শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

রাফায় অভিযানে ইসরাইলকে সমর্থন দেয়া হবে না

মঙ্গলবার, মার্চ ১৯, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
জো বাইডেন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: রাফায় ইসরাইল বড় কোন অভিযান চালাতে চাইলে তাতে কোন ধরণের সমর্থন দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১৮ মার্চ) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে ফোনে কথা বলার সময় এমনটা জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাদের ফোনালাপের ব্যাপারটি প্রকাশ করেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। খবর দ্য টাইমস অব ইসরাইলের।

নেতানিয়াহু ও বাইডেনের ফোনালাপ নিয়ে পরে হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে জ্যাক সুলিভান বলেন, ‘কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল যে, তারা বড় কোন অভিযানকে সমর্থন করবে না। করলেও তা হতে হবে শর্তসাপেক্ষ।’

তিনি আরো বলেন, ‘রাফায় বড় ধরনের স্থল অভিযান চালানো একটি ভুল সিদ্ধান্ত হবে। এতে নিরীহ মানুষদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। মানবিক সংকট আরো খারাপ হবে। গাজায় নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে ও ইসরাইল ফের আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নেতানিয়াহু ও বাইডেনের মধ্যে এটি ২০তম ফোনালাপ। তবে, ১৫ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম বারের মত ফোনে কথা হলে দুই নেতার। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমারের মন্তব্যের চার দিন পর ফোনে কথা বললেন তারা। দীর্ঘ দিনের ইসরাইল সমর্থক শুমার তার সিনেট বক্ততৃতায় বলেছিলেন, ‘নেতানিয়াহু তার পথ হারিয়ে ফেলেছেন। তার বদলে ইসরাইলে নয়া নেতৃত্ব আনতে নির্বাচন দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) শুমারের এ বক্তব্য নিয়ে কথা বলেছিলেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘শুমারের মত বহু মার্কিনীই এমনটা ভাবছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র পরিষ্কার করেছিল যে, নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারটি ইসরাইলের জনগণের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়। শুমারের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন নেতানিয়াহু এবং অভিযোগ করেছেন যে, ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তরে সোমবার (১৮ মার্চ) ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন সুলিভান। কিন্তু, তার সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য তা নয়। তার উদ্দেশ্য রাফায় বড় কোন অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করা।

কয়েক মাস ধরে, যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়ে আসছে যে, এটি সম্ভাব্য হামলাকে সমর্থন করতে পারে যদি এবং শুধুমাত্র যদি ইসরাইল আগে থেকে একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা পেশ করে যে, কীভাবে দক্ষিণ গাজা শহরে আশ্রয় নেয়া দশ লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে রক্ষা করা যায়।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) নেতানিয়াহু বলেছেন যে, আইডিএফ অভিযান শুরু করার পূর্বে রাফার উত্তরের এলাকায় বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেবে এবং ঘোষণা করেছেন যে, তিনি হামলার জন্য সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।

কয়েক সপ্তাহ ধরে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যু্ক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাইমস অব ইসরাইলের সাথে কথা বলেছেন এবং ক্রমবর্ধমানভাবে এত বড় আকারে উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তবে, সোমবার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত ইসরাইলের পরিকল্পিত অভিযানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আসেনি প্রশাসন।

সুলিভান জানান, ফোনে কথা বলার সময় বাইডেন নেতানিয়াহুকে ওয়াশিংটনে একটি ‘ইন্টারএজেন্সি টিম’ পাঠাতে বলেছিলেন। যাতে করে বড় অভিযান ছাড়াই একটি বিকল্প পথে হামাসের নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয় ও মিশর-গাজা সীমান্ত নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়। সুলিভান জানান যে, নেতানিয়াহু এ ব্যাপারে প্রতিনিধি পাঠাতে রাজি হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই রাফাতে অভিযানের ব্যাপারে নেতানিয়াহুর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। তবে, তিনি ওয়াশিংটনে আলোচনার জন্য দল পাঠাতে রাজি হয়েছেন। আমরা অপেক্ষায় আছি আলোচনায় বসার জন্য।’

সুলিভানের বক্তব্যের পর এক্স বার্তায় বিবৃতি দেন জো বাইডেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘ আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, সন্ত্রাসী দল হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অধিকার ইসরাইলের আছে। যারা হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা চালিয়েছে। তবে, আমি গাজায় একটি দ্রুত যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর চাই। যাতে করে বন্দিদের মুক্ত করা যায় ও বেসামরিক নাগরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো যায়।’

এ সময় ওয়াশিংটনে প্রতিনিধি পাঠানোর ব্যাপারটিও নিশ্চিত করেন বাইডেন।