শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

বুড়ো বাইডেনের বিকল্প কি পেল না ডেমোক্র্যাটরা

রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
জো বাইডেন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাস্থ্য নিয়ে আবার গুঞ্জন উঠেছে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে তার সক্ষমতা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বাইডেনকে ঘিরে তার নিজ দল ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অনেক দিন থেকেই হতাশা ঘুরপাক খাচ্ছে। বয়সের ভারে তিনি যেমন নাজুক হয়ে পড়েছেন, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যেও তার প্রভাব কমে এসেছে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে তিনি অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, ফিন্যানসিয়াল টাইমসের।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) স্পেশাল কাউন্সেলের প্রতিবেদনে তার ‘মানসিক ভ্রান্তি’র কথা উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের গোপনীয় নথি তিনি কীভাবে সামলান, তা নিয়ে তদন্তে তার স্মৃতিভ্রষ্টতার সমস্যা ধরা পড়েছে। নিজের সম্পর্কে এমন কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাইডেন। সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ ঝেড়েছেন এ অশীতিপর রাজনীতিক।

হোয়াইট হাউসের দৌড়ে ফের ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হতে যাওয়া বাইডেনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে তার বয়স। বাইডেনের বয়স যেখানে ৮১ বছর, সেখানে ট্রাম্প ৭৭। এমন পরিস্থিতিতে খুব দ্রুতই বাইডেনের বিকল্প কাউকে খুঁজে বের করা উচিত কিনা, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। হোয়াইট হাউস এখন পর্যন্ত সেই প্রশ্নের কোনো সুরাহা করতে পারেনি।

জনপ্রিয়তায় ধস নিয়ে নির্বাচনী বছরে বাইডেন: সাম্প্রতিক ইতিহাসে নির্বাচনী বছরে আর কোন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা বাইডেনের মত কম ছিল না। ডেমোক্র্যাট-তো বটেই, তার বয়স নিয়ে ইলেক্টরেটদের মধ্যেও উদ্বেগ ক্রমে বাড়ছে। এর বাইরেও তার হঠকারী মন্তব্য ও নাজুক হাঁটাচলা নিয়ে অগুণতি মিম তৈরি হয়েছে, ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বেড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে, অর্থনীতিকে ভালভাবে পুনরুদ্ধার ছাড়াও একটি শক্তিশালী শিল্পনীতি প্রণয়ন করেছেন বাইডেন। বিশ্বজুড়ে তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নয়া মিত্র। আর রাজনৈতিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলের প্রগতিশীল ও উদারপন্থীদের প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর শক্তহাতে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাইডেন। যে কারণে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়েও ভাল ফল করেছে তার দল। তার এ সফলতার কারণেই দলটির মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে। যদি তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান, তবে ইতিহাসে সেটা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর পূর্বে, ১৯৬৪ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন দ্বিতীয় বার প্রার্থী না হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটদের জন্য মাঠ ছেড়ে দেন। পরে, তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট হুবার্ট হামফ্রিকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় ডেমোক্রেটিক পার্টি। তখন তার দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রবার্ট এফ কেনেডি। পরে সে বছরের জুনে এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন তিনি। শিকাগোতে দাঙ্গা কবলিত কনভেনশনের মাধ্যমে হুবার্ট হামফ্রিকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু, সাধারণ নির্বাচনে তিনি রিচার্ড নিক্সনের কাছে হেরে যান। এ বছরও শিকাগোতে ডেমোক্র্যাট দলীয় কনভেনশন হতে যাচ্ছে। যেটিকে ১৯৬৪ সালের সেই ঘটনার প্রতিফলন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এ দিকে, অধিকাংশ রাজ্যেই ব্যালটের মেয়াদ নেই। বিভিন্ন রাজ্যের প্রাথমিক ভোটে যে ব্যালট ব্যবহার করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই সেকেলে। নয়া করে ভোটগ্রহণ করতে হলে তার জন্য নয়া ব্যালট পেপার তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি, গাদায় গাদায় নথি প্রস্তুত করে জমা দিতে হবে প্রার্থীকে। বহু ক্ষেত্রে মোটা অংকের আবেদন ফি ও কয়েক হাজার ভোটারের সই সংগ্রহ করতে হবে। এমনকি প্রাথমিক ভোটে অংশ নেয়ার সময়সীমাও অতিক্রম করেছে অধিকাংশ রাজ্যে। রোববারও (১৮ ফেব্রুয়ারি) যদি কোন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নামেন, তাহলেও ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় কনভেনশনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেলিগেটদের ভোট পেয়ে জয়ী হওয়ার মত যথেষ্ট ব্যালট সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তহবিল সংগ্রহে সুবিধাজনক অবস্থানে বাইডেন: প্রাইমারি তথা প্রাথমিক ভোটে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে সবার পূর্বে তহবিলের দিক থেকে জো বাইডেনকে টপকে যেতে হবে। অথচ, এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট এগিয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ২০২৩ সালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি ও তহবিল সংগ্রহের আরো তিনটি মাধ্যমে নয় কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে জো বাইডেনের পুনর্নির্বাচনী প্রচার শিবির। বছর শেষে তাদের হাতে নগদ ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে। এতে বাইডেনকে ফেলতে গিয়ে যে কোন প্রার্থী টালমাটাল অবস্থায় পড়ে যাবেন। চলতি মাসের নথি বলছে, বছরের শেষ দিকে বাইডেনের নিজস্ব প্রচার শিবির থেকেই কেবল চার কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার নগদ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপাবলিকানদের দিক থেকে একই সময়ে তিন কোটি ৩৯ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবির। অন্য দিকে, ট্রাম্পের সবশেষ সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির প্রচার শিবির সংগ্রহ করেছে দুই কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে এ তহবিল সংগ্রহ করেছে তার প্রচার শিবির। চলতি বছরে নিকির ব্যাংক হিসাবে ঢুকেছে এক কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার।

