রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

রমজানে নিত্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধের আহবান এফবিসিসিআইয়ের

রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার এও মিল মালিকদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআই আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ক মত বিনিময় সভায় এ আহবান জানানো হয়।

এফবিসিসিআইয়ের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন থাকতে হবে।’

পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে খুচরা, পাইকারি বাজার ও আড়ৎ পর্যায়ে পণ্য কেনা-বেচায় রশিদ (ইনভয়েস) দেয়ার তাগিদ দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ব্যবসায় করতে হবে। বিগত সময়ে ব্যবসায়ীদের প্রতি সাধারণ মানুষের যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে তা দূর করতে হবে।’

তিনি জানান, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রমজানের চাহিদা মেটাতে নিত্য পণ্য আমদানীতে এলসি সহজীকরণের জন্য এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল।

তিনি জানান, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ জনের বাজার মনিটরিং কমিটি কাজ করছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করছে কমিটির সদস্যরা।

তিনি বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে।’

এ সময় চাল ও গম ইত্যাদি পণ্য উৎপাদন করে সরবরাহ শৃঙ্খল স্বাভাবিক রাখার জন্য কৃষক ও খামারিদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এ ছাড়া, বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীদেরকেও ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘পুরো বি শ্বে যেখানে উৎসব পার্বণ এলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমিয়ে দেন, সেখানে আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন।’

উৎসবে পণ্যের দাম বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে ব্যবসায়ীদের অসাধু তকমা দেয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বন্ধের লক্ষ্যে বিক্রয়ের পাকা রশিদ বা ভাউচার প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।’

দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে বেসরকারি খাতের বিরাট ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, ‘বাজারে নিত্য পণ্যের আমদানি ও মজুদ ইত্যাদি নিয়ে বাজারে আমরা অভিযান পরিচালনা করতে চাই না। ব্যবসায়ীরাই এর সামাধান করতে পারে।’

সভায় আসন্ন রমজান মাসে বাজারে ভোজ্যতেলের কোন সংকট হবে না বলে জানান পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

তেল ছাড়াও আসন্ন রোজাকে ঘিরে বাজারে চিনি, ডাল, ছোলা ও খেজুরসহ অন্যান্য পণ্যের সংকট সৃষ্টি হবেনা বলে আশ্বাস দেন মিলমালিক, পাইকারসহ বাজার সমিতিগুলো।

মত বিনিময় সভায় এফবিসিসিআইয়েরর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, হাবীব উল্লাহ ডন, পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার উপস্থিত ছিলেন।