মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহতের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

শনিবার, জুলাই ২২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক ইয়াজ উদ্দিন রমিম নিহতের ঘটনায় বিচার দাবি করে চট্টগ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘আমরা চট্টগ্রামবাসী’ নামের একটি সংগঠন। এতে অংশ নেন বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্য, সংস্কৃতিকর্মী। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ লেখা ফেস্টুন দেখান তারা।

সংগঠক ইয়াসির আরাফাতের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহতের ভাই রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সহ-সভাপতি কবি অনিন্দ্য টিটো, যুব নেতা শোয়েব ইসলাম, মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, শৈবাল দাশ, সাদ্দাম হোসেন, মো. আরাফাত হোসেন, মো. রাশেদ, মো. সালাউদ্দিন প্রমুখ।

মানববন্ধনে একজন বাংলাদেশি ছাত্র কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশে ডাকাদের গুলিতে নিহত হয়, সেই প্রশ্ন রাখেন রিয়াজ।

প্রতিবাদী এ মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলে, ‘গেল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত অবস্থায় চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ডাকাদের গুলিতে নিহত হয়েছে। সেখানে মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। নেই মানবাধিকার। অথচ তারা বাংলাদেশে এসে মানবাধিকারের কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সাল থেকে এক হিসাবে ২১ হাজারের বেশি মানুষ পুলিশ ও সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের গুলিতে বছরে এক হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়। পুলিশের গুলিতে প্রতিদিন গড়ে তিনজন মারা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে। আগে তারা নিজেদের দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।’

তিনি আরো বলেন, ‘কথায় কথায় যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশকে নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখায়। বিশ্বমানবতার উচিত, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বিচারবহিরভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা।’

ইয়াজ উদ্দিন আহামেদ

অনিন্দ্য টিটো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ্য দিবালোকে পাখির মত গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। বিচার নেই। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে গড়ে ১০০ জন খুন হচ্ছে। বর্ণবাদ, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মত তুচ্ছ কারণে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। এখন জানলাম, পুলিশ কাস্টোডি থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি পালিয়ে গেছে। অথচ, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলে।’

ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘আমরা ইয়াজউদ্দিন রমিম হত্যার বিচার চাই। ন্যাক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ডে প্রমাণিত হয়, যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার নেই। সেখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’

বলে রাখা ভাল, যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইস শহরে কর্মস্থল বিপি গ্যাস স্টেশনে গেল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালের দিকে ইয়াজ উদ্দিন রমিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত ইয়াজ চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ভালুকিয়া এলাকার বাদশাহ মিয়া সওদাগর বাড়ির মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় ছেলে। সেন্ট লুইস শহরের পার্কওয়ে সেন্ট্রাল হাইস্কুল থেকে স্নাতক শেষ করে রমিম কমিউনিটি কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ালেখা করছিলেন। পাশাপাশি, বিপি গ্যাস স্টেশনে কাজ করতেন।