মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নয়া দিল্লীতে শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা

সোমবার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২

প্রিন্ট করুন

নয়া দিল্লী, ভারত: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়া দিল্লিতে পৌঁছালে ভারত তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানায়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসাথীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সকাল সময় ১১টা ৪০ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম ও ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান অভ্যর্থনা জানান। শেখ হাসিনার সম্মানে বিমানবন্দরে লাল গালিচা বিছানোর পাশাপাশি ৬-৭ সদস্যের একটি সাংস্কৃতিক দল স্বাগত নৃত্য ও বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন করে। এর আগে সকাল দশটা ১৭ মিনিটে তার ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন ও তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেয়া হবে।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ও পরে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করা হবে।

শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিল্লী পৌঁছানোর পর তার রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখারের সাথে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সাথে তার দেখা করার কথা রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবারই (৫ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করবেন ও ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ও নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) তার সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাত করবেন। আদানি গ্রুপ চেয়ারম্যান গৌতম আদানিরও সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করার কথা রয়েছে।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনা শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বৈঠক ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) ও ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের প্রথম দিনে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ পরিদর্শন করবেন।

করোনা ভাইরাসর মহামারীর প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে শেষ বার সফর করার পর থেকে তিন বছর পর ভারত সফর করছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন যার মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন।

ইউক্রেন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও চলমান করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে এ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা বাড়াতে চায়।

হায়দ্রাবাদ হাউসে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে।