মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

দেশবাসীকে শেখ হাসিনা/যাকে খুশি ভোট দিন

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

তেজগাঁও, ঢাকা: আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয় নিশ্চিত করে বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসতার উত্তর দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমি ভোটে কোন সংঘাত চাই না।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বুধবার (৩ জানুয়ারি) গাইবান্ধা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে নির্বাচনী জনসভায় ঢাকার তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসকে ‘দুর্বৃত্তপরায়ণতা’ হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদের এই দুর্বৃত্তপরায়ণতার উত্তর দিতে হবে আপনাদেরকে, বাংলাদেশের মানুষকে।
আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে এর উত্তর দেবেন ও উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখবেন- সেটাই আমরা চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই নির্বাচনে যেমন আমাদের নৌকার প্রার্থী আছে, সেই সাথে আমরা এই নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি, কাজেই আপনাদের ভোট আপনারা যাকে খুশি পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারবেন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব-এটা আমাদের স্লোগান। কাজেই আপনাদের পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দেবেন, কোন ধরনের গণ্ডগোল আমি চাই না। আপনাদের সহনশীলতা দেখাতে হবে। নির্বাচনে যার যার ভোট সে সে শান্তিমত দেবে। এতে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব যেন না থাকে এবং সে পরিবেশটা আমাদের রক্ষা করতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে, এই নির্বাচনটা বাংলাদেশের জন্য একান্তভাবে জরুরি।
আর এই বাংলাদেশ নিয়ে তো অনেকে বহু ধরনের খেলা অনেকে খেলতে চায়।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না। এ দেশে জয় বাংলা স্লোগান যারা নিষিদ্ধ করে দেয়, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ যারা নিষিদ্ধ করে দেয়, মুক্তিযুদ্ধ চেতনা যারা ধ্বংস করে, তারা এই দেশটাকেই ধ্বংস করতে চায়। তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
আর সেই লক্ষ্য নিয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। যার যার নিজের ইচ্ছামত ভোট দেবে। এখানে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না, কোন রকম সংঘাত আমি চাই না।’

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সরকারের নানা উন্নয়নের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশে একটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আমরা আনতে পেরেছি। তাই, দেশের উন্নয়নটা আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, বিএনপি-জামায়াতের চরিত্রটা হচ্ছে দুর্নীতি করা আর মানুষ খুন করা। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করে। এর থেকে জঘন্য কাজ আর কিছু হতে পারে না। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে যেমন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, ঠিক সেই ভয়াল রূপ নিয়ে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের তারা মানুষের সামনে হাজির হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল খালেদা জিয়া। থাকতে পারেনি। ভোট চুরি করলে জনগণ মেনে নেয় না। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার পতন ঘটে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়। তারপর পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু, ওদের শিক্ষা হয়নি। তাই, ফের ২০০১ সালে ভোট কারচুপি, ভোট চুরি, জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলা শুরু করে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করে নির্বাচনে জিততে চেয়েছিল। তাদের দুঃশাসনের কারণেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়।’

২০১৩ ও ২০১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাস এবং ২০১৮ সালে বিএনপির নির্বাচনের নামে মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে তাদের দলের ভরাডুবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েই ২০০৮ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে ৩০ আসন আর আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ আসনে জয়ী হয়। অন্য আসনগুলো আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো পেয়েছিল। যে কারণে তারা এখন নির্বাচন বানচাল করতে চায়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই, এই নির্বাচনটা সত্যিকার অর্থে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সুগম হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, এই নির্বাচনে আমরা সফল হব, জনতার জয় হবে।’