প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ মেয়াদি ভাবনা: ভোটারদের একটি বড় অংশই এমন একজন প্রার্থী চাচ্ছেন, যিনি ত্রাণকর্তার ভূমিকা রাখতে পারবেন। যেমন ডেমোক্রেটিক দলের ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম, মিশিগানের গভর্নর গ্রেটচেন হোয়াইটমার ও ইলিনয়ের গভর্নর জে বি প্রিটজকারের মত তারকা প্রার্থীদের উত্থান প্রত্যাশা করছেন তারা। কিন্তু, সঠিক সময়ে নিজেদের সুযোগকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে চান উদীয়মান তারকারা। অযথাই প্রার্থী হয়ে নিজেদের ব্যক্তিত্ব নষ্ট করতে চাচ্ছেন না তারা। ‘উচ্চাভিলাষী প্রার্থীরা ঝুঁকি নিতে অনিচ্ছুক,’ বললেন অধ্যাপক কেইসি ডোমিঙ্গুয়েজ। সান ডিয়াগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ শিক্ষক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে ব্যর্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের পরবর্তী সুযোগ হারাতে চাচ্ছেন না তারা। আর একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সফল হওয়ার সম্ভাবনা যেখানে কম, সেখানে তাদের প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এছাড়া, এতে দলেও বিভাজন দেখা দেবে।’ যুক্তরাষ্ট্রে নিজ দলের একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের রিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে সফল হওয়ার নজির গেল অর্ধশত বছরেও নেই। ১৯৯২ সালে অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের বিরুদ্ধে নেমে নিউ হ্যাম্পশায়ারে অল্পের জন্য হেরে যান প্যাট বুচানন। এর পূর্বে, ১৯৮০ সালে জিমি কার্টারকে টক্কর দিতে গিয়ে প্রাথামিক ভোটে ডেমোক্রেটিক কনভেনশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি এডওয়ার্ড এফ কেনেডি। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়েরর সরকার ও জননীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক বারবারা নরেন্ডার বলেন, ‘ইতিহাস সেই একই কথা বলছে। ১৯৮০ সালে টেড কেনেডি বনাম জিমি কার্টারের ভোটের লড়াই দেখলেই বোঝা যায়। বহু কিছুতে কার্টারের চেয়ে কেনেডি এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি পেরে ওঠেননি। কাজেই এ সময়ে এসেও একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে হারিয়ে দেয়া সহজ হবে না।’

কারা হতে পারেন বাইডেনের বিকল্প: জো বাইডেনের বিকল্প হিসেবে সকলের পূর্বে নাম আসছে তারই ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের। কিন্তু, তার জনপ্রিয়তার হার আরো কম। এর বাইরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মিশিগানের গভর্নর গ্রেটচেন হোয়াইটমার, কেন্টাকির অ্যান্ডি বিশিয়ার ও ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যাভিন নিউসাম। প্রশ্ন উঠেছে, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কিছু প্রভাবশালী কী এখনো বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন? আবার প্রেসিডেন্টের দৌড় থেকে তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে কী হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর যেমন জটিল, তেমনই সেই সম্ভাবনাও খুব যে বেশি, তা-ও না। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভোটে সফল হওয়া সত্যিকার অর্থেই কঠিন। আর প্রাথমিক ভোট শুরু হওয়ার পর সেটা করা আরো বেশি অসম্ভব। প্রাথমিক ভোটে দলীয় প্রার্থীদের পছন্দের ক্ষেত্রে নিজেদের মতামত দিতে পারেন ভোটাররা। যে কোন আসন্ন জাতীয়, স্থানীয় ও উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে প্রাথমিক ভোট নেয়া হয়। বর্তমান সময়ে এসে বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করা সাংগঠনিকভাবে অসম্ভব বলেই মনে করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও অ্যামি ক্লোবুচারের হয়ে কাজ করা কৌশলী টিম হোগ্যান। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক ভোট শুরু হওয়ার দুই মাস পূর্বে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে এটা আত্মঘাতী অভিযাত্রা।’ জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়েই এতক্ষণ উপরের কথাগুলো বলা হয়েছে। কিন্তু, এর বাইরে কিছু ঘটলে যেমন আচমকা তিনি যদি স্বাস্থ্য সংকটে পড়ে যান- তাহলে কঠিন এক সমস্যায় পড়ে যাবে ডেমোক্র্যাটরা। যদি প্রাথমিক ভোটের আগেভাগেই নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন জো বাইডেন, তাহলে নির্বাচনী দৌড়ে থাকা বিকল্পগুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে ভোটারদের। এ দিকে, যেসব রাজ্যে ব্যালটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, নয়া করে তাদের ব্যালট পেপার তৈরি করতে হবে। দলের কেন্দ্রীয় কর্মকর্তারা এসব ব্যালট প্রস্তুত করেন না, কেবল নিজ নিজ রাজ্যই এসব সিদ্ধান্ত নেয়। যদি প্রাথমিক ভোটের পর বাইডেন নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন, তাহলে আগস্টে ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় কনভেনশনে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আবার বাইডেন যদি প্রাথমিক কিংবা জাতীয় কনভেনশনের মাঝামাঝি সময়ে সরে যান, তাহলেও একইভাবে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

