শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

খাদ্য ব্যবস্থাকে শিল্পে রূপ দিতে হবে

বুধবার, মার্চ ১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: শিল্প মন্ত্রী নুরূল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘কৃষি যেমন দেশের একটি বড় শিল্পে রূপ নিয়েছে, তেমনি আমাদের খাদ্য বা খাদ্য ব্যবস্থাকে শিল্পে রূপ দিতে হবে। বৈচিত্র্যময় খাদ্য ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারলে দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার পাওয়া সহজ হবে।’

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে ‘ফুড ফ্রন্টিয়ার্স ২.০’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রেশন (গেইন) এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহে উৎসাহিতকরণ ও সৃজনশীল ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের সরকার দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। আর এটা সফল করার জন্য প্রয়োজন আজকের তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দেশের উন্নয়নে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। চাকুরীর পিছনে না ঘুরে চাকুরি তৈরি করতে হবে। আর এ জন্য নিজেদেরকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর কৃষিতে স্বল্প বিনিয়োগে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। আজ বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের ফলে ছোট্ট বাংলাদেশ কৃষির বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ স্থানে এসেছে। এর একটি মূল কারণ- আমাদের শিক্ষিত তরুণরা আজ কৃষিতে তথা খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে এসেছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময় দেশ যখন খাদ্য ঘাটতিতে ছিল, তখন আমরা চিন্তা করেছি, দেশের খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলা করার জন্য। এভাবে আমরা উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে আমাদের প্রধান খাদ্য ধানে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এনেছি এবং আগামী দিনে দেশের বাড়তি জনসংখ্যার জন্য চিন্তা করে এ ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি। এখন আবার নুতন করে ভাবছি, দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতাই যথেষ্ট নয়। সবার জন্য পুষ্টি নিরাপত্তা চাই।’

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী তরুণদের ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ফুড সিস্টেম নিয়ে কাজ করছেন, আপনাদের মধ্যে রয়েছে দেশপ্রেম। রয়েছে এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি ভালবাসা ও দায়িত্ববোধ।’

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশে স্কেলিং আপ নিউট্রিশনের কান্ট্রি ফোকাল পয়েন্ট কাজী জেবুন্নেসা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গেইনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফেকশন অ্যান্ড ভ্যালু চেইনের পোর্টফোলিও লিড আশেক মাহফুজ, ভারপ্রাপ্ত কোঅর্ডিনেটর এম মাহমুদুল হাসান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডাক্তার রুদাবা খন্দকার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বাবিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. লুৎফর হাসান, জাতীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল গনি শোভন।

উল্লেখ্য, বিজয়ীদের তাদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়ন, ব্যবসায় সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মোট সাড়ে ৩৩ হাজার মার্কিন ডলারের অনুদান ও ‘প্রি-সীড তহবিল দেয়া হয়। তিন ক্যাটাগরিতে পাঁচজন উদ্যোক্তা ও বিশেষ একজন ব্যক্তিকে পৃথকভাবে চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। তিন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক মডেল’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হন এগ্রিভেঞ্চার (চ্যাম্পিয়ন দশ হাজার মার্কিন ডলার) ও ফার্মজিলা (রানার আপ পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার)। ‘যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ধারণা’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন কুক্যান্টস (চ্যাম্পিয়ন আট হাজার মার্কিন ডলার) ও কৃষি স্বপ্ন (রানার আপ তিন হাজার মার্কিন ডলার)। এছাড়া, ‘উদ্ভাবনী বিপণন প্রচারাভিযান’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হন কন্যা ওয়েলবিয়িং (চ্যাম্পিয়ন পাঁচ হাজর মার্কিন ডলার)।

এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যকে নিম্ন বা সীমিত আয়ের ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্যে উদ্ভাবনী উপায়গুলি চিহ্নিত করা। পাশাপাশি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা আনয়ন ও সামাজিক উদ্যোগে ব্যবসায়িক দক্ষতা আনতে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা তৈরি করা। একইসাথে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যের চাহিদা তৈরি করা ও উদ্ভাবনী বিপণন ক্যাম্পেইন চিহ্নিত করা।