ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পিটিআইকে বলেছেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে মতপার্থক্য দূর করার উপায় নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যাপারটি দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে আছে, কোন দেশেরই এতে লাভ হচ্ছে না।’
ঢাকায় নিজ সরকারি বাস ভবনে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টনের ব্যাপারটি অবশ্যই হতে হবে।’
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) পিটিআই নিউজের ওয়েবসাইটে এ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মত ভাটির দেশগুলোর অধিকার সমুন্নত রাখার সুনির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে।’
‘ব্যাপারটি (পানিবণ্টন) নিয়ে বসে থাকার ফলে এটা কোন কাজে আসছে না। আমি যদি জানি যে, আমি কতটুকু পানি পাব, তাহলে এটি ভাল হত। এমনকি পানির পরিমাণ নিয়ে যদি আমি খুশি না–ও হই, তাতেও সমস্যা নেই। ব্যাপারটির সমাধান হতেই হবে।’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারটি সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে শিগগিরই তাড়া বা চাপ (পুশ) দেবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে. ইউনূস বলেন, ‘নয়া সরকার ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করবে।
এ নিয়ে তিনি আরো বলেছেন, ‘চাপ (পুশ) শব্দটি বহু বড়। আমি এ কথা বলছি না। আমরা আলোচনা করব। তবে আমাদের একসাথে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
২০১১ সালে ঢাকায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে আর চুক্তি হয়নি। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তার রাজ্যেই পানির সংকট রয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘এটা নয়া কোন ব্যাপার নয়, বরং খুবই পুরোনো ব্যাপার। আমরা বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে কথা বলেছি। পাকিস্তান শাসনামল থেকেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু। আমরা সকলে যখন ওই চুক্তি চূড়ান্ত করতে চেয়েছি, এমনকি ভারত সরকারও প্রস্তুত ছিল; তখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এর জন্য তৈরি ছিল না। আমাদের এটির সমাধান করতে হবে।’
বাংলাদেশের মত ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট অধিকার সমুন্নত রাখতে চাওয়ার অধিকার থাকার ব্যাপারটি পুনর্ব্যক্ত করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি মেনে এ ব্যাপারে সমাধান করতে হবে। ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে ও আমরা সেই অধিকার চাই।’