সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া: মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস উত্তর কোরিয়ায় ‘নিষ্ঠুর একনায়কতন্ত্র’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন। এক দিনের সফরে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এসে এ কথা বলেন তিনি।
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেয়ার লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে রাজধানী টোকিও পৌঁছান কামালা হ্যারিস। সেখানে তিনি জাপানি কর্মকর্তাদের পাশে দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ঘিরে দেশটির সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার দীর্ঘ দিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার চলমান সবশেষ সামরিক মহড়ার ফলে পুরো অঞ্চল উত্তেজনায় কাঁপছে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিউল পৌঁছান কমালা।
পৌঁছার পরই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ন সুক ইওলের সাথে বৈঠক করেন কামালা। দীর্ঘ ৮৫ মিনিটের বৈঠকে কোরিয়া-মার্কিন সম্পর্ক, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, উত্তর কোরিয়ার নানা হুমকি, তাইওয়ান প্রণালিতে ‘শান্তির গুরুত্ব’, অর্থনীতি ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার উপায়সহ পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করেন দুই নেতা।
পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক আইন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটানা পরীক্ষার কারণে কোরীয় উপদ্বীপে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন হ্যারিস। এরপর কোরীয় উপদ্বীপে দুই কোরিয়ার উত্তেজনাকর সীমান্ত ও সুরক্ষিত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ এলাকা পরিদর্শন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এ সময় উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান কামালা। বলেন, ‘শুধু তিনিই নন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও কোরিয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালভাবে অবগত আছেন।’
উত্তর কোরিয়াকে তার নৃশংস একনায়কত্ব, বেআইনি অস্ত্র কর্মসূচি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য নিন্দা জানিয়ে কামালা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি বিশ্ব চায়, যেখানে উত্তর কোরিয়া কোন ধরনের বাধা হবে না।’
কামালা হ্যারিসের সফরের মধ্যে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। কামালা দক্ষিণ কোরিয়ার সফর শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই পরপর দুইটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে পিয়ংইয়ং।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত আটটায় জাপান সাগরে ছোড়া হয় ওই দুটি ক্ষেপণাস্ত্র। এর আগে গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) একই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় দেশটি।