সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

‘গ্রীন লিফ ডিজাইনার এওয়ার্ড’ পেলেন ওপেলিয়া চৌধুরী

সোমবার, জানুয়ারী ৩০, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: ‘গ্রীন লিফ এওয়ার্ড’ পেয়েছেন চট্টগ্রামের ফ্যাশন ডিজাইনার ওপেলিয়া চৌধুরী। রোববার (২৯ জানুয়ারি) হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে অনুষ্ঠিত হয় ‘গ্রীন লিফ এওয়ার্ড ২০২৩।’ এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৩ জনকে এওয়ার্ড দেয়া হয়। ডিজাইনার ক্যাটাগরিতে সেরা ডিজাইনার হিসেবে ‘গ্রীন লিফ এওয়ার্ড’ পান ওপেলিয়া চৌধুরী। তার হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অনুপম সেন।

এওয়ার্ড হাতে পেয়ে ওপেলিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি কাজ করি মসলিন কাপড় নিয়ে। মসলিন শাড়ি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সাথে খুব নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। মসলিন বাঙালি নারীদের কাছে আবেগের জায়গা। বিয়ের মূল আকর্ষণগুলোর ভেতর সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে কনের পোশাক। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাও তো আর এক দিনের নয়। এর আগে, পরে থাকে কত কত আচার। আর এ ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানের পোশাকের ধরনেও আছে রকমফের। তবে বিয়ের দিনের পোশাকের আকর্ষণই আলাদা। কেউবা বিয়ের দিনে একেবারে ছিমছাম ও হালকা পোশাক পছন্দ করেন। আর কেউ আবার খুব ভারী জমকালো পোশাকের বায়না ধরেন। এসব বায়না সমস্যার গত এক যুগ ধরে সমাধান করে আসছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘পশ্চিমা ক্রেতারা এখনো মসলিন দেখে বিশ্বাস করতে পারতেন না যে, ঢাকাই মসলিন মানুষেরই হাতে বোনা। আগে এমন গুজবও ছিল যে, এ মসলিন বুনেছে মৎস্যকন্যা, পরী বা ভূতেরা। মসলিন হল এত নরম আর এত হালকা যে, এ যুগের কোন কাপড়ের সাথেই তার কোন তুলনা চলে না। তাই ‘ওপেলিয়া বুটিক’ কাজ ১৭০ বছরের পুরনো মসলিন কাপড় নিয়ে।’

ওপেলিয়া বহু বছর ধরে এ মসলিন শিল্প নিয়ে কাজ করছেন। বাহারি রঙের লেহেঙ্গা, শাড়ি, শেরওয়ানি,পাঞ্জাবি তৈরী করে তাকে ‘ওপেলিয়া বুটিক’ সথে অরগ্যাঞ্জা ফুলের ব্যবহার থাকে তার ডিজাইনে সেই ফুলের মধ্যে থাকে সিয়াম-রেড ক্রিস্টাল। দশ জন সুচিশিল্পী তিন হাজার ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে একটি লেহেঙ্গা বা শাড়ি তৈরি করতে।

ওপেলিয়া চৌধুরী চট্টগ্রামের একজন জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার। তিনি সদা হাস্যোজ্বোল প্রিয়মুখ। দেশ ও বিদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে তার রয়েছে সুনাম। ওপেলিয়া চৌধুরী চিরাচরিত ডিজাইনের বাইরে গিয়ে মসলিন সিল্ক ও ভেলবেট কাপড় নিয়ে কাজ করেন। তার তৈরি করা কাপড় যায় সুদূর ইউরোপের বাজারে। দেশের সেলিব্রিটিদের মাঝে ‘ওপেলিয়া বুটিক’ এর রয়েছে আস্তা ও সুনাম। তার কাজের শুরুটা এত সহজছিল না। প্রথম দিকে তিনি কাজ করতেন হোম এসটোডিউতে। বর্তমানে তার রয়েছে পাঁচটি কারখানা ও একটি আউটলেট। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মচারী নিয়ে এগিয়ে চলছে ‘ওপেলিয়া বুটিক’ এর কর্মযোগ্য। ওপেলিয়া চৌধুরীর সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রিন লিফ এওয়ার্ড পেলেন।

যদিও বিয়ের পোশাকের আবেদনের সামনে অর্থমূল্যের অর্থ নেই। বলতে গেলে ওপেলিয়া চৌধুরীদের মত উদ্যোক্তাদের হাত ধরে ফিরেছে চট্টগ্রামের বিয়ের বাজার। আগে বাংলাদেশের ফ্যাশন বাজারও ছিল নিম্নগামী ছিল। ওপেলিয়া চৌধুরীর মত সৃজনশীল ডিজাইনারদের আপ্রাণ চেষ্টাই বর্তমানে কিছুটা চাঙা।

বর্তমানে আশার বিষয় হল- বিয়ের বাজার বলতে গেলে পুরোটাই দেশি উদ্যোক্তাদের দখলে। স্বাভাবিক একটা সময় যেটার সিংহভাগই ভারতীয়দের দখলে ছিল। কেননা, গত দুই বছরে বিয়ের কেনাকাটা করার জন্য ভারতে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কাস্টমাইজড পোশাক বানিয়ে এ সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে দেশীয় উদ্যোক্তারা। এ ধারা বজায় রাখা জরুরি।