নিউইয়র্ত, যুক্তরাষ্ট্র: আফ্রিকার দেশ মালিতে এক দশক ধরে চালানো শান্তিরক্ষা মিশন শেষ করতে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এর দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই মালির সামরিক জান্তা দেশটি থেকে ১৩ হাজার শান্তিরক্ষীর শক্তিশালী বাহিনীকে দ্রুত চলে যেতে বলে। এর পরই মূলত এমন পদক্ষেপ নিল জাতিসংঘ। খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘ ও মালির সামরিক জান্তার মধ্যে কয়েক বছর ধরেই শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে প্রবল উত্তেজনা চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে মালির পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুলায়ে দিয়োপ শান্তিরক্ষীদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ সরিয়ে নিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
রাশিয়ার ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনারের সাথে ২০২১ সালে মিত্রতা করে মালি সরকার। তার পর থেকেই সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনকে একের পর এক বিধিনিষেধের মুখোমুখি হতে হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এবার বন্ধ হচ্ছে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ এ মিশনটি।
শুক্রবার (৩০ জুন) মালিতে শান্তিরক্ষা মিশন শেষ করতে যখন ভোটাভোটি চলছিল, সেই সময়ই হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, মালি থেকে শান্তিরক্ষীদের তাড়াতে কলকাঠি নাড়ছেন ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। ওয়াশিংটন বলেছে, ‘মালি কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের শেষের দিক থেকে এ পর্যন্ত ওয়াগনারকে ২০ কোটি ডলার দিয়েছে, তার তথ্য আছে।’
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘যে জিনিসটি বেরিয়ে আসেনি, তা হচ্ছে, ওয়াগনারের স্বার্থ রক্ষা করতেই সেনাদলটির প্রধান প্রিগোজিন শান্তিরক্ষা মিশনকে মালি থেকে সরিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছেন।’
এ ব্যাপারে মন্তব্যের অনুরোধ করা হলে মালির সরকারি মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেনি।
তবে, জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত আন্না এভস্টিগনিভা নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ‘মালি ‘সার্বভৌম সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে।’
ফ্রান্সের দেয়া খসড়া প্রস্তাব মেনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এখন শনিবার (১ জুলাই) থেকেই মিশনের কাজ গুটিয়ে নেয়া ও দায়িত্ব হস্তান্তর শুরু করতে বলেছে। সেই সাথে নিরাপদে শান্তিরক্ষা বাহিনীর সব সদস্যদের প্রস্থানের মধ্য দিয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।