো. জাফর, মো. আলী (সাহেদ), মহিম আজম, দিদারুল আলম, মো. ইলিয়াছ, মো. আলী, মো. ইসহাক, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, দিদারুল আলম মাসুম, মো. মাসুম, জিহান আলী খান, মহিউদ্দিন শাহ, মুজিবুর রহমান রাসেল, মোহাম্মদ রাশেদসহ ১০৮ জনকে। এছাড়াও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গেল ১৬ জুলাই বিকাল তিনটা থেকে চারটার মধ্যে নিহত ওয়াসিম আকরাম পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুরের বারকোড রেস্টুরেন্টের সামনে ছিল। তখন ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী শক্তিপূর্ণ যৌক্তিক আন্দোলন চলছিল। আন্দোলন চলাকালে আসামিদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে পুরো দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রসস্ত্রসহ ব্যাপক ধ্বংসযোগ্য চালায়। ওই দিন বিকাল চারটায় ওয়াসিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং ওই সময়ে তার ওপর আসামিদের নির্দেশে এবং মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণ ও লাঠিসোঁঠা, হকিস্টিক, কিরিচ ও মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সমাবেশে আক্রমণ করা হয়। এক পর্যায়ে ওয়াসিম বুকে ও নাভিতে আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরাম নিহতের ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীসহ ১০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।’

বলে রাখা ভাল, কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরাম গেল ১৬ জুলাই বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সিটির মুরাদপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং একই কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ওয়াসিম কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শফিউল আলমের ছেলে। তারা দুই ভাই ও তিন বোন।