ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেনি- এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। তাদের আয় খতিয়ে দেখা হবে। এমন ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস)।
আরকর দেয়নি- এমন এক লাখ ২৫ হাজারটি ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে সরকারি এ সংস্থা। তাদের অপ্রদেয় করের শত মিলিয়ন ডলার ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে। যারা ২০১৭-২০২১ সালের মধ্যে ফেডারেল আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি, তাদের মধ্যে বছরে চার লাখ ডলারের বেশি উপার্জনকারী ব্যক্তিদের নোটিশ পাঠানো হবে।
গেল ২৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইআরএস জানায়, কত টাকা বকেয়া আছে, তা জানে না সংস্থা। তবে, অনুমান ‘শত মিলিয়ন ডলার অপ্রদেয় ট্যাক্স’ রয়েছে। ২০১৭ ও ২০২১ সালের মধ্যে যাদের আয় এক মিলিয়ন ডলারের বেশি- এমন ২৫ হাজার ব্যক্তি এবং যাদের আয় চার লাখ ডলার থেকে এক মিলিয়ন ডলার- এমন এক লাখের বেশি ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠানো হবে।
আয়কর না দেয়া ব্যক্তিরা শতাধিক বিলিয়ন ডলার দামের আর্থিক কার্যকলাপে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যারা কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে বিশ্বাস করা হয়, তাদের কমপ্লায়েন্স অ্যালার্ট অর্থাৎ সিপি৫৯ নোটিশ পাঠানো হবে। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজারটি নোটিশ পাঠানো হবে।
আইআরএসের কমিশনার ড্যানি ওয়ারফেল বলেন, ‘বছরের এ সময়ে যখন লাখ লাখ কঠোর পরিশ্রমী মানুষ তাদের ট্যাক্স প্রদানের সঠিক কাজ করছে, তখন উচ্চ আয়ের যারা ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার মৌলিক নাগরিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে, আমরা তাদের সহ্য করতে পারি না। যারা কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িত, তাদের মোকাবেলা করার জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
আইআরএসের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ধনী মানুষেরা প্রতি বছর ১৫০ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার কোটি ডলার কর ফাঁকি দিচ্ছেন।
আইআরএস এবার কর ফাঁকি ধরতে ধনী ব্যক্তি, কোম্পানি ও অংশীদারদের ওপর চড়াও হচ্ছে। যেসব করদাতার রিটার্ন অত্যন্ত জটিল প্রকৃতির, তাদের ধরতে আইআরএস বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সব করদাতা যেন যৌক্তিক হারে কর দেন, তা নিশ্চিত করতে কর ফাঁকির প্রবণতা রোধ করতে চায় আইআরএস।
ড্যানি ওয়েরফেল আরো বলেন, ‘কর ফাঁকি বা করের ব্যবধান বলতে যা বোঝায়, তা হল- মানুষের যে পরিমাণ কর দেয়ার কথা এবং তারা প্রকৃত অর্থে যে পরিমাণ কর দিচ্ছেন, তার ব্যবধান। সেই হিসাব করে দেখা গেছে, কর ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫০ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার কোটি ডলার।’
তিনি বলেন, ‘বহু দিন ধরে তহবিলের অভাবে সংস্থায় কর্মী, প্রযুক্তি ও সম্পদের স্বল্পতা ছিল। জটিল প্রকৃতির রিটার্নগুলো নিরীক্ষা করতে যে পরিমাণ অর্থ, লোকবল ও প্রযুক্তি দরকার, তার অভাব ছিল। আইআরএসের পরিসংখ্যানে জানা যায়, যেসব করদাতার বার্ষিক আয় দশ লাখ ডলারের বেশি, গেল এক দশকে তাদের নিয়ে নিরীক্ষা কমেছে ৮০ শতাংশ। তবে, যাদের বার্ষিক আয় দশ লাখ ডলারের কম, তাদের জমা দেয়া রিটার্নের নিরীক্ষা ৫০ শতাংশ বেড়েছে।