চট্টগ্রাম: ‘আনন্দ উচ্ছ্বাসে ম্যানেজমেন্ট পঞ্চাশে’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উৎসব দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও চট্টগ্রাম শহরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ দিন নবীন-প্রবীণের পদচারণায় মুখরিত হয় চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগ তথা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস; এ যেন এক অন্য রকম মিলনমেলা।
বেলা সাড়ে ১১টায় চবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর শিরীণ আখতার ও বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর আবদুল মান্নান, বিভাগের প্রফেসর (ডেপুটেশন) মোহাম্মদ আবু তাহের, বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, চবির হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর (লিয়েন) এএফএম আওরঙ্গজেব, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন, বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর জাহেদ হোছাইন সিকদার, প্রফেসর এএনআরএম বোরহান উদ্দিন, প্রফেসর আবদুল আউয়াল খান ও প্রফেসর মো. ফসিউল আলম।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক দ্যা পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আবু মুহাম্মদ আতিকুর রহমান। সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য-সচিব মুহাম্মদ মুয়াজ্জম হোসেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ হারিসুর রহমান হাওলাদার ও সহকারী অধ্যাপক সেতু রঞ্জন বিশ্বাস।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয় ও বিগত দিনে মৃত্যুবরণকারী বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, ‘চবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অন্তর্গত ম্যানেজমেন্ট বিভাগ অন্যতম একটি সমৃদ্ধ বিভাগ। এ বিভাগটি ৫০ বছর পার করে আজ সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন করছে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এ বিভাগের প্রতিথযশা শিক্ষকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে বিগত ৫০ বছরে দেশে আলোকিত মানবসম্পদ উৎপাদনের পাশাপাশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও এক্সিকিউটিভ তৈরিতে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। এটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ তথা চবির জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের।’
শিরীণ আখতার আরো বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কারিকুলাম উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে এ বিভাগ প্রতিনিয়ত শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।’
এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে মর্মে উপাচার্য আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আজকের এ মহামিলনমেলায় নবীন-প্রবীণের মাঝে যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে, তা অভূতপূর্ব।’
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এ উৎসবের মধ্য দিয়ে সকলের মাঝে বন্ধুত্বের বন্ধন যেন অধিক সুদৃঢ় হয়, উপাচার্য সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। একইসাথে তিনি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পেশাগত কর্মব্যস্ততা ভুলে এককাতারে এসে পুরনো দিনের সুখস্মৃতি রোমন্থন করে আনন্দঘন মুহুর্ত কাটিয়েছেন ক্যাম্পাসে।