শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

ফিলাডেলফিয়ায় মুনার কনভেনশন ২০২৩ এর আগস্টে; লক্ষ্য ২০ হাজার লোকের সমাগম

বুধবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ফিলাডেলফিয়া, পেনসিলভেনিয়া: আমেরিকার দাওয়াতি ও সামাজিক সংগঠন ‘মুসলিম উম্মাহ অফ নর্থ আমেরিকার (মুনা)’ কনভেনশন ২০২৩ এর ১৮, ১৯ ও ২০ আগস্ট ফিলাডেলফিয়ায় অবস্থিত পেনসিলভেনিয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। তিন বছর পর এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বারের মত এবারো রয়েছে তরুণ ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা ইয়ূথ কনভেনশন এবং ইয়ং সিস্টার্স কনভেনশন। রয়েছে কোরআন অনুসারে কল্যাণকর জীবন-যাপনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর অনুষ্ঠান। আলোচনা ছাড়াও থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ইসলামী ও অন্যান্য সামগ্রীর দোকান নিয়ে বাজার। ছোট ছেলে-মেয়েদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘লার্ন এন্ড ফান’ এবং বিভিন্ন খেলাধুলা ও রাইডের ব্যবস্থা। ফিলাডেলফিয়ায় ভ্রমণকারীদের জন্য থাকবে আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতিবহুল ভ্রাতৃপ্রতিম ভালবাসার শহর, নানা দর্শনীয় স্থান পরিবহন ও পরিদর্শনের সুযোগ। পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-স্বজন আর পুরো আমেরিকা থেকে আসা বাংলা ভাষাভাষীদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ। এ কনভেনশন মুসলিম জীবনে বিশেষ করে বাংলাদেশী-আমেরিকান পরিবারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্বাস করে আয়োজকরা।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মুনার ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আরমান চৌধুরী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন মুনার ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ। মুনার মজলিশ শুরা মেম্বার আব্দুল্লাহ আল আরিফের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মজলিশ মুরা মেম্বার এমএম মাওলা সুজন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘কনভেনশনে এবারের কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় ও থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আল-কোরআন গাইডেন্স ফর হিউম্যানিটি।’ আল-কোরআনের কল্যাণকর পতাকা প্রতিটি হৃদয়ে, প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে পৌঁছে যাক, মুনা এ বিশ্বাস ধারণ করেই এবারের কনভেনশনে মূল কেন্দ্রীয় প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করেছে। এবারের কনভেনশনে আমাদের টার্গেট ২০ হাজার লোকের সমাগম। এ টার্গেট বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মুনা নিজের সদস্য ও অন্যান্য মুসলিমদেরকে নিয়ে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতে চায়, যাতে করে তারা অন্য ধর্মাবলম্বী অভিন্ন ভাষাভাষী বর্ণ ও গোত্রের জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবেশীদের সাথে পারস্পরিক সংলাপে নিয়োজিত হতে পারে, যার মাধ্যমে অন্ত ও আন্ত সাম্প্রদায়িক বোঝাপড়া সামাজিক প্রসার ও উন্নয়ন ঘটানো যায়। মুনা মনে করে, এ প্রক্রিয়ায় এ সমাজে সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘মুনা চায়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দানকারী যুক্তরাষ্ট্রের জনশক্তি এবং অন্যান্য নাগরিকরা বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলুক। যাতে করে তাদের কথা শোনা হবে ও তাদের অধিকার রক্ষা করা যাবে এবং তাদেরকে বৈষম্যের রাজনৈতিক জীবনের এক প্রান্তে ঠেলে দিয়ে উপেক্ষা করা হবে না। মুনার প্রাথমিক ফোকাস হচ্ছে, বাংলা ভাষাভাষী তথা বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি। মুনা প্রধানতঃ বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে এর কর্মকান্ড চালিয়ে থাকে। এদের দুনিয়াবী ও পরকালীন কল্যাণ নিশ্চিত করতেই মুনা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ দেশে বাংলাভাষাভাষী মুসলিমরা ও অন্যান্যরা কিভাবে এখানকার মুলধারার জীবনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং একই সাথে নিজেদের আধ্যাত্মিক নৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করবে, সেই বিষয়ে সচেতন। তাই মুনা চায়, বাংলাদেশী-আমেরিকানরা কর্মতৎপরতায় বেশি বেশি করে সক্রিয় অংশগ্রহণ করুক। সাথে সাথে বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে গড্ডালিকা প্রবাহ থেকে বাঁচাতে মুনা চায়, প্রতিটি বাংলা ভাষাভাষী অভিভাবক তাদের সন্তানকে মুনা ইয়ূথ ও ইয়ং সিস্টার অফ মনার সাথে সম্পৃক্ত করুক। মুনা চায়, বাংলাদেশি-আমেরিকানদের আমেরিকার মূল ধারার মুসলিম স্কলার ও নেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। এ জন্য ভূমিকা রাখবে মুনার এবারের কনভেনশন ২০২৩। আমেরিকায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ গঠনে দিকনির্দেশনা সম্বলিত আলোচনা রাখবেন বিশ্ব খ্যাত আলোচকরা। এবারের ইংরেজি আলোচকদের সাথে থাকবেন বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা বাংলা ভাষার ইসলামিক স্কলার।’

প্রসঙ্গত, মানুষের ব্যক্তিগত নৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আল­াহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় মুনা। সংগঠনটি ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে করপোরেশন ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে মুনা আমেরিকার ৪০ এর বেশি রাজ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছ। মুসলমানদের দৈনন্দিন সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড এবং জাতীয় নাগরিক জীবনে ভূমিকা পালনের জন্য সংগঠিত করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে এসব ব্যক্তিরা আল­াহ ও তার রসূল হযরত মুহাম্মদকে (সা.) অনুসরণের মাধ্যমে মানবতার সেবা করতে পারে।