কক্সবাজার: বাংলাদেশে আশ্রিত মায়ানমানের রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে প্রথম ধাপে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন ২৪ জন রোহিঙ্গা। সেখানে তারা পুনর্বাসিত হবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন সময় সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছি, তাই আজ সুখবর যে, ২৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের ৬২ জনের তালিকা করেছে করেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গণ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনাওয়ার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছেন। তিনি দেশটিতে এক লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার মধ্যে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে ১৫ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভেলস নয়েস। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।
দেশে ফেরার আগে একে আব্দুল মোমেনের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান নয়েস। এ সময় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে মার্কিন সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে জুলিয়েটা ভেলস নয়েস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সমর্থন ও পুনর্বাসন করতে পারায় যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা বাইডেন সরকারের অগ্রাধিকার।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে মার্কিন সরকার। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথেও কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী সংবাদিকদের জানান, ৮ ডিসেম্বর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ছাড়াও শক্তিশালী কয়েকটি দেশের কাছে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
মায়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে গত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মায়ানমারের জান্তা সরকারের অস্বীকৃতিতে নিজ দেশে ফিরতে পারে নি একজন রোহিঙ্গাও। সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশে এ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এখন ১২ লাখ।