শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ পরিবারের

রবিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২২

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসরত চট্টগ্রামের অধিবাসীদের সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি মৃত আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে তার পরিবার। একই সাথে জিয়ার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। অন্যথায়, অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন তারা।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন আব্দুল হাই জিয়ার স্ত্রী শাহিদা শিকদার হাই। এতে বক্তব্য দেন জিয়ার ছেলে ইশরাক বিন হাই ও মেয়ে মুন জাবিন হাই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহিদা শিকদার হাই বলেন, ‘আব্দুল হাই জিয়ার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে দাওয়াত করার জন্য আমার মেয়ে মুন জাবিন হাই একটি দাওয়াত কার্ড তৈরি করে। যেখানে লেখা ছিল ‘দোয়া মাহফিল ফর আব্দুল হাই জিয়া’। দাওয়াত কার্ডটি আমি ব্যক্তিগতভাবে জিয়ার কমিটির সেক্রেটারি আসরাফ আলি খান লিটন, ট্রেজারার মতিউর রহমানসহ অনেকের কাছে পাঠিয়েছি। ওরা দুজনেই ফেসবুকে কার্ডটি পোস্ট করেন। মতিউর রহমানের পোস্টে মো. হানিফ কমেন্ট করেন ‘দিস গাই স্টুলেন এবাউট টু হান্ড্রেড থাউজেন্ড ডলার ফ্রম চিটাগাং এসোসিয়েশন। বাট উই ডু’ন্ট নো হোয়াইরার ইজ দ্যা মানি ইজ?’

শাহিদা শিকদার আরো বলেন, ‘হানিফ সাহেব আমার স্বামী মরহুম আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে ফেসবুকে যে কমেন্ট করেছেন, তা মিথ্যা অপপ্রচার ও সম্পূর্ণ বানোয়োট। এ কমেন্ট দেখেই অনেকেই আমাকে ও আমার ছেলে-মেয়েদের ফোন দিচ্ছিল। আমি কোরান খতম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বিধায় এ কমেন্ট আমার চোখে পড়ে নি। কমেন্টটা পড়ে আমি ও আমার ছেলে-মেয়েসহ সবাই অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। দোয়া মাহফিলের পোস্টের উপরে এ কেমন কমেন্ট? আমরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমার মেয়ে মুন ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছে ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। যেখানে আমার ঘরে এমনিই শোকের জোয়ার বইয়ে যাচ্ছে, যেখানে আমি আমার স্বামী ও ছেলে-মেয়ে তাদের বাবা হারানোর শোকে ব্যথিত, সেখানে হানিফ সাহেবের এমন মিথ্যা কমেন্ট!’

তিনি বলেন, ‘আমরা যারা মুসলমান ধর্ম বিশ্বাস করি, জানাযার সময় আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার উদ্দেশ্যে বলা হয় যে, মৃত ব্যক্তির কাছে যদি টাকা পয়সা লেনদেন থাকে, তাহলে পরিবারের পক্ষ থেকে দিয়ে দিবে। আমার ছেলেরা জানাযার সময় মেসেজটা উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে দিয়েছিল। তখন টাকা পাবে সেই রকম কোন প্রস্তাব উত্থাপিত হয় নাই। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হানিফ সাহেব কেন, কি স্বার্থে ও কার স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমার স্বামীর মৃত্যুর দুই বছরের পর এ কথাগুলো বলছেন। আবার কমেন্টটা মুছেও ফেলেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে শাহিদা শিকদার দাবি করেন, ওনি (হানিফ) যদি প্রমাণ করতে পারেন, আমার স্বামী টাকা আত্মসাৎ করেছে, আমি সেই টাকা দিতে বাধ্য থাকব। আর যদি প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে আপনাদের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। । আর যদি হানিফ সাহেব সেটা থেকে বিচ্যুত থাকেন, তাহলে এটা আইনের দেশ। আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল, আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।’

শাহিদা শিকদার বলেন, ‘আব্দুল হাই জিয়ার যখন সমিতিতে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তখন ওর কমিটিতে কিছু টাকা জমা ছিল। আবার যখন সমিতিতে ইলেকশন হওয়ার সময় আসল, ঠিক তখনই বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ কোভিড হানা দিল। ইলেকশনের প্ল্যান আর সমিতি করতে পারে নাই। এরপর থেকেই সমিতির টাকাটা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য জিয়াকে বিভিন্নভাবে মেন্টাল প্রেসার দেয়া হয়েছিল। জিয়ার কথা ছিল, আমার কাছে যে টাকা আছে, এ টাকা আমার নয়, পুরো চট্টগ্রামবাসীর। যারাই চাইবে, তাদেরকে আমি এ টাকা বুঝিয়ে দিতে পারি না। ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে যে কমিটি আসবে, আমি তাদেরকেই সব বুঝিয়ে দিব। তবে সেই সুযোগ জিয়া পান নাই।

আরেক অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরেকটা কথা সব সময় কানে আসত যে, জিয়া নাকি আমার নামে সমিতির টাকা ট্রান্সফার করেছে। চ্যালেঞ্জ! এটা প্রমাণ করতে পারলে তিন ডাবল টাকা ফেরত দিব। যদি করতে না পারেন, তাহলে আমি আইনের সাহায্য নেব।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি সরোয়ার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এমএ জাফর, বেদারুল ইসলাম বাবলা, খোকন কে চৌধুরী, এম উদ্দিন ফোরকান, শাহাব উদ্দিন চৌধুরী লিটন, মোহাম্মদ নাজের উদ্দিন, মতিউর চৌধুরী, মো. সফিউল আলম শিকদার, মো. আশরাফ আলী খান লিটন, মো. আবুল কাশেম, বদিউল আলম, মো. শাহিনুর আলী, সৈয়দ শাকিল হক, হাফিজা হোসেন, নার্গিস রহমান, তুলি চৌধুরী, বিউটি ইয়াসমিন, মো. ইমানুল হক, মো. হাসান।