চট্টগ্রাম: দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, ‘মাছ ,মাংস ও শাকসবজি দাম বেড়েছে, চালের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত নিম্ন আয়ের মানুষ নিরবে ধুকছে। তার পাশাপাশি প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান গ্রেফতার করেছে। তার অপরাধ পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কি করুম। আমরা ভাত মাছ-মাংসের স্বাধীনতা চাই। প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা এ সমাবেশ থেকে নিন্দা জানাই।’
শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সিটির কাজীর দেউড়ীস্থ দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের মাঠে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরকত উল্লা বুলু আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী বলেছেন, জিয়া নাকি স্বাধীনতা ঘোষণা করে নাই, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে নাই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে মিথ্যাচারের রাজনীতি। প্রতিনিয়ত তারা মিথ্যাচার করে। এ চট্টগ্রামের মানুষ সাক্ষী আছে, ২৫ এর মার্চ কালো রাত্রিতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাক-খানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। কিন্তু, সেই সময় আওয়ামী লীগের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দিশেহারা জাতির দিগ্বিদিক ছুটছিল। পর দিন ২৬ শে মার্চ রাতে জিয়াউর রহমান এ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থাকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে দিশেহারা যাতে যুদ্ধে চাপিয়ে পড়েছিলেন। এটাই হচ্ছে মূল ইতিহাস।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকার দেশের জনগণের থাকা লুটপাট করেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। বিদ্যুতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলা যাবে না। দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। দুর্নীতি দুঃশাসনের মাধ্যমে চলছে এ দেশের একদলীয় রাষ্ট্রীয় শাসন। ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখ রাতে হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে একদলীয় সরকার গঠন করেছে। এ সরকারের দুর্নীতি, অপশাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি রাজপথে আছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারি অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দাবি না হওয়া পর্যন্তবিএনপির রাজপথে থাকবে।’
শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘দেশের মানুষ আজকে মৌলিক অধিকার হারিয়েছে। মানুষ আজকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়েছে। এ জন্য জনগণের দল বিএনপির আজকের এ দশ দফা কর্মসূচি। এ জন্য রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ২৭ দফা প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ভাতের অধিকার ও মৌলিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করে যাবে। কয়েক দিন আগে মধ্যরাতে প্রথম আলোর একজন সাংবাদিককে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে ও মামলা দেয়া হয়েছে। প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর আগে র্যাব হেফাজতে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ সরকার মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকার সবকিছুই ধ্বংস করে ফেলেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে মানুষের কণ্ঠ রোধের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গলার কাটা। তাই, দ্রুত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কালা কানুন বাতিল করুন
দ্রুত গণ মাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান শাহাদাত হোসেন।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘সরকার দলীয় লুটেরা সিন্ডিকেট চক্র দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণ দিশেহারা। নিত্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির অবস্থা শোচনীয়। অবৈধ সরকার দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারে সফল। তাদের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের খেশারত দিচ্ছে জনগন। দেশের জনগণ আজ খেতে পারছে না, জনগনের দুর্ভোগ দুর্দশা নিয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বলা ও লিখা যায় না। প্রতিবাদ করলে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলামের পরিচালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এমএ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, আবদুস সাত্তার, এসএম সাইফুল আলম, এসকে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মাহবুব আলম, মুফিজুল হক ভূঁইয়া, এসএম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান, শ্রমিক দলের শেখ নূর উল্লাহ বাহার, মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, বাবুল হক, মো. আজম, মো. সালাউদ্দীন, আবদুল্লাহ আল হারুন, নুরুল আবছার, এমআই চৌধুরী মামুন, থানা সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জাহিদ হাসান, মো. শাহাবুদ্দীন, জসিম উদ্দিন জিয়া, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, নুর হোসাইন, শ্রমিকদলের শম জামাল উদ্দিন, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, সদস্য সচিব আবদুল আজিজ, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম শরিফুল ইসলাম তুহীন।