শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগে পিঠা উৎসব

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির হাজারী লেইনস্থ প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ভবনে অর্থনীতি বিভাগের উদ্যোগে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী এ উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর কাজী শামীম সুলতানা ও ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক। অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী উৎসবে সভাপতিত্ব করেন।

অনুপম সেন বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতি ও বাঙালি সমাজ মুখ্যত গ্রামীণ। এ সংস্কৃতি ও সমাজে পিঠার স্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, বাঙালির কাছে এ পিঠার কদর চিরদিন থাকবে।’

পিঠা উৎসবের আয়োজন করায় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বাঙালির অর্থনীতি মুখ্যত গ্রামীণ ছিল। এখনো গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা ন্যূন নয়। যদিও নাগরিক শিল্প ও সেবা ক্রমশ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মুখ্য স্থান অধিকার করছে। কিন্তু গ্রামীণ কৃষির উপর আমাদের নির্ভরতা সব সময় ছিল, সব সময় থাকবে, একই সাথে গ্রামীণ সংস্কৃতির উপরও। আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐশ্বর্য অনেক। তা রক্ষা করতে হবে, যেমন, পিঠা সংস্কৃতি।’

অনুপম সেন আরো বলেন, ‘১৬-১৭ শতক ও ১৮ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী ছিল। তখন গ্রাম ছিল স্বনির্ভর। কেবল লবণ, লোহা, সোনা, রূপা- এসবের জন্য গ্রামকে তখন শহরের উপর নির্ভর করতে হতো। এ ছাড়া সবকিছু গ্রামে পাওয়া যেত। তখন গ্রাম ছিল ‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’। সে সময় গ্রামীণ সংস্কৃতি ছিল খুবই ঋদ্ধ। ১২ মাসে ১৩ পার্বণ অনুষ্ঠিত হতো। হত পিঠা পুলির উৎসবও। আজকে অর্থনীতি বিভাগের যে পিঠা উৎসব হচ্ছে, তা সেই সংস্কৃতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’

তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের ঋদ্ধ গ্রামীণ সংস্কৃতি কয়েক হাজার বছরের।’

অনুপম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লব ও পুঁজিবাদী বিপ্লবের বিবরণ দেন। জীবনকে উপলব্ধি ও আনন্দদায়ক করার জন্য দারিদ্র দূরীকরণের প্রয়োজনীয়তাও তিনি তুলে ধরেন।

কাজী শামীম সুলতানা এবং একেএম তফজল হক বাঙালি সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ পিঠা উৎসবের আয়োজন করার জন্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান।

পিঠা উৎসবে অনেক রকমের পিঠা ও খাবারের প্রদর্শনী ছিল। যেমন- মিষ্টি বরা, ভাঁপা পিঠা, সাঁজের পিঠা, তালের পিঠা, পুলি পিঠা, নিমকি, কালো জাম, জিলাপি, খেজুরের রস, নারিকেল পিঠা, বিনি চালের পিঠা, সুজির ছই পাকন পিঠা, চুষি পিঠা, পানতোয়া পিঠা, পাটিসাপ্টা, নকশি পিঠা, শীত পিঠা, রসের চাঁ, আদিবাসীদের পিঠা (ছিলাং মুং, কদ মুং, কেংদ মুং, ছেশমামুর, গুং মুং, চিতল ভর্তা), শিমের ফুল, দুধ চুটকি, পাকন পিঠা, রসভরি পিঠা, জালি পিঠা, দুধ পুলি, চমচম পিঠা প্রভৃতি। অর্থনীতি বিভাগের বিভিন্ন সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা পিঠা ও খাবারগুলো পটিয়ার মিষ্টি হাইলে আইয়্যু, পিঠা হাইলে আইয়্যুন, নকশা, পানসা, বাহারি পিঠা, বাহারি বানু, মিডে, হাট্টা মিডে চলিবু না?, হাইলে মজা না হাইলে সাজা প্রভৃতি স্টলের মাধ্যমে প্রদর্শন করে। উৎসবে পালংকি নামে একটি পানের দোকানের স্টলও ছিল।

উৎসবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কান্তি নাথ ও বদরুল হাসান আউয়াল, প্রভাষক ফারিয়া হোসেন বর্ষা, সুদিপ দে ও উম্মে সালমা।