নিউইয়র্ক: ‘তথ্য প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে পৃথিবী আজ উন্মুক্ত। বিশ্বের এক প্রান্তের খবর অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগে এখন মাত্র কয়েক সেকেন্ড। আর এর পেছনে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে গণ মাধ্যমকর্মী তথা সাংবাদিক সমাজ। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে গণ মাধ্যমকর্মীরা সমাজ ও জাতির দর্পণ। সবখানেই মিডিয়ার একটা বড় ভূমিকা আছে। মিডিয়া ছাড়া সরকারও চলতে পারে না, বিরোধী দলও চলতে পারে না।’
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে অনুষ্ঠিত ‘সাংবাদিক আড্ডা’র আলাপচারিতায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব, কর্তব্য ও জনগণের প্রত্যাশাসহ বিভিন্ন বিষয় ‘আড্ডা’য় উপস্থিত সাংবাদিকরা তুলে ধরেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। সভাপতিত্ব করেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনজুরুল হক।
সাংবাদিকতার ধরণ পাল্টে গেছে উল্লেখ করে ফরিদা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আর এর কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আধিপত্য। এখন আর পত্রিকার জন্য কেউ অপেক্ষা করেন না। হাতের মুঠোয় ডিভাইসে সব কিছু পেয়ে যায়। এ জন্য সাংবাদিকতা পেশায় চ্যালেঞ্জ বেশি। কারণ, প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার খবর অনেক যাচাই-বাছাই করে তারপর প্রকাশ করতে হয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই কাজ করতে হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সমাজে সব ক্ষেত্রে একটা অবক্ষয় চলছে। সাংবাদিকরা এর বাইরে নয়। তবে এত কিছুর মধ্যেও সাংবাদিকদের সৎ থাকতে হয়। সাংবাদিকতায় যদি সৎ না থাকা যায়, তাহলে তাদের চাল-ডালের ব্যবসায় করা উচিৎ। কারণ আমরা সাংবাদিকতার নামে পাঠকদের প্রতারিত করতে পারি না।’
ফরিদা ইয়াসমিন এখানে বসবাসকারী এ প্রজন্মের সন্তানদের বাংলা শেখানোর আহবান জানিয়ে বলেন, ‘তারা যাতে তাদের শেকড় ভুলে না যান, সে দিকে খেয়াল রাখবেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি আপনারা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরুন। কারণ, আপনারা সবাই বাংলাদেশের দূত।’
মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, ‘বাংলাদেশ হাসলে আমরাও হাসি। বাংলাদেশ ভাল থাকলে আমরা ভাল থাকি। তাই, বাংলাদেশকে ভাল রাখার জন্য দল ও মত নির্বিশেষে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। গণ মাধ্যমকর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিসীম। দায়িত্বরত সাংবাদিকদের একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, আলাপচারিতা, সহভাগিতা ও পেশাগত মান উন্নয়নে একে অপরের সহযোগিতা অপরিহার্য।’
মনজুরুল হক বলেন, ‘আপনাদের সবার উপস্থিতি এ অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেছে। আগামীতেও আমরা সময় ও সুযোগ পেলে একত্রিত হওয়ার আশা রাখি।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসাথী হিসেবে আসা সাংবাদিকদের মধ্যে আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, দৈনিক পূর্বাঞ্চলের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম টুটুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুর রহমান জিহাদ।
উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান রচি, সাপ্তাহিক প্রবাসের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ওয়ালিউল আলম, ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মশিউর রহমান মজুমদার, কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক, সাপ্তাহিক প্রবাসের রিপোর্টার স্যামুয়েল এস পিনারু, পাপিয়া বেগম, বাংলাট্রিবিউনের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন, আইবিটিভি ইউএসএর বিশেষ প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান।
আমন্ত্রিত অতিথিদের ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নি মঈন চৌধুরী, জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, কলামিস্ট সালেম সুলেরি, সাংবাদিক সাঈদ তারেক ও আমান উদ দৌলা, ইউএসএ নিউজ অনলাইনের সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সেলিম, ইউএনএর সম্পাদক এবিএম সালাউদ্দিন আহমেদ, ভোরের কাগজের ইউএস প্রতিনিধি শামীম আহমেদ, অর্থকন্ঠের সম্পাদক এনামুল হক এনাম, ফটো সাংবাদিক এমডি হোসেন তুষার, বিডিফটো নিউজের সাংবাদিক মো. সাইফুল ইসলাম, মৈা-টাইম মিউজিকের আলমগীর খান আলম, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট খন্দকার ফরহাদ, ওয়াহিদ কাজী এলিন, মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, কাজী তোফায়েল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন রাজু, তাসমিয়া তাহারিমা। জাতীয় দলের সাবেক বক্সার সৈয়দ এনায়েত আলী, বক্সার শাহ সেলিম উল্লাহ।