মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

রেকর্ড জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ

রবিবার, মে ২৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

প্রেইরি, যুক্তরাষ্ট্র: পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং নৈপুন্যে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়িয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। রোববার (২৬ মে) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দশ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে এ প্রথম কোন দলকে দশ উইকেটে হারাল টাইগাররা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে পাঁচ উইকেট ও ছয় রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ হারলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মুস্তাফিজের তোপে ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১০৪ রান করে যুক্তরাষ্ট্র। চার ওভার বল করে মাত্র দশ রানে ছয় উইকেট নেন মুস্তাফিজ। ৯৬ ম্যাচের টি-২০ ক্যারিয়ারে এটিই সেরা বোলিং ফিগার ফিজের। উত্তরে ১১ দশমিক চার ওভারে বিনা উইকেটে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ।

হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটিংয়ে নেমে চার দশমিক পাঁচ ওভারে ৪৬ রান তুলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর ও অ্যান্ড্রিস গাউস। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের করা চতুর্থ ওভারে চারটি চারে ১৭ রান নেন গাউস। পঞ্চম ওভারে প্রথম বল করতে এসে একটি করে চার-ছক্কা হজম করেন সাকিব আল হাসান। তবে, ওভারের শেষ বলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বোধনী ভাঙ্গেন সাকিবই। পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ১৫ বলে ২৭ রান করা গাউসকে শিকার করেন তিনি। এ শিকারের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৭০০ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব। সাকিবের ব্রেক-থ্রুর পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটারদের চেপে ধরে বাংলাদেশের অন্য বোলাররা। ১৪ রানের ব্যবধানে পরের চার উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ, রিশাদ ও তানজিম।
জাহাঙ্গীরকে ১৮ ও নীতীশ কুমারকে তিন রানে আউট করেন মুস্তাফিজ। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অ্যারন জোন্সকে দুই রানে বিদায় দেন তানজিম। মিলিন্দ কুমারকে সাত রানে থামিয়ে দেন রিশাদ। ৪৬ রানের সূচনার পর ৬০ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ষষ্ঠ উইকেটে ৩১ বলে ৩২ রানের জুটি গড়ে যুক্তরাষ্ট্রকে লড়াইয়ে ফেরান নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার কোরি অ্যান্ডারসন ও শ্যাডলি ভ্যান শালকউইক। ১৮তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াকু সংগ্রহের সম্ভাবনা শেষ করে দেন মুস্তাফিজ। শ্যাডলিকে ১২ রানে ও অ্যান্ডারসনকে ১৮ রানে বোল্ড করেন ফিজ। ইনিংসের শেষ ওভারে মুস্তাফিজ আরো দুই উইকেট শিকার করলে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১০৪ রানে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস।

বাংলাদেশের মুস্তাফিজ দশ রানে ছয় উইকেট নেন। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তার পূর্বের সেরা বোলিং ছিল ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে। ওই আসরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ফিজ। এছাড়াও, কিপ্টে বোলিং করেছেন রিশাদ হোসেন। চার ওভার বোলিং করে মাত্র সাত রানে নেন এক উইকেট।
মুস্তাফিজের আগুন বোলিংয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে তানজিম, সাকিব একটি করে উইকেট নেন।

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে ১০৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লেতে ৪৮ রান যোগ করেন দুইজনে। ১১তম ওভারে টি-২০ ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন তানজিদ। এ জন্য, ৩৮ বল খেলেছেন তিনি। এরপর, ১১তম ওভারের চতুর্থ বলেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তানজিদ ও সৌম্য। পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কায় তানজিদ ৪২ বলে অপরাজিত ৫৮ এবং চারটি চার ও দুইটি ছক্কায় ২৮ বলে অনবদ্য ৪৩ রান করেন সৌম্য।

আগামী ২৮ মে ডালাসে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ফের দেখা হবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের।