ঢাকা: বাংলাদেশের প্রথম বারের মত ‘টেরি ফক্স রান’ করেছে নিউ হরাইজন ক্যানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (এনএইচসিএস)। টেরি ফক্স রান মূলত একটি প্রীতি ও দাতব্য দৌড়ের আয়োজন, যা বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার গবেষণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টেরি ফক্সের ঐতিহাসিক প্রচেষ্টাকে স্মরণীয় করে রাখা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে অনুরূপ অদম্য প্রচেষ্টার মানসিকতা গড়ে তোলাই এর উদ্দেশ্য।
কানাডার অনন্য জাতীয় নায়ক টেরি ফক্স নিজে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ক্যান্সার প্রতিরোধে গবেষণায় আর্থিক সহযোগিতার লক্ষ্যে তিনি তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগী হন, এবং `ম্যারাথন অব হোপ’ নামে এক ঐতিহাসিক আয়োজনের মাধ্যমে কানাডার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে পাড়ি দেয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। তার লক্ষ্য ছিল কানাডার প্রতিটি নাগরিকের কাছ থেকে এক ডলার সংগ্রহ করে ক্যান্সার গবেষণা তহবিলে জমা করা। দূর্ভাগ্যজনকভাবে, দৌড় সমাপ্তির আগেই টেরি ফক্সের মৃত্যু ঘটে; কিন্তু এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেন। ক্যান্সার প্রসঙ্গে সচেতনতা তৈরি ও গবেষণায় সহযোগিতার মাধ্যমে টেরি ফক্সের যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টেরি ফক্স রান আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে প্রথম বারের মত টেরি ফক্স রান করেছে এনএইচসিএস। স্কুলের প্লে গ্রুপ থেকে গ্রেড ওয়ান’এর শিক্ষার্থীরা এই দৌড়ে অংশ নিয়ে টেরি ফক্স ও তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারে। এনএইচসিএস স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে নিউ ইস্কাটন এলাকার দিলু রোড পর্যন্ত এই প্রীতি দৌড় অনুষ্ঠিত হয়। দৌড়টি স্মরণীয় করে রাখতে অংশগ্রহণকারীরা সকলে বিশেষ টি-শার্ট পরে এবং ক্যান্সার গবেষণা তহবিলে প্রত্যেকে ১০০ টাকা অনুদান জমা করে।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডা হাই কমিশনের ট্রেড কমিশনার কাজী গোলাম ফরহাদ; বাংলাদেশ ক্যান্সার সচেতনতা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ডাক্তার মোহাম্মদ মাসুমুল হক; এনএইচসিএসের ডিরেক্টর আনজাম আনসার বাজু, প্রিন্সিপ্যাল ক্রিস্টাল জাউগ।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও স্কুলের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ক্যান্সার ফাউন্ডেশন থেকে আসা অতিথিদের অংশগ্রহণে আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
‘টেরি ফক্স এবং তার ম্যারাথন অব হোপ’ এর শিক্ষা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরে আমরা গর্বিত। বলেন ক্রিস্টাল জাউগ।
‘টেরি যে সাহস আর দৃঢ়তার সাথে ক্যান্সার প্রতিরোধে গবেষণার গুরুত্বকে তুলে ধরেছিলেন, তা নিঃসন্দেহে সকলের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তার যাত্রাকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়া ও আগামী প্রজন্মের মাঝে তার মত স্পৃহা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই আয়োজনে বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা ও গোষ্ঠীর সহযোগিতা পেয়ে আমরা সম্মানিত ও কৃতজ্ঞ। এই দাতব্য আয়োজনের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধে গবেষণার মত মহৎ ও অর্থপূর্ণ উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে এনএইচসিএস।’ তিনি বলেন।
দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের অংশ হিসেবে দেশে বিশ্বমানের শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে এনএইচসিএস। পাঠদানের ক্ষেত্রে স্কুলটির কানাডা থেকে নিযুক্ত প্রিন্সিপ্যাল ও শিক্ষকরা ব্রিটিশ কলম্বিয়া মিনিস্ট্রি অব এডুকেশন স্বীকৃত কারিকুলাম অনুসরণ করে থাকেন। এনএইচসিএসে পড়াশোনা শেষে ছাত্রছাত্রীরা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ কমনওয়েলথ অব নেশনসের আওতাধীন সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ভর্তির সুযোগ পায়।