মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বান্দরবানের থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি

বুধবার, এপ্রিল ৩, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

থানচি, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার থানচির কৃষি ও সোনালী ব্যাংক বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন জানান, প্রায় ২০জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ঢুকে ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তবে, ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে তারা টাকা নেয় নি। এ সময় ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে, কোন ধরনের গুলি বিনিময় হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, দুইটি পিকআপে করে প্রায় ২০জন সশস্ত্র ডাকাত দল থানচির ব্যাংকে আসে। ব্যাংকে অস্ত্র নিয়ে ঢুকে সেখানে থেকে টাকা নিয়ে যায় এবং ওই দেইটি ব্যাংকে থাকা গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনও নিয়ে যায়।

এ দিকে, থানচির ডাকাতির ঘটনার মাত্র ১৬ ঘন্টা আগে জেলার রুমা উপজেলায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনালী ব্যাংকের শাখায় ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেই সঙ্গে ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র আর গুলি লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে, ব্যাংক থেকে টাকা লুট করা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে পারেনি বান্দরবান জেলা প্রশাসন।

রুমার সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার উথোয়চিং জানান, ডরমেটোরিতে যাওয়ার পথে আমার মোবাইল ছিনিয়ে নেই হঠাৎ করে। প্যান্টের পকেটে যা টাকা চলে সবগুলো তারা নিয়ে গেছে। এরপরে আমার পকেট থেকে ব্যাংকের চাবি নিয়ে ফেলে ও অস্ত্রের মুখে বলে নড়াচাড়া করলে গুলি করে দিব। এরপর আমি কিছু জানি না। তবে, আবার পরে ব্যাংকে ফিরে এসে দেখি ব্যাংকের ভিতরে ভাঙচুর চালিয়েছে।

রুমা উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম মো. নুরুল ইসলাম জানান, তিন রাকাত নামাজ শেষ না হতেই আমরা দেখলাম যে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মসজিদে ঢুকে সকলকে অবরুদ্ধ করে রাখল। পরে ম্যানেজারের কথা জিজ্ঞেস করে। মসজিদের ভিতরেই ম্যানেজার ছিল ও ম্যানেজারকে প্রথমে চিহ্নিত করতে না পারলেও অনেকক্ষণ পরে চিহ্নিত করতে পেরে নিয়ে যায়। তারা উন্নতমানের অস্ত্র হাতে ২০ জনের মত ছিল। আমাদের একজনকেও উঠতে, বসতে দেয়নি কিংবা একটু কথাও বলতে দেয়নি।

রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার দিদারুল আলম বলেন, ‘ডাকাতির সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে দশটি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়া হয়। ব্যাংকের অদূরে থাকা আনসার ব্যারেক থেকে চারটি অস্ত্র ও ৩৫টি গুলি ছিনিয়ে নেয়-সশস্ত্র এ সন্ত্রাসীরা। ওই সময় পুলিশ ও আনসারকে মারধর করে। ওই সময় ব্যাংকের লাগোয়া থাকা অফিসার কোয়ার্টারে অবস্থান করা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন কর্মামচারী মারধরের শিকার হয়।

সার্বিক অবস্থা জানার জন্য বুধবার (৩ এপ্রিল) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান, বান্দরবান জেলার প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও জেলার পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন।

পরিদর্শন শেষে আইজিপি বলেন, ‘কি কাজ করছি এখন বলতে চাচ্ছি না। তবে, সবাই সমন্বিতভাবে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের কাজ করছি। টাকা আদৌ কি খোয়া গেছে কিনা তা ম্যানেজারকে উদ্ধারের পর বলতে পারব। সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি।আমাদের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে।’

শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, ব্যাংকের ভিতরে ভাঙচুর হয়েছে। টাকা লুট হয়েছে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। ভল্টে ঢুকার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট লাগবে। সিআইডি এসে ভল্ট পর্যবেক্ষণ করার পরে বিস্তারিত বলতে পারব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৈকত শাহীন বলেন, ‘ভল্ট খোলার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট লাগবে। ভল্ট খোলা যায়নি। টাকা নিয়েছে কি নিয়ে যায়নি, সেটা এখন বলা যাবে না, আরো কিছু সময় লাগবে।’