শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

স্কটল্যান্ডে নিজের মৃত্যুর গল্প বানিয়েও ধরা খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক

রবিবার, জানুয়ারী ৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

স্কটল্যান্ড: চলচ্চিত্রকেও হার মানাবে এ গল্প। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বয়সে তরুণ। কিন্তু করে বসেন ধর্ষণের মত গর্হিত অপরাধ। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিরল ফন্দি আটেন তিনি। নিজের মৃত্যুর গল্প সাজিয়ে পালিয়ে যান স্কটল্যান্ডে। সেখানে নয়া নাম নেন তিনি। এভাবে বেশ কিছু দিন পালিয়ে থাকতে পারলেও অবশেষে ধরা পড়ে যান। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় ফাঁস হয়ে যায় তার আসল পরিচয়। আর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে এবার তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই নাগরিকের আসল নাম নিকোলাস আলহভারদিয়ান। রোড আইল্যান্ডের বাসিন্দা তিনি। ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহতে বান্ধবীকে ধর্ষনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে পারিবারিক কলহের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে পুলিশ থেকে বাচতে নিজের মৃত্যুর গল্প সাজিয়ে ভুয়া পরিচয় নিয়ে স্কটল্যান্ডে পালিয়ে যান নিকোলাস। সেখানে নিকোলাস রোজি নামে নতুন পরিচয় ধারণ করেন তিনি। এভাবেই বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি দেশটিতে বাস করছিলেন।

অতিমারী করোনা ভাইরাস মহামারি শুরু হলে নয়া বেশ ধারণ করেন নিকোলাস। হুইল চেয়ারে বসে, মুখে অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে বাইরে বের হতেন তিনি। এভাবে ঘুরে বেড়ানো এ মানুষটিকে প্রথম দেখাতে যে কারও অসহায় বলেই করুণা জাগবে। মানসিকভাবেও অসুস্থ বলে মনে হবে অনেকের। কিন্তু, অসুস্থতার ভান করা ৩৬ বছর বয়সী নিকোলাস এক সময় আসলেই করোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গ্লাসগোর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে এক ব্যক্তি তাকে চিনে ফেলেন।

তবে, হাসপাতালে নিজেকে আর্থার নাইট নামে স্কটিশ অনাথ হিসেবে পরিচয় দেন। এছাড়া, কখনই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখেননি বলেও দাবি করেন। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়েন স্কটিশ পুলিশের হাতে। এরপর, তার বিরুদ্ধে স্কটল্যান্ডের আদালতে বিচার শুরু হয়। তবে, এতেও বার বার বিঘ্ন ঘটান তিনি। দাবি করেন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

বিচারককে তিরস্কার ও নিজের আইনজীবীকে বহিষ্কারের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তবে, গেল নভেম্বরে আদালত তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিকোলাস আলহভারদিয়ান হিসেবেই চিহ্নিত করে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) স্কটল্যান্ডের পুলিশ জানায়, দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আলহভারদিয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করছে তারা।