শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী; সাত এলাকা ‘লাল’ জোন চিহ্নিত

শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে দিন দিন বেড়েই চলছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঝুঁকিতে রয়েছে সিটির বেশিরভাগ এলাকা। এ দিকে, সাত এলাকাকে ‘লাল’ জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও, পাঁচ এলাকাকে হলুদ, সাত এলাকাকে নীল ও চার এলাকাকে সবুজ জোন চিহ্নিত করা হয়েছে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে এক মাসের অর্থাৎ ১-৩০ সেপ্টেম্বর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু আক্রান্তের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

গেল এক মাসে কোতোয়ালি এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৬, বাকলিয়ায় ১০৩, বায়েজিদে ৭৬, বন্দরে ৩৩, পাহাড়তলীতে ৩২, খুলশিতে ২৩ ও চকবাজারে ২০ জন। এসব এলাকা রয়েছে রেড জোনের তালিকায়। এছাড়াও পাঁচলাইশে ১৯, হালিশহরে ১৮, পতেঙ্গায় ১৫, চান্দগাঁওয়ে ১১ ও ডবলমুরিংয়ে দশজন আক্রান্ত হয়েছে। এসব এলাকা রয়েছে হলুদ জোনে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদরা বলেন, ‘সিটির ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ। আর এই সাত ওয়ার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জনঅধ্যুষিত। এসব এলাকায় মশা নিধন কর্মসূচি জোরদার করা উচিত।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ৫১৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই চিহ্নিত সাত ওয়ার্ডের।

এ বছর ডেঙ্গুতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ১১ জন।

গেল বছরের মত এ রোগের প্রকট না হলেও অক্টোবরে আক্রান্তর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মতে, এবার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে শরৎকালে। তাই, বর্ষা মৌসুমে এবার ডেঙ্গুর হানা ছিল না। কিন্তু, সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ জন্য, মশাবাহিত এ রোগের বিস্তার ঘটেছে। তবে, ডেঙ্গু এখন মৌসুমি রোগ নয়, এর প্রকোপ পুরো বছর। অক্টোবরে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র মতে, সাতটি ওয়ার্ডকেই অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে পাঁচলাইশ, হালিশহর, পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং এলাকাও। যেসব এলাকা কম ঝুঁকিপূর্ণ, সেসব এলাকায়ও মশার তীব্র উৎপাত রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘যেসব এলাকায় বেশি ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি, সেগুলোকে রেড জোন চিহ্নিত করছি। সেই তালিকা সিটি করপোরেশনে দিয়ে এলাকাগুলোতে মশা নিধনে বিশেষ নজর দিতে বলেছি।’

চট্টগ্রাম জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছ বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে এসব এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে সাতটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এ তালিকা আমরা সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তালিকার ভিত্তিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা, ওষুধ ছিটানো ও মানুষকে সচেতন করার কাজ করবে। আমরা গেল মাসের জরিপে দেখতে পেয়েছি, যেখানে মশা বেশি সেখানে রোগীর সংখ্যাও বেশি। এসব বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে।’

চট্টগ্রামে গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ২১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছল এক হাজার ৮৬৭ জনে। যার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ৯০৭ জন। চলতি মাসের সাত দিনে আক্রান্ত ৩৬২ জন।