শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

‘সাহিত্য একাডেমি নিউইয়র্ক’র ১৩ বছর পূর্তি

রবিবার, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: সাহিত্য প্রেমীদের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে ‘সাহিত্য একাডেমি নিউইয়র্ক’ ১৩ বছর পূর্ণ করেছে। এ উপলক্ষে গেল ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানর আয়োজন করা হয়। একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রয়াত লেখক মনসুর আলীসহ যারা প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে ছিলেন তাদের সকলকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সাথে সবাই মিলে বর্ষ পূর্তির কেক কাটেন।

তিনি বলেন, ‘সাহিত্য একাডেমি আমাদের প্রাণের মেলা। সৃজনশীল সব ক্ষেত্রের মত লেখালেখিতেও অসাধারণ সব প্রতিভাবান লেখকরা এখন লিখছেন। প্রবাসী লেখক বলে কিছু নেই, সবাই বাংলা সাহিত্যের লেখক। আজ আনন্দের সাথে জানাই, স্থানীয় লেখকরা কবিতা-গল্প- প্রবন্ধ খুব ভাল লিখছেন। নিউ ইয়র্কের সাহিত্য অঙ্গন আজ খুব সমৃদ্ধ।’

লেখক হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা এমন এক সময় উৎসবে মিলিত হয়েছি, যখন খুবই দুঃসময়। আমাদের সামনে মানুষ মারা যাচ্ছে পাখির মতো। গাজায় প্রায় ছয় হাজার শিশু মারা গেছে। সাহিত্য একাডেমি ও সব লেখকের পক্ষ হতে যুদ্ধের তীব্র নিন্দা করছি, দাবি করছি দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ হোক।’

লেখক ফেরদৌস সাজেদীন বলেন, ‘সাহিত্য একাডেমিতে ঢুকে অনেক নক্ষত্র দেখতে পাচ্ছি। আজ আমাদের উৎসবের দিন। গেল ১৩ বছর ধরে আমরা একে অপরের স্বরচিত পাঠ শুনে, সহযোগীতা করে এখানে পৌঁছেছি। সাহিত্য একাডেমি উম্মুক্ত জায়গা। যে কেউ এখানে আসতে পারে, যোগ দিতে পারে। সাহিত্য একাডেমির বড় গুণ সবাইকে আপন করে নেয়। লেখা ও লেখা প্রকাশের মধ্যবর্তী সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাহিত্য একাডেমি লেখকদের ওই মধ্যবর্তী সময়টার যত্ন নেয়।’

লেখক আবেদীন কাদের বলেন, ‘১৩ বছর ধরে একটি সাহিত্য সংগঠন চালিয়ে নেয়া সহজ কাজ নয়। সাহিত্য একাডেমি নিয়মিত আসর করছে, এটি অত্যন্ত আনন্দের।’

প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকার সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন বলেন, ‘আসরে উপস্থিত অনেকেই আমার পত্রিকায় লেখেন। এখানে লেখালেখি করে কেউ অর্থ পান না। কঠিন জীবন সংগ্রামের মধ্যেও যে আপনারা লিখছেন সেটাই যথেষ্ট। নিউইয়র্কের সাহিত্যাঙ্গনে সাহিত্য একাডেমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, তারা সবাইকে একসাথে যুক্ত রাখেন।’

লেখক নীরা কাদরী বলেন, ‘কবি শহীদ কাদরীর উৎসাহে আমি সাহিত্য একাডেমির সাথে যুক্ত হয়েছিলাম। সাহিত্য একাডেমির মত নিয়মিত সাহিত্য আসর এই শহরে আর কোথাও হয় না। সাহিত্য একাডেমির সাথে আছি ও থাকব।’

নাট্যব্যক্তিত্ব রেখা আহমেদ বলেন, ‘সাহিত্য একাডেমি বড়, ছোট সবাইকে একসাথে একই জায়গায় যুক্ত করতে পেরেছে, এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহসীন আলী বলেন, ‘১৯৮৬ সালে প্রথম এই দেশে যখন আসি, তখন এমন সাহিত্য আসর ছিল না। আজ সাহিত্য একাডেমির ১৩তম বার্ষিকীতে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।’

সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ বলেন, ‘এখানে নতুনরা অনেক ভাল লিখছে। সাহিত্য একাডেমিতে এসে নতুনদের অসাধারণ স্বরচিত পাঠ শুনে খুব ভাল লাগে। সাহিত্য একাডেমি নতুনদের জন্য লেখালেখির আবহ তৈরি করছে।’

কবি শামস আল মমীন বলেন, ‘এই শহরে যারা নতুন লিখছে, তাদের জন্য সাহিত্য একাডেমি একটি অনুপ্রেরণামূলক প্লাটফর্ম। সাহিত্য সংগঠন নিয়মিত চালানো কঠিন কাজ, সাহিত্য একাডেমি সে কঠিন কাজটি করছে।’

লেখক এবিএম সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘এমন শীতার্ত সন্ধ্যায় আমরা সাহিত্য একাডেমিতে একসঙ্গে হয়েছি প্রাণের টানে। আমাদের সাহিত্য শুধু কল্পনা নির্ভর না হোক, হোক মানবতার। এক দিন হয়ত নিউইয়র্কের সাহিত্যিকদের অন্যরা অনুসরণ করবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন লেখক আবু সায়ীদ রতন, লেখক রাণু ফেরদৌস, বাফার প্রতিষ্ঠাতা ফরিদা ইয়াসমিন, লেখক আকবর হায়দার কিরণ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ উদ্দিন, আবৃত্তিকার আবীর আলমগীর, নাট্যব্যক্তিত্ব এজাজ আলম, আবৃত্তিকার কবির কিরণ, গীতিকার মাহফুজুর রহমান,আবৃত্তিকার দিনাত জাহান।

স্বরচিত কবিতা পাঠ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ধনঞ্জয় সাহা, মৃদুল আহমেদ, পারভীন সুলতানা, তাহমিনা খান, বেনজির শিকদার, ফারহানা হোসেন, লুৎফা শাহানা, নেহার সিদ্দিকী, জেবুন্নেসা জ্যোৎস্না, সুমন শামসুদ্দিন, মনিজা রহমান, শুক্লা রায়, রুপা খানম, আকলিমা রানা চৌধুরী, সুলতানা ফেরদৌসী, ছন্দা বিনতে সুলতান, মিয়া আসকির, শাহ পলাশ, স্বাধীন মজুমদার, পলি শাহীনা।

আসরে উপস্থিত ছিলেন আহমাদ মাজহার, রাহাত কাজী শিউলি, মিনহাজ আহমেদ, উদিতা আজাদ, সাবিনা হাই উর্বি, তাহরীনা পারভীন প্রীতি, ফরহাদ হোসেন, রওশন আরা নীপা, শহীদুল ইসলাম, আনিস সিদ্দিকী, রেদোয়ান জুয়েল, শাফী মাহমুদ, ইয়াকুস আলী মিঠু, এসএম রোজী, দিনা ফেরদৌস, মাহবুব লীলেন, শাহ আলম।

গান করেন আলভান চৌধুরী।