শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

২০ ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যু শতবর্ষী মার্কিন দম্পতির

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২২

প্রিন্ট করুন

হ্যামিলটন, ওহাইও: যৌবনে একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন তারা। বিয়ের মাধ্যমে পরিণতি পেয়েছিল সেই প্রেম। এরপর আট দশক ধরে এক মহাকাব্যিক দাম্পত্য জীবনযাপন করেছেন তারা। অবশেষে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন। এটা এমন এক ভালবাসার গল্প, যা হয়তো যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে ফিরবে। খবর পিপল ডটকমের।

ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের। গত ৩০ নভেম্বর হ্যামিলটনের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় স্বামী হুবার্ট ম্যালিকোটের। স্বামীর মৃত্যুর ২০ ঘণ্টা পর একই হাসপাতালে মৃত্যু হয় স্ত্রী জুন ম্যালিকোটের। মৃত্যুকালে তাদের দুজনেরই বয়স ছিল ১০০ বছর।

৩০ নভেম্বর রাত সোয়া নয়টার দিকে হুবার্ট মারা যান। পর দিন বিকাল পাঁচটা ৪০মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জুন। মৃত্যুকালে এ দম্পতি তিন সন্তান, ১৮ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।

শতবর্ষী এ দম্পতির প্রেমের গল্পের শুরু হয়েছিল ১৯৪১ সালে। ওই বছর ওহাইওর হ্যামিল্টনের চার্চ অব গডে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। এর দুই বছর পর বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেন হুবার্ট। অন্য দিকে, ম্যালিকট জাহাজের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় কাজ করতেন।

চলতি বছরের শুরুর দিকে তারা একত্রে আরেকটি মাইলফলক উদযাপন করেন। গত ১৩ জুলাই জুন ও ২৩ জুলাই হুবার্ট তাদের ১০০তম জন্মদিন পালন করেন। শুধু তাই নয়, গত ৮ জুন নিজেদের ৭৯তম বিবাহ বার্ষিকীও উদযাপন করেছিলেন এ দম্পতি। আগস্টে হৃদরোগে আক্রান্ত হন জুন। সেই সময় তার বিষয়ে চিকিৎসকরা দুঃসংবাদ দিয়েছিলেন। এর এক মাস পর অক্টোবরে তার জটিল ইউটিআই রোগ ধরা পড়ে। যে কারণে আর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন নি।

এ দম্পতির মেয়ে জো ম্যালিকোট বলেছেন, ‘বয়সের তুলনায় তার বাবা বেশ সবল ছিলেন। কিন্তু স্ত্রী মারা যাওয়ার এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে হৃদয় ভাঙা কষ্ট নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনিও।’

জো ম্যালিকোট আরো বলেন, ‘১০০ থেকে শূন্যে চলে গেলেন বাবা। মায়ের সাথে কী ঘটছে, তা বাবা দেখেছিলেন। তিনি কিছুটা পূর্বাভাস পেয়েছিলেন ও তাকে একা যেতে দেন নি। আমার মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য তিনিও মৃত্যুর সারিতে দাঁড়ালেন।’

তিনি বলেন, ‘আসলে এটা যতটা কঠিন ছিল, তাতে আপনি কেবল তাদের একে অপরের সংযোগটা অনুভব করতে পারবেন। তারা এর বাইরে কিছু কল্পনাও করতে পারত না। একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারত না। এটা খুবই সাধারণ একটা বিষয় ছিল। একে অপরকে ছাড়া তাদের জীবন চলে না। সুতরাং তাদের একসাথে চলে যাওয়াটা একেবারে নিখুঁত।’