ঢাকা: অবৈধভাবে সিলিন্ডার ফিলিং এবং ব্যবসা ও অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি একটি ওয়েবিনার করেছে এনার্জিপ্যাক। এতে বক্তারা বলেছেন, ‘অবৈধভাবে সিলিন্ডার ভর্তি (ফিলিং/ক্রস ফিলিং) বাংলাদেশের এলপিজি খাতের জন্য একটি বড় হুমকি। এর কারণে ঘটতে পারে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপদজনক ঘটনা।’
জি-গ্যাসের চিফ বিজনেস অফিসার আবু সাঈদ রাজা ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন। বেক্সিমকো এলপিজির এম মুনতাসির আলম ও গ্রীন ফুয়েল টেকনোলজিস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অটোগ্যাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. হাসিন পারভেজ ওয়েবিনারে তাদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন।
এতে বক্তারা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে অবৈধ পদ্ধতিতে এলপিজি সিলিন্ডার ভর্তির হার অনেক বেশি। এর অর্থ হল, যে এলপিজি দিয়ে সিলিন্ডার ভরা হয়, সেটি মূল উৎস থেকে আলাদা। বাংলাদেশ সরকারের নীতি অনুযায়ী, অনুমোদিত এলপিজি প্ল্যান্টের বাইরে অন্য কারো এলপিজি সিলিন্ডার ভর্তি করার অনুমতি নেই। এমনকি, এলপিজি অপারেটররাও যথাযথ চুক্তি বা আইনি সম্মতি ছাড়া একে অপরের সিলিন্ডার ভর্তি (ফিলিং) করতে পারে না।’
ওয়েবিনারে এ সংক্রান্ত নীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। তারা বলেন, ‘যেসব কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করে সিলিন্ডার ফিলিং করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি আছে। আইন অনুযায়ী, রিফুয়েলিং স্টেশন, সরকার অনুমোদিত অপারেটর ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের পরিবেশকদের মধ্যে একটি (স্ট্যান্ডার্ড ইউনিফর্ম) চুক্তি থাকতে হবে। অটো-গ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশন, সরকার অনুমোদিত অপারেটর ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের পরিবেশকদের অবশ্যই এ চুক্তিতে বর্ণিত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এছাড়া, অটোগ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোকে চুক্তিবদ্ধ এলপিজি কোম্পানি (প্রতিষ্ঠান) থেকে কেনা অটোগ্যাস বিক্রি করতে হবে৷ আবার পোর্টেবল কনটেইনারে এলপিজি ভরার বিষয়ে বিধিনিষেধ আছে। ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত ফুয়েল কনটেইনার অথবা এলপিজি ডিসপেনিং স্টেশনে অটোমেটিক ইঞ্জিনে ফুয়েল সরবরাহের কাজে নিয়োজিত পোর্টেবল কনটেইনার ব্যতীত অন্য কোন পোর্টেবল কনটেইনারে এলপিজি ভর্তি করা যাবে না। এলপিজি সিলিন্ডার অবৈধভাবে ভর্তি (ফিলিং) করার সময় নিম্ন মানের সিলিন্ডার ও ভালভের ব্যবহার, ভুল ফিলিং পদ্ধতি প্রয়োগ ও বিভিন্ন ধরনের এলপিজি মেশানো হয়। যার ফলে বিভিন্ন রকম ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। এ ঝুঁকি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের মত ঘটনার কারণ হতে পারে। বাংলাদেশে এলপিজি সিলিন্ডার অবৈধভাবে ভর্তি করার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে।’
আবু সাঈদ রাজা বলেন, ‘এলপিজি কোম্পানিগুলো অবৈধ সিলিন্ডার ফিলিংয়ের কারণে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা অবৈধ অপারেটরদের কাছে গ্রাহক হারাচ্ছে। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত সিলিন্ডার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়, যার ফলে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়।’
বক্তারা এলপিজি ফিলিং স্টেশনে অবৈধ সিলিন্ডার ফিলিং রোধে সরকারি উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এক্ষেত্রে, নিয়মিত পরিদর্শন, অবৈধভাবে সিলিন্ডার ফিলিং করছে- এমন ব্যক্তি বা স্টেশনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি ও ভোক্তা পর্যায়ে অবৈধ এলপিজি সিলিন্ডার ফিলিংয়ের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মত উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।