নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: সর্বসাধারণের সামনে দিনের আলোতে ধাক্কা দিয়ে আহত করার পাঁচ দিন পর শুক্রবার (১০ এপ্রিল) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী মো. জাকির হোসেন খসরুর (৭৪) খুনি গ্রেফতার না হওয়ায় রোববার (১২ মে) বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায়। শেরপুর জেলা সমিতি ও জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সব স্তরের বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর সঙ্গে ছিল নতুন প্রজন্মের সদস্যরাও।
কমিউনিটির নিরাপত্তা ও দ্রুত খসরুর ঘাতকের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে স্লোগান উঠেছিল ১৬৭ স্ট্রিট ও হিলসাইড এভিনিউর কর্নারের সেই স্থানে, যেখানে খসরুকে গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছিল ৫ এপ্রিল বিকলে। জামালপুরের সন্তান খসরুর সন্দেহভাজন খুনির ব্যাপারে পুলিশ পুরোপুরি নিশ্চিত হতে না পারলেও যে কোন সময় তার গ্রেফতারের খবর পাওয়া যাবে বলে সমাবেশে জানান তদন্তকারী পুলিশ স্টেশনের কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন টিস্যাঙ জানান। তিনি খসরুর স্ত্রী শামিমা আকতার শিউলিকেও একই আশ্বাস দিয়েছেন। দুর্বৃত্তটি মাস্ক পরিহিত থাকায় সুনির্দিষ্টভাবে তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সমাবেশের সঞ্চালনা করেন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও শেরপুর জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান।
সমাবেশে শেরপুর জেলা সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা আর কোন প্রবাসীকে এভাবে হারাতে চাই না। আমরা নিরাপত্তা চাই চলতি পথে।’
সমাবেশে বক্তৃতা করেন কমিউনিটির লিডার ওসমান গণি, যুক্তরাষ্ট্র সফররত শেরপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া লিটন, বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের (বাপা) ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রিন্স আলম, সাধারণ সম্পাদক রাশেকুল মালিক, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পেশ ইমাম মীর্জা আবু জাফর বেগ।
সমাবেশে ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, ‘২০২২ সালের ১১ মে একইস্থানে ভর দুপুরে ছিনতাইকারী দুর্বৃত্তের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ভূইয়া। তারও পূর্বে প্রায় একই এলাকায় আরো কয়েকজন প্রবাসী আক্রান্ত হয়েছেন। এ জন্য এ এলাকার পথচারিদের নিরাপত্তা জোরদারের বিকল্প নেই। আমি কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি বরাবরে আকুল আহবান জানাচ্ছি, দ্রুত খসরুর খুনিকে গ্রেফতারের পর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য।’
প্রিন্স আলম প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, খসরুকে ধাক্কা দেয়া দৃর্বৃত্তের সন্ধান নিকটস্থ পুলিশকে দিতে কার্পণ্য করবেন না। যে কোন অন্যায়-অপকর্ম চোখে পড়লেই পুলিশের গোচরে আনতে হবে। তাহলেই দুর্বৃত্ত দমনে চলমান অভিযান শত ভাগ সফল হবে।
বিক্ষোভ-সমাবেশের শেষে মাওলানা আবু জাফর বেগের নেতৃত্বে বিশেষ মোনাজাতে মো. জাকির হোসেন খসরুর আত্মার মাগফেরাত কামনা ও প্রয়াত খসরুর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানানো হয়।