শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৫, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

সংস্থার উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. আতাউর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪(২) ধারায় এ অভিযোগের বিচার করা যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।’

অভিযোগকারি পক্ষের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এক্ষেত্রে একজন তদন্তকাররী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে ও ঘটনার সময়ের পত্রিকা সংগ্রহ করে পর্যালোচনা শুরু করেছেন।’

পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে একটি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আরিফ আহমেদ সিয়ামের পিতা মো. বুলবুল কবিরের পক্ষে আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় কো-অর্ডিনেটর বরাবর এ অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ রেজিস্ট্রারভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩’-এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়।

আবেদনে গেল ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তী বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবে। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পুরো বাংলাদেশকে।

অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাদের খুন করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠনের অপরাধ।’

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, শেখ হাসিনা, প্রাক্তন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, প্রাক্তন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রাক্তন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং তৎকালীন সরকারের কিছু মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সাংসদ, প্রাক্তন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, র‌্যাবের প্রাক্তন মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ ও কিছু অসাধু র‌্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যসহ অজ্ঞতনামা অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মী, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠন।

অভিযোগে বাদী ও অন্যান্য সাক্ষীদের পাশাপাশি গেল ১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ডকুমেন্টস হিসেবে দাখিল করা হয়েছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে সংঘটিত অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে গেল ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেয়।