রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ধর্ম/ভাগে কোরবানি দেয়ার নিয়ম

সোমবার, জুন ১০, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ডেস্ক প্রতিবেদন: মুসলিমদের সব থেকে বড় দুই আনন্দের দিনের মধ্যে ঈদুল আজহা একটি। ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ ও বড় আমল হল কোরবানি দেয়া। এটি ইসলামের একটি মহান নিদর্শন। ইসলামে, হিজরী ক্যালেন্ডারের ১২তম চন্দ্র মাসের ১০-১০ জিলহজ্জ সকাল সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানী দেয়ার সময় হিসেবে নির্ধারিত।

আল্লাহ কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন ও কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

কোরবানিতে আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্যের শিক্ষা এবং আল্লাহর ভালবাসায় নিজের সব চাহিদা ত্যাগ করার শিক্ষা রয়েছে। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানে কোরবানি কেউ একা দিবেন। আবার কেউ শরিকে বা ভাগে কোরবানি করবেন। এ ক্ষেত্রে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী, একজন একটি পশু অথবা বড় পশুকে শরিকে কোরবানি করা জায়েজ।

তবে, ইসলামী শরিয়াতে শরিকে কোরবানি করার বিষয়ে কিছু বিধান রয়েছে। গরু, মহিষ ও উট এ জাতীয় যে পশুগুলো কোরবানির জন্য বৈধ, সেগুলোর মধ্যে ভাগে কোরবানি দেয়া জায়েজ। নবী করীম (সা.) সাত ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেয়া অনুমোদন করেছেন। সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রাসুল (সা.) উটের মধ্যে দশ ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। তবে, শরিক হয়ে কোরবানি করলে কিছু ব্যাপার জানা জরুরি।

যেমন উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যে কোন সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭) এভাবে একটি বড় পশুতে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হয়ে কোরবানি দিতে পারবে।

জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা হুদায়বিয়ার সনে উট সাতজনের পক্ষ থেকে ও গরুও সাত জনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছিলাম।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩২২, আবু দাউদ: ২৮০৯, তিরমিজি: ১৪২২, ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)

আপনি চাইলে একটি গরু বা মহিষ দুই, চার বা ছয় ভাগেও কোরবানি করতে পারবেন। তবে, মনে রাখতে হবে- কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোন শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

কেউ যদি গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেয়ার নিয়তে ক্রয় করে, এ পশুতে অন্যকে অংশীদার করাও তার জন্য জায়েজ। তবে ধনী হলে এতে কাউকে শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেয়া উত্তম।

আবার কোরবানি ওয়াজিব হয়নি- এমন কেউ যদি কোরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করে থাকে, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করে আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করেছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে, তবে ওই টাকা সদকা করে দেয়া জরুরি হবে। কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (ফতোয়া কাজিখান: ৩/৩৫০-৩৫১; বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২১০)

তবে, সকলের পূর্বে যে কথা মনে রাখতে হবে, তা হল, কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকা দ্বারা কোরবানি করা শুদ্ধ নয় এবং এক্ষেত্রে অন্য অংশীদারদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ পবিত্র, তিনি হালাল ও পবিত্র ব্যতীত কোন কিছু গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ২২১৫)