ঢাকা: ঢাকার আর্মি গল্ফ ক্লাবে বুধবার (২ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মার্কিন সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে ভূমিকম্প পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ক চার দিনব্যাপী অনুশীলন শেষ হয়েছে।
ডিজাস্টার রেসপন্স এক্সারসাইজ এন্ড একচেঞ্জ (ড্রি) বাংলাদেশ (ড্রি)-২০২২ শীর্ষক এ অনুশীলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
এ অনুশীলনের মূল উদ্দেশ্য হল দুর্যোগ মোকাবেলায় জাতীয় প্রস্তুতি বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশের জন্য আর্থকোয়াক কনটিজেন্সি প্লান অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সমন্বয় করা।
ড্রি বাংলাদেশ- ২০২২ অনুশীলনটিতে বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সরকারি ও বেসরকারি বাহিনী ও সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, এনজিও, আন্তর্জাতিক এনজিও এবং ২৭টি বন্ধুপ্রতীম দেশের প্রতিনিধিসহ (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুরস্ক, কানাডা, মঙ্গোলিয়া, লাওস, কেনিয়া, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, সিংগাপুর, ইথিওপিয়া, আর্মেনিয়া, প্রভৃতি) আনুমানিক ৪০০ জন স্বশরীরে ও ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যয়নরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও এ ইভেন্টে অংশ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে সামরিক, অসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ও সামরিক উপদেষ্টা, কূটনিতীকবৃন্দ ও দুর্যোগ মোকাবেলা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ড্রি বাংলাদেশ-২০২২ এর জন্য নির্ধারিত উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চার দিন ব্যাপী এ অনুশীলনে বিভিন্ন সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট এক্সচেঞ্জ(এসএমইই) সেশনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দেশী ও বিদেশী বিশেষজ্ঞরা দুর্যোগ মোকাবেলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন।
ভূমিকম্প আঘাত হানার পরবর্তী পরিস্থিতির আলোকে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন ফাংশনাল গ্রুপে বিভক্ত করে টেবিল টপ এক্সসারসাইজের মাধ্যমে ডিজাস্টার ইনসিডেন্ট মানেজমেন্ট টিম (ডিআইএমটি) এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অন্যান্য ফ্রেমওয়ার্কগুলোকে আরো শক্তিশালী করার চ্যালেঞ্জ ও তা মোকাবেলার উপায়গুলো চিহ্নিতকরণের প্রয়াস নেয়া হয়েছে। তাত্ত্বিক জ্ঞানকে ব্যবহারিক উপায়ে পরীক্ষণের জন্য ভূমিকম্প মোকাবেলার সাথে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণে বানৌজা শেখ মুজিবে ফিল্ড ট্রেনিং এক্সসারসাইজ (এফটিএক্স) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া প্রথম বারের মত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে স্থাপিত ইর্মাজেন্সি অপারেশন সেন্টারে পরিদর্শন করা হয়েছে, যা দুর্যোগ মোকাবেলায় অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়। ড্রি বাংলাদেশ-২০২২ এর অনুশীলন পরিচালনা ও তদ্বপরবর্তী আফটার অ্যাকশন রিভিউয়ের মাধ্যমে লব্ধ জ্ঞান ভবিষ্যতে ভূমিকম্প জনিত দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা দৃঢ়করণে সহায়ক হবে।
‘রিজাইলেন্স থ্রো প্রিপিয়ার্ডনেস’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে নির্ধারিত উদ্দেশ্যগুলো জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ড্রি বাংলাদেশ-২০২২ একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে বলে আশা করা যায়।