ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র: ‘হেলেন’-এর ক্ষত শুকাতে না শুকাতে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসছে। বিপজ্জনক এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘মিল্টন’। বর্তমানে এটি মেক্সিকো উপকূলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় হিসেবে অবস্থান করছে। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি ফ্লোরিডায় উপকূলে আঘাত হানার সময় বড় হারিকেনে পরিণত হতে পারে।
এ দিকে, গেল মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যেকে লন্ডভন্ড করে দেয়া হারিকেন ‘হেলেন’-এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় ফেমা প্রধানের (ফেড়ারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজম্যান্ট এজেন্সির) কঠোর নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। ঘূর্ণিঝড় হেলেন’র আঘাতে এ পর্যন্ত ২২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (৬ অক্টোবর) এ নিয়ে সতর্ক করে ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের নোটিশ দেয়া হয়।
মিয়ামির ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, গ্রীষ্মম-লীয় ঝড় ‘মিল্টন’ রোববার (৬ অক্টোবর) ভোরে ফ্লোরিডার টাম্পা থেকে প্রায় এক হাজার ৩৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার বেগে পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে, ঝড়টি ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার গতি নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।
হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, মিল্টন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু, দ্রুত শক্তিশালী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং এ সপ্তাহের মাঝামাঝি ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের কিছু অংশে প্রাণঘাতী ঝুঁকি নিয়ে আঘাত হানবে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস বলেন, ‘মিল্টন’ ঠিক কোথায় আঘাত হানবে তা জানা না থাকলেও এটি স্পষ্ট যে এটি ফ্লোরিডায় কঠোরভাবে আঘাত হানবে।’
ডিস্যান্টিস আরো বলেন, ‘আপনাদের হাতে প্রস্তুতির সময় আছে। আজ পুরো দিন সোমবার (৭ অক্টোবর) পুরো দিন সম্ভবত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পুরো দিন হারিকেন মোকাবিলার প্রস্তুতির সময় আছে। আপনাদের কোথায় নিরাপদে চলে যেতে হবে, সে স্থান সম্পর্কে জানুন সেখানে আপনাদের বাধ্যতামূলক ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘চার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা ফ্লোরিডা ডিভিশন অব ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এবং ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনকে হারিকেন হেলেনের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে সাহায্য করছে।’
এছাড়া ডিস্যান্টিস ‘মিল্টনের’ আঘাত হানার শঙ্কায় ৩৫টি কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বলেন, ‘ফ্লোরিডাবাসীর বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিঘ্নের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।’
গেল মাসের শেষের দিকে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড উপকূলে আছড়ে পড়ে হারিকেন হেলেন। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। হারিকেনের তাণ্ডবে প্রাণহানির পাশাপাশি বিগ বেন্ড ও আশপাশের এলাকার অজস্র গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, শত শত রাস্তা ডুবে গেছে।
হারিকেন হেলেনের তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে এ পর্যন্ত ২২৭ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। তবে মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়াতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।