রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

জীবাণুর জীবাশ্ম ধারণ করার শিলাখন্ড সংগ্রহ নাসার মার্স রোভারের

শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: লাল গ্রহ মঙ্গলে প্রাচীন জীবনের সম্ভাব্য নমুনা সম্বলিত শিলাখন্ড সংগ্রহ হতে পারে নাসার পারসিভিয়ারেন্স মার্স রোভারের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আশ্চর্যজনক আবিষ্কার। ছয় চাকার রোবোটিক এক্সপ্লোরার সংগৃহীত ‘চেয়াভা ফলস’ নামে তীর-আকৃতির শিলা জুড়ে একটি কৌতূহলী পর্যবেক্ষণ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এ শিলাখন্ডে কোটি কোটি বছর পূর্বে জীবাণুর জীবাশ্ম থাকতে পারে। যখন মঙ্গল গ্রহটি ছিল জলময় পৃথিবীর মত।

মঙ্গলের একটি প্রাচীন নদী উপত্যকা নেরেতভা ভ্যালি অতিক্রম করার সময় মার্স রোভার রোববার (২১ জুলাই) একটি মূল নমুনা সংগ্রহ করার জন্য রহস্যময় শিলা খনন করে।
রোভারের পেটের নীচে সাবধানে রাখা নমুনাগুলো শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতে নিয়ে আসার জন্য নির্ধারিত করা হয়, এটি পৃথিবীতে নিয়ে আসার পর ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তথ্য উন্মোচন করা হবে।

ক্যালটেকের প্রকল্প বিজ্ঞানী কেন ফারলে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বলেছেন, ‘পারসিভিয়ারেন্সের পর্যবেক্ষণে ‘চেয়াভা ফলস’ হল সবচেয়ে বিভ্রান্তিকর, জটিল ও সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ শিলা।’

সাদা ক্যালসিয়াম সালফেট শিরা পাথরের দৈর্ঘ্যকে সঞ্চালিত করে, এটি একটি সুস্পষ্ট চিহ্ন যে এক বার এটির মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। এ শিরাগুলোর মাঝখানে একটি লালচে মাঝারি অঞ্চল রয়েছে, যা জৈব যৌগের পূর্ণ। রোভারের সার্লোস (রোভারে স্ক্যানিং, লেজার এবং বিকিরণের মাধ্যমে জৈব ও রাসায়নিকের বিশ্লেষণের ল্যাব) যন্ত্রের মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা হয়েছে।

পিআইএক্সএল (প্ল্যানেটারি ইনস্ট্রুমেন্ট ফর এক্স-রে লিথোকেমিস্ট্রি) যন্ত্রের স্ক্যান অনুসারে, অবশেষে, কালো রঙের ছোট সাদা দাগ, চিতাবাঘের দাগের কথা মনে করিয়ে দেয় এবং রাসায়নিক ধারণ করা থেকে প্রাাচীন জীবাণুর জন্য শক্তির উৎসের ইঙ্গিত দেয়।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির পারসিভিয়ারেন্স বিজ্ঞানী দলের একজন অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট ও সদস্য ডেভিড ফ্ল্যানারি বলেছেন, ‘পৃথিবীতে পাথরের এ ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রায়শই ভূপৃষ্ঠে বসবাসকারী জীবাণুগুলোর জীবাশ্ম রেকর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে।’ প্রাচীন মঙ্গলগ্রহের জীবন নিশ্চিত করার অনুসন্ধান অবশ্য শেষ হয়নি।

নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার সহযোগিতায়, ২০৩০’-এর দশকের জন্য নির্ধারিত মঙ্গলের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে যখন এ মূল্যবান পাথরের নমুনাগুলো পৃথিবীতে পৌঁছাবে, তখন আসল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

যদিও এ অনুসন্ধানগুলোর জন্য বিকল্প ব্যাখ্যা রয়েছে; যা জীবাণুকে জড়িত করে না, সেখানে একটি উত্তেজনাপূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে যে, পারসিভিয়ারেন্সের মূল নমুনায় প্রকৃত জীবাণুর জীবাশ্ম যুক্ত থাকতে পারে, যা সম্ভাব্যভাবে পৃথিবীর বাইরে জীবনের প্রথম প্রমাণ হিসাবে ইতিহাস তৈরি করতে পারে।

ফ্ল্যানারি বলেন, ‘আমরা লেজার এবং এক্স-রে দিয়ে সেই শিলাটিকে আঘাত করেছি ও সব দিক থেকে এটি বিশ্লেষণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিকভাবে, পারসিভিয়ারেন্স রোভারের আর কিছুই দেয়ার নেই। বিলিয়ন বছর পূর্বে জেজেরো ক্রেটারে সেই মঙ্গল নদী উপত্যকায় আসলে কী ঘটেছিল, তা পুরোপুরি বোঝার জন্য, আমরা চেয়াভা ফলস নামে নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে চাই, যাতে ল্যাবরেটরিতে শক্তিশালী যন্ত্রের মাধ্যমে এটি অধ্যয়ন করা যায়।’