চট্টগ্রাম: গ্রুপ থিয়েটার নাট্য উৎসব ২০২২’ এর সপ্তম দিনে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ১শান্তনু বিশ্বাস স্মৃতি নাট্য পদক ২০২৩’ দেয়া হয়েছে। ‘চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরাম’ এর আয়োজনে ‘শান্তনু বিশ্বাস স্মৃতি পর্ষদ’ এর উৎসব সৌজন্যে এ পদক দেয়া হয়। কালপুরুষ নাট্য সম্প্রদায় প্রবর্তিত এ পদক পেয়েছেন অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক, অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি আকবর রেজা।
চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের সভাপতি খালেদ হেলালের সভাপতিত্বে ও নাট্যকর্মী দিলরুবা খানমের উপস্থাপনায় এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাহিত্যিক মাহবুবুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মহিলা ক্রিড়া সংস্থার সভানেত্রী তানজিয়া রহমান, কালপুরুষ নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি শুভ্রা বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘সৃজনশীল মানুষ অমর। তারা তাদের সৃজনকর্ম দ্বারা উত্তরসূরিদের পথ দেখিয়ে যান। কাজের মাধ্যমেই তারা বেঁচে থাকেন। আর বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের উৎকর্ষতার জন্যই তাদের স্মরণ করতে হবে, কাজের মূল্যায়ন করে জানাতে হবে শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা। যার নামে স্মৃতি পদক ও যিনি পেলেন, উভয়ই নাট্যজগতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন রেখেছেন। তারা বর্তমান ও উত্তর প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
অন্য বক্তারা শান্তনু বিশ্বাসের বহুমুখী প্রতিভার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমাদের সবার স্বার্থেই শান্তনু বিশ্বাসের শরণাগত হতে হবে। সততা, নিষ্ঠা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। সমাজ দেশ ও জাতির জন্য রেখে দেয়া যায় অসামান্য অবদান। যা আলোকিত করবে, পথ দেখাবে আলোর। এ কাজটা করে গেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব শান্তনু বিশ্বাস। আর করেছেন, করে চলেছেন, পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব আকবর রেজা।
অনুষ্ঠানে শান্তনু বিশ্বাসের লেখা ও সুরে গান পরিবেশন করবে কালপুরুষ নাট্য সম্প্রদায় ও নৃত্য পরিবেশন করবে ওডিসি এন্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট।
সন্ধ্যা সাতটায় মূল মিলনায়তনে নাটক ‘ফুলকুমারী’ পরিবেশন করবে নাট্য দল ‘উত্তরাধিকার’। আমিনুর রহমান মুকুল রচিত ও মোসলেম উদ্দিন সিকদার নির্দেশিত ‘ফুলকুমারী’ নাটকটিতে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেলার বংশাই নদীর উপকূবর্তী নর-নারীর গীতাশ্রিত প্রণয়োপাখ্যান।
পাঠনী কন্যা ফুলকুমারীর সাথে প্রণয় হয় জমিদারের পুত্র সোনা মিয়ার। কিন্তু সোনা মিয়ার মা ছেলের জন্য ভাটির দেশের এক জমিদার কন্যার সাথে। সোনা মিয়া মায়ের সিদ্ধান্তে মেনে নিতে না পেরে মাকে ছেড়ে বেরিয়ে যায় ফুলকুমারীর খোঁজে। নানা চড়াই উৎরাই শেষে এক বিরান ভূমিতে সাক্ষাত হয় উভয়ের। সৃষ্টি হয়, এক করুণ অনুভূতির নির্মম দৃশ্যের।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিতোষ দাশ বিমল, সুনয়ন দেবনাথ, জাহিদুল ইসলাম সবুজ, রাজিউল হাসান, শেখ নিয়াজ বাবু, মাহমুদ রাসেল, মঈন উদ্দিন কোহেল, গৌতম চৌধুরী, বিটু ভৌমিক, রহিমা খাতুন লুনা, গৌরি নন্দিতা, রামিতা ভৌমিক, পিয়াম নাগ, জেনি সুলতানা, শেখ মুনির ও ইমরান।
উৎসবের অষ্টম দিনে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে সঞ্চারী নৃত্যকলা একাডেমি ও পথনাটক ‘শুভ হরতাল’ পরিবেশন করবে অ্যাঁভাগার্ড। সন্ধ্যা সাতটায় মিলনায়তনে নাটক ‘অতঃপর’ পরিবেশন করবে ‘তির্যক নাট্যগোষ্ঠী’।