মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতি লাগবে, হাইকোর্টের রায় স্থগিত

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেয়ার সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারা বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সাথে বিষয়টি নিয়ে আনা আবেদন শুনানি আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দিয়েছেন।

আইনের ধারাটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আনা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক বলে বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। বুধবার (৩১ আগস্ট) আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। চেম্বার কোর্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আবেদনটি বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। অন্য দিকে, রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।’

এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, সরকারি কর্মচারীদের অযথা হয়রানির জন্য মিথ্যা মামলা করা হয়। মামলার পর তাকে যদি গ্রেফতার করা হয়, পরে তিনি যদি মামলায় খালাস পান। তাকে এক ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ ভোগান্তি নিরসন ও সরকারি কাজের সুবিধার জন্য আইনটি করা হয়। এসব দিক সামনে রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনটি করা হয়। আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রায়টি স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন।

২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই বছরের ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। আইনটির ৪১ (১) ধারার বলা হয়েছে, ‘কোন সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সাথে সম্পর্কিত অভিযোগে করা ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে।’

আইনের ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে তিন আইনজীবী ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন। ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারা কেন বাতিল ও সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন। ফলে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা হলে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে না বলে সে দিন জানিয়েছিলেন রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।