নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: ডেমোক্রেটিক প্রার্থীদের পক্ষের প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় নির্বাচনী সমাবেশ করেছে পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস পিপল আপ। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ সমাবেশের আয়োজন করেন পিপল আপের প্রসিডেন্ট ও কুইন্স কাউন্টি কমিটির মেম্বার প্রার্থী আবু জাফর মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও নির্বাচন সম্পর্কিত তথ্য পৌছে দেয়ার জন্যই এ উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ জনগণের পক্ষে রাজনীতি, ভোট ও প্রার্থীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার কোনে সুযোগ নেই। একজন ভোটার শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, কিন্তু যাকে ভোট দিলেন তার সাথে তার কোনে যোগাযোগ গড়ে উঠলে না। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।’
আবু জাফর মাহমুদ ভোটারদের সামনে তুলে ধরেন, সব শ্রেণীর মানুষ কেন ভোট দেবেন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমালা হারিসকে।
তিনি বলেন, ‘কামালা হারিস জো বাইডেন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ পর্যন্ত যত উদ্যোগ নিয়েছেন, তার সবগুলিই যুক্তরাষ্ট্রের সব জাতিগোষ্ঠীর জন্য দৃষ্টান্তমূলক। সর্বশেষ এক সপ্তাহ আগে ঘোষণা করেছেন, যাদের মেডিকেয়ার থাকবে, তারাই হোম কেয়ার সেবা পাবেন। আমরা মনে করি, এটি এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। কমলা যেভাবে বৃদ্ধ, গরীব, মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন, আমরা সবাই ভোট দিয়ে তার প্রতি সমর্থন জানাবে।’
আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ‘কমলা এবার জিতবেন। জনগণের ভোট, ইলেক্টরাল ভোট ও উচ্চ পর্যায়ের সমঝোতায় আগাম ফলাফল আমরা পেয়েছি, তাতে কমালার জয় সুনিশ্চিত।’
তিনি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ব্যালটে ডেমোক্রেটিক লাইনের প্রত্যেক প্রার্থীকে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যখন সিটিজেন হয়েছি, আমরা অঙ্গীকার করেছি, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। পৃথিবীর যেখানেই হোক, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করে চলতে হবে আমাদের। যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি, অর্থনীতি, রাজনীতি সবকিছুর সাথে নিজেদের বোঝাপড়া একীভূত করতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে বিশ্বনেতৃত্বের শক্তি উপলব্ধি করতে হবে।’
খোলা প্রাঙ্গণে ঝলমলে আলো আর এলইডি মনিটরে তথ্যবহুল প্রচারণায় সাধারণ মানুষের জন্য ছিল বহু প্রাপ্তির উপকরণ। ছিল প্রামাণ্যচিত্র, কেন ভোট দেবেন ডেমোক্রেট প্রার্থীদের।
একে একে নির্বাচিত কর্মকর্তারা এসে যোগ দেন এ আয়োজনে। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা বাংলাদেশি তথা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জন্য কী কী কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেসব বিষয় তুলে ধরে বলেন, ‘এ সংগঠন নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করছে, তারা ভূপৃষ্ঠের অতিতাপ নিয়ে কাজ করছে, তারা সশস্ত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করছে, এখানকার ছাত্রদের অধিকার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর পক্ষে কাজ করছে, নাগরিকদের হোম কেয়ার ও সিডিপ্যাপ সেবা অব্যাহত রাখার জন্য কাজ করছে, সব নাগরিকের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছে।’
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেস রোহাস তুলে ধরেন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের গুরুত্ব।
তিনি বলেন, ‘একজন নাগরিকের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার আছে, এটি তার ক্ষমতা। একইভাবে যিনি ভোটার নয়, তার ক্ষমতাও কম নয়। তিনি অবশ্যই প্রতিটি নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দেবেন, প্রতিবেশির দুয়ারে দুয়ারে যাবেন ও ভোট চাইবেন। সবকছুর সাথেই তার অধিকার ও ক্ষমতা রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ছিলেন ইউএস কংগ্রেসওম্যান এওসির নির্বাচনী কর্মকর্তা পিয়া রহমান, অ্যাসেম্বলিম্যান
স্টিভেন রাগার চিফ অফ স্টাফ ভিক্টোরিয়া লেহী, ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদ ও কাউন্সিল ওম্যান প্রার্থী এরিকা মনটাইয়া।
সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের, জন্মভূমির সম্পাদক রতন তালুকদার, গ্লোবালটাইমসের সম্পাদক রিমন ইসলাম, এনওয়াই কাগজের সম্পাদক মনওয়ারুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মহিবুল্লাহ পলাশ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল খোলা আকাশের নীচে মুক্তমঞ্চে সঙ্গীত আয়োজন। শিল্পী আলভানের কন্ঠের গানের মুর্ছনা মুগ্ধ করে দর্শকদের। পরে বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের মাটির সুর নিয়ে আসেন বাউল শিল্পী কালা মিয়া।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মিলন রহমান ও জয় বাংলাদেশ মিডিয়ার সাংবাদিক আদিত্য শাহীন।