শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

সাবমেরিনের গোপন তথ্য বিক্রির পাঁয়তারা; মার্কিন দম্পতির সাজা

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১০, ২০২২

প্রিন্ট করুন

মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র: দেশকে ঝুঁকি মুখে ফেলার জন্য মার্কিন নৌবাহিনীর এক প্রকৌশলী ও তার স্ত্রীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ফেডারেল বিচারক। এ সময় মামলাটিকে একটি থ্রিলার উপন্যাস বা গুপ্তচর চলচ্চিত্রের গল্পের মত শোনাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক।

বুধবার (৯ নভেম্বর) দেয়া রায়ে বিচারক জিনা গ্রোহ বলেন, ‘এক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ দম্পতি ভিন্ন এক দেশের প্রতিনিধির কাছে মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিনের গোপন তথ্য বিক্রির পাঁয়তারা করছিলেন।’ তিনি এ দম্পতিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘মহাবিপদ’ বলে অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের আনাপোলিসের বাসিন্দা এ দম্পতিকে ২০২১ সালের অক্টোবরে অপরাধের দায়ে প্রথম অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। ৪৪ বছর বয়সী জোনাথন টোয়েবে সাবমেরিনের নকশা ও তার কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশদ তথ্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে এক লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রির জন্য চেষ্টা করছিল। তার মতে, ওই ব্যক্তি ছিল অন্য এক দেশের সরকারের কেউ।

অপর দিকে, তার স্ত্রী ডায়ানা, যিনি এফবিআইয়ের একজন এজেন্ট বলে মনে করা হয়, তিনি গোপনে তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়টা নজরদারির মধ্যে রেখেছিলেন।

জোনাথন টোয়েবেকে ১৯ বছরের ও তার স্ত্রীকে ২২ বছরের কারাভোগের সাজা দেয়ার সময় বিচারক বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমী গল্প।’

আদালতে তিনি বলেন, ‘তাদের ক্রিয়াকলাপ ও লোভী মনোভাব সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমুদ্রে ও সব মার্কিন নাগরিককে শুধু দুর্বল অবস্থানে মুখেই ফেলে নি, বরং সবাইকে প্রতিপক্ষের ঝুঁকিতে ফেলে।’

এর আগে বিচারক এ দম্পতির সাজা কমানোর আবেদন নাকচ করে দেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, মেরিল্যান্ডের একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষিকা ডায়ানা সাবমেরিনের গোপন তথ্য একটি মেমোরি কার্ডে লুকিয়ে সেটা চুইংগাম র‍্যাপার ও পিনাট বাটার স্যান্ডউইচের মত বস্তুগুলিতে রেখে দিত। এভাবে লুকিয়ে তথ্য প্রদানের এক প্রচেষ্টার সময় ২০২১ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার জেফারসন থেকে তাকে ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাবমেরিনের এ নথিগুলো ‘টপ সিক্রেট’ বা ‘টপ গোপন’ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে না, সেগুলো বরং ‘গোপনীয়’ ক্যাটাগরির তথ্য ছিল। দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি করে ফেডারেল পুলিশ টুকরো টুকরো কাগজপত্রের একটি ট্র্যাশ ব্যাগ, কয়েক হাজার ডলার, পাসপোর্ট ও একটি ইউএসবি ফ্ল্যাশড্রাইভ ও ল্যাটেক্স গ্লাভসসহ একটি ‘গো-ব্যাগ’ খুঁজে পান।

বুধবার (৯ নভেম্বর) পাঁচ ঘণ্টার শুনানির সময় ডায়ানা স্বীকার করেছেন যে, তিনি কারাগারে থাকাকালীন তার স্বামীকে দুইটি চিঠি পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। চিঠি দুইটি আদালতে পড়ে শোনানো হয়, যেখানে ডায়ানা তার স্বামীকে ওই ষড়যন্ত্রের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে মিথ্যা বলার জন্য বলেন। তিনি যেন বলেন, ডায়ানা ‘এর কিছুই জানেন না।’ পড়ার পর চিঠি কমোডে ফ্ল্যাশ করার জন্যেও সে তার স্বামীকে নির্দেশ দেন।

ব্রাইস মিলার, যিনি নেভাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেটিভ সার্ভিসের একজন বিশেষ এজেন্ট, তিনি আদালতে বলেন, ‘এ দম্পতি আমেরিকান জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ও আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।’

শুনানির সময় সরকারি উকিল আদালতকে জানান, যে ওই দম্পতি দেশ ছেড়ে পালানোর পাঁয়তারা করছিল।