পটিয়া, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলায় বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টায় আওয়ামী লীগের প্রাক্তন হুইপ ও সংসাদ সামশুল হক চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে আরো ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
গেল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা এলাকার ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি করেন। পরে শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে মামলার ব্যাপারটি জানাজানি হয়।
মামলায় হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, হুইপের দুই ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবসহ ১২১ জনকে এজহারভুক্ত আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকম সামশুজ্জামান, মোজাম্মেল হক রাজধন, নুরুল হুদা, এমরান, যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, মহিম, বাবর, জাবেদ সরওয়ার, কায়ছার, সাদ্দাম, সাইফুজ্জামান মানিক, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ছাত্রলীগ নেতা কপিল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, পটিয়া পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, রুপক কুমার সেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আসামিরা ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে নিরীহ ব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। পরে গেল ১১ অক্টোবর রাত আটটার দিকে ১-৩ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ৪-১৮ নম্বর আসামিরা যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে বাদিসহ যুবদলের নেতা আবুল হাসান, জাফর আহমদ, মো. রাসেল, মো. ফোরকান, সাইফুদ্দিনসহ অনেকেই আহত হয়। ১৯-১২১ নম্বর আসামিরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’সহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে এলোপাতাড়িভাবে ককটেল বিস্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ সময় পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কের শান্তির হাট এলাকায় আসামিরা বাদি ও ভিকটিমদের হত্যার উদ্দেশে লোহার রড দিয়ে মারধর করে। এ সময় আসামিরা ভয় দেখিয়ে শান্তিরহাটের বিভিন্ন দোকান বন্ধের চাপ সৃষ্টি করে ও প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দেয়। পরে বাদিসহ আহতরা প্রথমে শান্তিরহাট জেনারেল হাসপাতাল ও পটিয়া জেনারেল হাসপাতালেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
মামলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ‘গেল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে পটিয়া থানায় বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী। সেই মামলায় প্রাক্তত সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে এবং প্রাক্তন হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ আরো ১২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘এ মামলায় আরো ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন এজহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছি। এসব মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে।’