সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বর্ণিল সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

বুধবার, জুন ২৮, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গ্রাজুয়েশন সেরিমনি ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে গাউন ও হ্যাট পরে গ্রাজুয়েশন প্যারেডে অংশ নেয় ৭৬ জন শিক্ষার্থী আর নেন গ্রাজুয়েশন সনদ। ভার্জিনিয়ার জর্জ সি মার্শাল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দুপুরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। মঞ্চে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ। তিনি গ্রাজুয়েটেড শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জীবনের প্রকৃত যুদ্ধ এখান থেকেই শুরু, একটা দৃঢ়চেতা মন নিয়ে অব্যাহত চেষ্টাই পারবে জীবনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে।’

সমাবর্তনে প্রধান অতিথি ও কি-নোট স্পিকার ছিলেন সাবেক ইউএস রিপ্রেজেন্টেটিভ জিম মোরান। নিয়মিত শারিরিক ব্যায়াম করা, প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা ও নিজেকে একজন ভালে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।

গেস্ট স্পিকার ছিলেন ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সের স্টেট সিনেটর চ্যাপ পিটারসেন। মাস্টার্স সম্পন্ন করা গ্রাডুয়েটদের তাদের শিক্ষার আলো নানাভাবে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাইভারসিটিই যুক্তরাষ্ট্রের সেরা সৌন্দর্য। একজন প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে আবুবকর হানিপ এখানে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন; যা আমাদের গৌরবান্বিত করে।

ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির গ্রাজুয়েটদের এবং কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানান ইউএস সেনেট মেজোরিটি লিডার চ্যাক শুমার। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে সব সেক্টেরেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের সুযোগ, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে এগিয়ে যেতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেটা পারবে।

ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন কংগ্রেস ম্যান গ্যারি কন্নলী ও কনগ্রেস উইম্যান গ্রেস মেং।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি-আমেরিকান জর্জিয়ার ডেমোক্র্যাট স্টেট সেনেটর শেখ রহমান তুলে ধরেন তার জীবনে গল্প। একটি বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি তার জীবনটাকে কিভাবে বদলে দিয়েছে তা তুলে ধরেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে। টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান তার বক্তব্যে তুলে আনেন কতগুলো ডিগ্রি তাকে নিতে হয়েছে; তার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে, নেতৃত্বের দিকে এগিয়ে নিতে। আইটি বিশেষজ্ঞ ও আইটি উদ্যোক্তা ফয়সাল কাদির নতুন গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন পরবর্তী করণীয় দিকগুলো।

প্রকৌশল উদ্যোক্তা ও ফিলানথ্রপিস্ট, মোলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সৈয়দ জাকি হোসেন বলেন, ‘অসীম সম্ভাবনা দেশ এ যুক্তরাষ্ট্র। শিক্ষার্থীদের সামনে রয়েছে অপার সুযোগ।’

বক্তব্য দেন ডব্লিউইউএসটির উপদেষ্টা মো. মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা মো. সিদ্দীক শেখ।

বিশ্ববিদ্য্যলয়ের সিএফও ডব্লিউইউএসটির সিএফও ফারহানা হানিপ শিক্ষাউদ্যোগে তার পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘ওয়াশিংটন ইউনিভর্সিট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারকেই খুঁজে পাবে এ ক্যাম্পাসে।’

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন স্কুল অব বিজনেসের কেলি ডি আলসেন্টারা এবং ইনফরমেশন টেকনোলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করে সনদপ্রাপ্ত অফুনি এডা আগাডা। তারা তাদের এগিয়ে যাওয়ার উদ্দীপনার কথা তুলে ধরেন; যা তারা পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিদের কাছ থেকে।

স্কুলের পরিচালক অধ্যাপক পল এপোস্টোলস আগাসপোলস শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন। আর স্কুল অব বিজনেসের গ্রাজুয়েটদের সনদ দেন এর পরিচালক অধ্যাপক মার্ক রবিনসন। শিক্ষার্থীরা সনদ নিয়ে ছবি তোলেন আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট হাসান কারাবার্কের সাথে। সনদ হাতে শিক্ষার্থীরা নিজ আসনে বসলে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করেন হাসান কারাবার্ক। শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রাজুয়েশন হ্যাটে ট্যাসলটি ডান দিক থেকে বাম দিকে সরিয়ে দিয়ে গ্রাজুয়েশন রিচুয়াল শেষ করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট জাফর পিরিম, শ্যান চো, অ্যাসোসিয়েট ডাইরেক্টর হুয়ান লি ছাড়াও শিক্ষকদের অনেকেই অংশ নেন এ কনভোকেশনে। মাস্টার অব দ্য সেরিমনি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা র্যাচেল রোজ।

বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২১ সাল থেকে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আবুবকর হানিপের ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে কোন বাংলাদেশি আমেরিকানের হাতে পরিচালিত প্রথম কোন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার সিকিউরিটি ও এমবিএ-বিবিএ কোর্সে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে; যার মধ্যে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী রয়েছে ৬০০’র মত। পৃথিবীর ১২১ দেশের শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে অধ্যয়নরত রয়েছেন।