শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

শিরোনাম

কোয়ালিটি অফ লাইফ ডিভিশন: নাগরিক নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ বসবাসের নতুন দিগন্ত- এরিক অ‍্যাডামস্

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

এইচবি রিতা: নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) কোয়ালিটি অফ লাইফ ডিভিশনের মাধ্যমে অ্যাডামস প্রশাসন একটি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। শহরজুড়ে জননিরাপত্তামূলক এই উদ্যোগের লক্ষ‍্য হল পুলিশ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাস বৃদ্ধি করা এবং শহরের নিত‍্যনতুন সমস‍্যাগুলো যেমন- অতিরিক্ত শব্দ, বেআইনি পার্কিং, গৃহহীনতা-সংক্রান্ত সমস্যা, প্রকাশ্যে মাদক সেবন, আগ্রাসী ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্যান্য সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ‍্যাডামস্ বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের রাস্তাঘাট যেন সব নিউ ইয়র্কবাসীর জন্য, বিশেষ করে আমাদের পরিবার ও শিশুদের জন্য, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল থাকে।’

‘কোয়ালিটি অফ লাইফ ডিভিশন’ পাঁচটি প্রিসিঙ্কট এবং একটি হাউজিং পুলিশ সার্ভিস এরিয়ায় একটি পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করবে। এই এলাকাগুলোতে থাকবে স্থানীয়, প্রিসিঙ্কটভিত্তিক বিশেষ দল – যাদের বলা হবে ‘কিউ-টিমস।’ এই টিমগুলো গঠিত হবে এমন পুলিশ সদস্যদের নিয়ে, যারা ইতোমধ্যেই তাদের কমিউনিটির সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং যারা জীবনমান-সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর টেকসই সমাধানের জন্য অতিরিক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

সোমবার (এপ্রিল ১৪) কমিউনিটি অপ:এড-এ ‌‍এরিক অ‍্যাডামস্ বলেন, ‘একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলা জরুরি যে, এটি কোনভাবেই ‘ব্রোকেন উইন্ডোজ’ ধরনের পুলিশিংয়ে ফিরে যাওয়া নয়। আমাদের ‘কিউ-টিমস’ সদস্যরা এমনভাবে কাজ করবেন যেন সবার জন্য জীবনের মান উন্নত হয় এবং আমাদের পাড়া-মহল্লা হয়ে উঠে আরও বাসযোগ্য। এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তারা করবেন এলাকাবাসীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে, পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে।’

‘কিউ-টিমস’ পাইলট প্রোগ্রামটি ‘কম্পস্টেট’ পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা একটি তথ্যনির্ভর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি। এটি রিয়েল-টাইম ডেটার ভিত্তিতে অপরাধপ্রবণ এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ায় এবং প্রিসিঙ্কট কমান্ডারদের জবাবদিহির আওতায় আনে। এই পদ্ধতিটি নিউ ইয়র্ক সিটিতেই প্রথম চালু হয়েছিল ৩০ বছরেরও বেশি আগে এবং বর্তমানে এটি সারা বিশ্বেই ব্যবহৃত হচ্ছে।

অ‍্যাডামস্ বলেন, ‘আমরা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবনমান-সংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে ঘটনাস্থলেই শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেব এবং তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করব।’

‘কোয়ালিটি অফ লাইফ ডিভিশন নিউইয়র্ক সিটিতে অপরাধ কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের সাম্প্রতিক সাফল্যের ওপর দাঁড়িয়ে গঠিত হয়েছে। জননিরাপত্তার ওপর আমাদের প্রশাসনের অটল মনোযোগের ফলে গত ১ জানুয়ারি থেকে টানা পাঁচটি কোয়ার্টারে অপরাধের হার কমেছে – আমরা একের পর এক অপরাধ কমার রেকর্ড গড়ে চলেছি। বছরের প্রথম তিন মাসে নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাও ছিল রেকর্ডের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ট্রানজিট অপরাধও দুই অঙ্কের হারে কমেছে এবং যদি মহামারির একটি বছর বাদ দেওয়া হয়, তবে এটি ইতিহাসের সবচেয়ে কম অপরাধের হার।’

নিউইয়র্ক সিটিকে পরিবার গঠনের জন্য সেরা স্থান করতে হলে শিশুদের বিদ্যালয়ে সাফল্য অর্জনের পথও সহজ করে তুলতে হবে বলে মনে করেন অ‍্যাডামস্।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও ব্যক্তিগত যত্ন নিশ্চিত করতে আমরা ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে শহরের পাঁচটি বরোর ৭৫০টি পাবলিক স্কুলে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি। সবচেয়ে ভালো দিক হলো- এই পরিকল্পনাগুলো স্কুলের প্রয়োজন অনুযায়ী স্কুল কর্তৃপক্ষই তৈরি করেছে, যাতে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকেরা নিজেদের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেন এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করতে পারেন।’

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে নির্ধারণ করা হয়েছে: কিন্টারগার্ডেন থেকে তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত প্রতি শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ২০ জন, চতুর্থ থেকে অষ্টম গ্রেড পর্যন্ত ২৩ জন, নবম থেকে দ্বাদশ গ্রেড পর্যন্ত ২৫ জন এবং পারফর্মিং গ্রুপ ও শারীরিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী রাখা যাবে।

অ‍্যাডামস্ বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, আগামী শিক্ষাবর্ষে আমাদের অন্তত ৬০ শতাংশ শ্রেণিকক্ষে এই সীমিত শ্রেণি-আকার বাস্তবায়িত হবে। আমরা অতিরিক্ত অর্থায়নের ঘোষণা আগেভাগেই দিচ্ছি যাতে প্রধান শিক্ষকরা যথাসময়ে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেন এবং এই বছরের শরতে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য যথাযথভাবে পরিকল্পনা করতে পারেন।’

তিনি যোগ করেন, ‘নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রাস্তা, সমৃদ্ধ পাড়া-মহল্লা, গতিশীল পরিবহন ব্যবস্থা এবং শিশুদের প্রয়োজন অনুযায়ী যত্ন ও মনোযোগ দেওয়ার মতো স্কুলগুলি- এসব নিয়েই আমাদের প্রশাসন প্রতিদিন, প্রতিটি এলাকায় নিউ ইয়র্কবাসীর জন্য নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।’