নাজুক বাইডেনকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ডেমোক্র্যাটরা: ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার শঙ্কা থেকেই ডেমোক্র্যাটদের একটি অংশ বাইডেনকে বিদায় জানাতে চান। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের কাছে ধোপে টিকবেন না বাইডেন। আবার সেই একই শঙ্কার কারণে ডেমোক্র্যাটদের একটি অংশ তার সাথে লেগে আছেন। কোনভাবেই তার নিকট থেকে সরে যাচ্ছেন না। তাদের ধারণা, বাইডেন যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না থাকেন, তাহলে অনায়াসে জিতে যাবেন ট্রাম্প। বাইডেনের বড় দুর্বলতা হল তার বয়স। বয়সের কারণে দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে দেখা যায় তাকে। এ কারণে তার জনপ্রিয়তার হারও কমে গেছে। কিন্তু, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কিছু সুবিধা পাবেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। যার মধ্যে রয়েছে, তার একটি প্রতিষ্ঠিত প্রচার শিবির আছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তার নামেরও সার্বজনীন স্বীকৃতি রয়েছে। একজন নতুন প্রার্থী সেই সুবিধা পাবেন না। কারণ, নয়া কেউ এলে তাকে পূর্বে সকলের নিকট একটা পরিচয় ও পরিচিতি তৈরি করতে হবে। ডেমোক্র্যাট দলীয় সাবেক কৌশলী টিম হোগ্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চেয়ে একজন নয়া প্রার্থী অনেকগুলো দিক থেকে পিছিয়ে থাকবেন। আচমকা এসে ভোটের মাঠে তিনি সেই ঢেউ তুলতে পারবেন না।’ আবার একটি নির্বাচন লড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সঙ্গতিরও ঘাটতি থাকবে তার। ভোটে আসার পূর্বে সম্ভাব্য নয়া প্রার্থীকে আরেকটি ব্যাপার ভাবতে হবে, বাইডেনকে যদি ফের প্রাথমিক নির্বাচনে লড়তে হয় ও তিনি যদি তাতে পার পেয়েও যান; তবুও জাতীয় নির্বাচনে এসে তার অবস্থান নাজুক হয়ে যাবে। কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন, একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাথমিক ভোটে লড়ার কারণে ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট ডব্লিউ বুশ ও ১৯৮০ সালে জিমি কার্টারকে ভুগতে হয়েছিল। অধ্যাপক বারবারা নরেন্ডার বলেন, ‘কেউই চান না যে তার কারণে দলে বিভক্তি আসুক কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়ে ফের ক্ষমতায় আসুক।’

তৃতীয় কোন প্রার্থী কী লড়াইয়ে আসবেন: বাইডেনের নাজুক স্বাস্থ্য ও ট্রাম্পের অজনপ্রিয়তা তৃতীয় একটি দলের প্রার্থী হওয়ার পথ খুলে দিতে পারে। এরই মধ্যে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। তার পিতা ১৯৬৪ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। এছাড়াও, জিল স্টেইন ও কর্নেল ওয়েস্ট নামের আরো দুই পার্থী জোরদার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, তারা কিছু ভোট কাটলেও বাইডেন কিংবা ট্রাম্পের কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারবেন বলে মনে হয় না। কিংবা ভোটের হিসাবে তাদের ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারবেন না। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালে ‘নো লেবেলস’ আন্দোলনের মত মধ্যবর্তীরা বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। এখন পর্যন্ত তারা কোন প্রার্থী ঘোষণা করেননি। এরই মধ্যে তাদের মধ্য থেকে জো মানচিনের মত প্রভাবশালীদের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া থেকে ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর। ট্রাম্প ও বাইডেনের আরেক কঠোর সমালোচক নিকি হ্যালি স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বলে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। তবে, নিজেকে একজন রিপাবলিকান দাবি করে সেই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন।