রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ঐক্যবদ্ধ নয় বলে বহু কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অ্যাসাল

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: ‘আওয়ার ওয়ার্ক স্ট্রেন্থ- ২০২৪ প্রেসিডেন্ট ইলেকশান’ এ স্লোগানকে সামনে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হয়েছে অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবারের (অ্যাসাল) ১৬তম বার্ষিক কনভেনশন। গেল ২ ডিসেম্বর বিকালে ব্রুকলিন ম্যারিয়ট হোটেলের হল রুমে এ কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। আনন্দঘন আবহে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের ইমিগ্র্যান্টদের একমাত্র সংগঠন অ্যাসালের এ ব্যতিক্রমী মিলনমেলা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার ইমিগ্র্যান্টদের সরব উপস্থিতিতে হল রুম ছিল মুখরিত।

কনভেনশনে স্বাগত বক্তৃতা করেন অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন। উদ্বোধন করেন ইয়েল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের রিসার্চ সায়েন্টিস্ট অধ্যাপক গোলাম এমআই চৌধুরী ইকবাল। কি নোট স্পিকার ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ক্রিস্টিন জিলিব্রান্ড। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাফ মিসবাহ উদ্দিন ও অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারি এম করিম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু এবং ন্যাথালিয়া ফার্নান্দেজ, এসেম্বলিওম্যান কারিনা রেস, এসেম্বলিম্যান রন কিম এবং জাহরান মামদানি, কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান, কাউন্সিল মেম্বার লিন্ডা লি এবং ফারাহ লুইস, এনএএসিপির নিউইয়র্ক সিটি প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি হারমন, এনওয়াইসি লেবার কাউন্সিল ফর ল্যাটিন আমেরিকান অ্যাডভান্সমেন্টের এনওয়াইসি প্রেসিডেন্ট পেড্রো এ কার্ডি, এনওয়াইসি কোয়ালিশন অব ব্ল্যাক ট্রেড ইউনিয়নিস্টের প্রেসিডেন্ট চার্লস জেনকিনস, পাবলিক এমপ্লয়ি ফেডারেশনেনর ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যারন ডিসিলভা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ডারলিন উইলিয়ামস, লোকাল ১৯৩০’র প্রেসিডেন্ট ডেবরা উইলিয়ামস।

ইউএস ক্যাপিটাল চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট শরাফাত হোসেন, কুইন্স চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কাজি ফরিদ আহমেদ, ব্রঙ্কস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ তাহমিদুল হক, ব্রুকলিন চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মুজিবুর রহমান মজুমদার, স্ট্যাটান আয়ল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ইরাশাদ শেখ, নিউজার্সি চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মো. ফারুক হোসেন, মিশিগান চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মো. আলী রেজা, পেনসিলভানিয়া চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট শাহ এম গোলাম কাদের, নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটাল রিজিয়ন চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান, জ্যাকসন হাইটস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সোমনাথ ঘিমিরি, মেরিল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কবিরুল ইসলাম, রিচমন্ড হিল চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট আলবার্ট বাল্ডিও, লং আইল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মুজিবুল হক, হেল্থকেয়ার চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট রফিক আহমেদ নিজ নিজ চ্যাপ্টারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবারের কনভেনশনে।

বিভিন্ন চ্যাপ্টারের কর্তা মো. রাব্বি আলম, সাহানা বেগম, আদান ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, সুলতানা খানম, মাসুদ রানা তপন, হাসান আলী, গোলাম ফারুক শাহীন, এএসএম মাইন উদ্দিন পিন্টুসহ বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক লাবলু আনসার বক্তৃতা করেন।

কনভেনশনের শপথ পড়ান অ্যাসাল স্ট্যাটেন আইল্যান্ড চ্যাপ্টারের ইউথ কমিটির মিনহা মাহজাবীন।

মাফ মিসবাহ উদ্দিন অ্যাসালের লক্ষ্য ও কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘এবারের থিম ‘আওয়ার ওয়ার্ক স্ট্রেন্থ- ২০২৪ প্রেসিডেন্ট ইলেকশান’।’

রাজনীতিতে দক্ষিণ এশীয়দের অবস্থান আরো সুসংহত করতে অ্যাসালে দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়রা যাতে নিজ নিজ অধিকার ও মর্যাদা সুসংহত রাখতে পারেন, সে লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ‘অ্যাসাল’।’

মাফ মিসবাহ উদ্দিন আরো বলেন, ‘অ্যাসাল ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশীসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের নানা যৌক্তিক দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরছে। ইমিগ্র্যান্টদের বিভিন্ন ইস্যু জনপ্রতিনিধিদের ইস্যুতে পরিণত করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে অ্যাসাল। আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি, কিন্তু তা সমাধান করতে পারছি না। নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সেসব সমস্যা সমাধানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি অ্যাসালের ২০ চ্যাপ্টারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, ‘সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই আজকের এ অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে অ্যাসাল। তবে, আমাদের আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই, আমাদের আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।’

অ্যাসালের প্রসংশা করে ক্রিস্টিন জিলিব্রান্ড বলেন, ‘অ্যাসাল ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকের ন্যয্য মজুরি আদায়ের যুদ্ধে অ্যাসালের অবদান তুলে ধরেন তিনি।

গোলাম এম আই চৌধুরী ইকবাল বলেন, ‘অ্যাসাল যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কমিউনিটির জন্য যা করছে, তা অতুলনীয়। এ আন্দোলন জোরদারে সকলে সাহায্য করা উচিত। আমি সকলকে এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকতে এবং এর সাফল্যে অবদান রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এম করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যদি আরো কঠোর পরিশ্রম করি, তাহলে এমন একটি যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করতে পারব, যেখানে প্রতিটি দক্ষিণ এশিয়ান তাদের আমেরিকান স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবেন।’

শেখ রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ নেই বলে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সবাই ঐকবদ্ধ থাকলে বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব। আমরা অনেকেই মানবিকতার সাফাই গাই, অথচ গাজায় নির্বিচারে শিশু, নারীসহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদেরকেও বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।’

এবারের কনভেনশনে অ্যাসালের পক্ষ থেকে অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয় স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান মাইকেল কিউসিক, নিউইয়র্ক সিটি সেন্ট্রাল লেবার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট আলভারেজ, টিডব্লিউইউ লোকাল ১০০ এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডেভিস ও জুমা জেনিফারকে (মরনোত্তর)।

মেয়রের পক্ষ থেকে এবারের কনভেনশনে সাইটেশন দেয়া হয় অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারি মোহামেদ করিম চৌধুরী ও ব্রুকলিন চ্যাপটারের পলিটিক্যাল ডাইরেক্টর মো. আজিজুল হককে। ১৬তম বার্ষিক কনভেনশন উপলক্ষে অ্যাসাল তথ্য সমৃদ্ধ একটি বিশেষ জার্নাল প্রকাশ করে।