মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বিশ্বে দ্রব্যমূল্য কমলেও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে বৃদ্ধির রেকর্ড

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: ‘বিশ্বে দ্রব্যমূল্য কমলেও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে বৃদ্ধির রেকর্ড। শুধু এখানেই শেষ নয়; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেল এমনকি পানির দামও সরকার বাড়াচ্ছে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার লক্ষ্যে।’

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতিরোধের দাবিতে প্রতিবেদন পাঠ ও প্রতিবাদ সভায় নতুনধারা বাংলাদেশের (এনডিবি) নেতারা এসব কথা বলেন।

দলের চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদীর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে লিখিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও’র তথ্যানুযায়ী, গেল আগস্ট মাসে সারা বিশ্বে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে সর্বনিম্ন হয়েছে। এ সময়ে চাল ও চিনি ছাড়া বিশ্ববাজারে প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দামই কমেছে। অথচ বাংলাদেশে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশে; যা গেল ১২ বছরের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ রেকর্ড। খাদ্য মূল্যস্ফীতি গেল বছরের জানুয়ারিতে ছিল সাত দশমিক ৭৬ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে আট দশমিক ১৩, মার্চে নয় দশমিক শুন্য নয়, এপ্রিলে আট দশমিক ৮৪, মে মাসে নয় দশমিক ২৪, জুনে নয় দশমিক ৭৩, জুলাইতে নয় দশমিক ৭৬, আগস্টে ১২ দশমিক ৫৪, সেপ্টেম্বরে ১২ দশমিক ৩৭, অক্টোবরে ১২ দশমিক ৫৬, নভেম্বরে ১২ দশমিক ৭০, ডিসেম্বরে ১২ দশমিক ৭৫ ও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১২ দশকি ৭৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকেই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তা আর ঠেকাতে পারেনি সরকার।’

কর্মসূচিতে মোমিন মেহেদী বলেন, ‘১৯৭২ সালের ৬ মে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার পর প্রতি বছরই ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে এর দাম। করোনার সময়কাল থেকে কয়েক দফা জ্বালানির দাম বাড়ানো হল। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন মালিকদের ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের বাসের ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত তুলে বেড়ে গেছে সবকিছুর দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নাগরিক জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সবাই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বিপদে পড়ছে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও দিন-আনি-দিন-খায় রোজগারের মানুষজন।’

তিনি আরো বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অনাহার, অপুষ্টিসহ নানা প্রকার জটিল ব্যাধির প্রকোপ। ফলে, সার্বিকভাবে এর প্রভাব পড়ে কোন একটি দেশের জাতীয় ভাবমূর্তিতে। হয়তো এসব কারণেই পাশ্ববর্তী দেশ ভারত পণ্যের দাম বৃদ্ধি রোধে তেলের শুল্ক কমিয়েছে, গ্যাসে ভর্তুকি বাড়িয়েছে, সরবরাহ বাড়িয়ে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আরও কিছু দেশ চাহিদা বজায় রাখতে বর্ধিত দামের ওপর ভর্তুকি দিচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপ কমাতে বাংলাদেশে অর্থ মন্ত্রণালয় এমন কোন ব্যবস্থা কখনো নেয়নি।’

অন্য বক্তারা বলেন, ‘গেল ১৪ বছরে ১২ দফায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে অন্তত ১২১ শতাংশ। আর পাঁচ দফায় গড়ে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৭৫ শতাংশ। পরিবহন খাতের সিএনজির দাম বেড়েছে ছয় দফা। এ ছাড়া ডিজেলের দাম বেড়ে প্রায় ২৩৭ শতাংশ আর অকটেন ও পেট্রোলের দাম প্রায় ১৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্য দিকে, ঢাকা ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়েছে ১৪ বার। এ পরিস্থিতি উত্তরণে ব্যর্থ হলে জনগণ তাদেরকে কোনভাবেই ক্ষমা করবে না।’

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন এনডিবির প্রেসিডিয়াম মেম্বার রেজাউল করিম, সিনিয়র শান্তা ফারজানা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিপুন মিস্ত্রী, ভাইস চেয়ারম্যান নূরজাহান নীরা, যুগ্ম মহাসচিব মনির জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ রানা, হাওয়া বেগম, আফতাব মন্ডল, তারেক ভূঁইয়া. মিজানুর রহমান, হুমায়ুন কবির, মো. সালমান প্রমুখ।